
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে অবিলম্বে তার শপথ গ্রহণের আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়েই শপথের আয়োজন করা হবে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরের পর ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, মেয়রের চেয়ারে কে বসবেন তা নির্ধারণ করবেন ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দারা। নগর ভবনে বহিরাগতদের কোনো ঠাঁই হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একই সঙ্গে ঈদ সামনে রেখে আজ থেকে আন্দোলন স্থগিতের কথাও জানান ইশরাক হোসেন। বলেন, দাবি আদায় না হলে এই ছুটির পর আবারও আন্দোলন করা হবে। সেই আন্দোলন হবে আরও কঠোর।
ইশরাক বলেন, এই নগর ভবনে কোনো বহিরাগত প্রশাসক ও কোনো উপদেষ্টা প্রবেশ করতে পারবেন না। ঈদে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা ও জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। সরকার এর মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে জনগণই তাদের মেয়রকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।
অবিভক্ত ঢাকা সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক মাস দু-এক আগে আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পান। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে তার সমর্থকরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি ইশরাক। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এর আগে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা মহানগরের বাসিন্দারা।
‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নগর ভবন প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি শুরু হয়। করপোরেশনের কর্মচারীরাও এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আদালতের রায়ের পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর কারণে পরিষ্কার হলো যে অন্তর্বর্তী সরকার আসলে নিরপেক্ষ নয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে নগর ভবনের মূল ফটকে ১৫ মে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে কার্যত বন্ধ হয়ে আছে সিটি করপোরেশনের সব ধরনের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে আছে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।