
ভোটের সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেলে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ফেব্রুয়ারি টু এপ্রিল একটা ফ্লেক্সিবল টাইম মেনশন করেছি। প্রথমে ফেব্রুয়ারি বলেছিলাম, পরে এপ্রিল পর্যন্ত আমরা এটাকে ফ্লেক্সিবল করেছি।
অন্যদিকে বিএনপি ডিসেম্বরকে স্ট্রিক্ট করেছে। এখন যদি ডিসেম্বরে ইলেকশন হয়, সেখানে আমাদের ভূমিকা কী হবে? ডিসেম্বর কেন, আজকেও যদি আমি দেখি সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেছে এবং এখন ফেয়ার ইলেকশনের পক্ষে জাতি প্রস্তুত, সব অর্গান প্রস্তুত, সেই ইলেকশনে তো আমরা যাব। আমাদের তো যেতে কোনো সমস্যা নেই। এটা ডিসেম্বর নিয়ে কোনো কথা না।’
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। জামায়াতের নিবন্ধন বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিয়ে অবস্থান জানাতে এই ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘এ বিষয়গুলো পরিষ্কার না করে ডিসেম্বরে, এপ্রিলে নির্বাচন হলেও কোনো লাভ হবে না। এ জন্য এ বিষয়গুলো পরিষ্কার হওয়াই হচ্ছে বড় ব্যাপার, বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত। কারণ, আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়। আমরা সময় বেঁধে দিতে চাই না।’
প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করা দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’
বাংলাদেশের ওপর কারও আধিপত্য মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক রক্ষার পক্ষে জামায়াত। বাংলাদেশকে ন্যায্য সম্মান দিতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে এনসিপি। বিদ্যমান কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না- প্রশ্নে শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত আরও দেখতে চায়। কমিশনের কাজেই প্রমাণ হবে তাদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কি না। এ ক্ষেত্রে সুপারিশ হলো, জাতীয় নির্বাচন ভাগ্যনির্ধারণী। ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া স্থানীয় সরকারে আর কোথাও জনপ্রতিনিধি নেই। জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই আগে স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া উঠিত। স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে কমিশনের সক্ষমতা এবং সদিচ্ছার প্রমাণ পাওয়া যাবে।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘জামায়াত নেতারা ট্রাইব্যুনালে হত্যার শিকার হলেও, আওয়ামী লীগ ন্যায়বিচার পাক। ন্যায়বিচার হলে তাদের সাজা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আশা করছি, দ্রুতই নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরে পাব। এখনকার নির্বাচন কমিশন যেন চেয়ারের সম্মান করে জামায়াতকে প্রতীক ফিরিয়ে দেয়। ব্যতিক্রম হলে জামায়াত চুপ থাকবে না।’
‘মিট দ্য প্রেসে’ আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুমসহ অন্য সিনিয়র নেতারা।