
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর ও নব্য ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের’ প্রতিফলন বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেটের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব হবে না, স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যহত হবে এবং কম রাজস্ব আদায় হবে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত এই হার ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ পর্যন্ত আনা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে এমন কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে ২০২৫-২০২৬ সালের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জি এম কাদের।
প্রবৃদ্ধির নিম্নগামী অবস্থানের কারণে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা বাণিজ্যের মন্দাভাব দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রাক্কলিত মুল্যস্ফীতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে মনে হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় পৌঁছাবে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে অর্ধভুক্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছি।’
বর্তমান বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে তা অবাস্তব বা কাছাকাছি যাওয়াও সম্ভব নয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে। যতদিন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বিদেশি ঋণ বা সাহায্য পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে। ফলে বাজেট ঘাটতি আকার অনেক বড় হবে।’
বাজেট প্রস্তাবনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখায় তার কড়া সমালোচনা করেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করতে দেয়া নীতিবহির্ভূত বা গর্হিত কাজ। বর্তমান সরকারও দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে।’
সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অপ্রতুল বরাদ্দের সমালোচনা করেন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব দিয়ে সরকার পরিচালনা করতে হবে, তাহলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে কিভাবে? যেসব কথা বলা হয়েছে তা কিভাবে বাস্তবায়ন করবে? বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে এই বাজেট দিয়ে সরকার কিভাবে কাজ করবে তা পরিস্কার নয়। উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়টি আগেও ছিল, এবার বাজেট দেখে মনে হচ্ছে ছাত্ররা সবাই লেখাপড়া বাদ দিয়ে উদ্যোক্তা হবেন।’
জয়ন্ত সাহা/এমএ/