ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

সিলেটে বিলবোর্ডে ঈদ শুভেচ্ছার গড্ডলিকায় এবার জামায়াত!

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৭ পিএম
সিলেটে বিলবোর্ডে ঈদ শুভেচ্ছার গড্ডলিকায় এবার জামায়াত!
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট নগরীর অন্যতম প্রবেশমুখ মদিনা মার্কেট পয়েন্ট এলাকায় বিলবোর্ডে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে বিএনপিকে নাজেহাল হতে হয়। একটি বিলবোর্ড দেখাতে সড়ক বিভাজকের বৃক্ষ কর্তনের ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে খবরের কাগজে সংবাদের প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা চলে। তাৎক্ষণিক বিলবোর্ড অপসারণও করা হলেও ঈদের পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় ওই নেতার পদ স্থগিত করা হয়। যে সব নেতার নামে বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছিল, তখন ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে সব বিলবোর্ড অপসারণও করা হয়।

ঈদুল ফিতরের পর এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিলেট নগরীর অন্যতম প্রবেশমুখ মদিনা মার্কেট থেকে আম্বরখানা সড়ক বিভাজকের সেই সব বিলবোর্ডে বিএনপির তরফে ঈদ শুভেচ্ছার বিলবোর্ড সাঁটাতে দেখা যায়নি। তবে বিএনপি টপকে ঈদ শুভেচ্ছার বিলবোর্ড সাঁটাতে দেখা গেছে জামায়াতকে।

মদিনা মার্কেট থেকে সুবিদবাজারে দুটো বিলবোর্ডে এখন শোভা পাচ্ছে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসনে জামায়াত ঘোষিত প্রার্থী ও সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের ঈদ শুভেচ্ছার বিলবোর্ড।

জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-১ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নেতা অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে। এ আসনে প্রার্থী বদল করে জুবায়েরের স্থলে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয় মাওলানা হাবিবুর রহমানকে। তিনি সিলেট জেলা জামায়াতের আমির।

সিলেট-১ আসনে দলীয় প্রার্থী বদলসংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জামায়াত জানায়, ২০ মে জেলা ও মহানগর জামায়াতের যৌথ সভায় সিদ্ধান্তে সিলেট-১ আসনে দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেট-১ আসনে দলের সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই দিন সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হয়।

ওই সভার পর ২৩ মে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-১ আসন নিয়ে জামায়াতের নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়। জামায়াতের মহানগরীর সাবেক নায়েবে আমির হাফিজ আব্দুল হাই হারুনকে আহ্বায়ক, মহানগরীর নায়েবে আমির ড. নূরুল ইসলাম বাবুলকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিনকে সদস্যসচিব করে সিলেট-১ আসন নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত নির্বাচন কমিটির কার্যক্রম হিসেবে প্রার্থীর নামে বিলবোর্ডে ঈদ-শুভেচ্ছা জানানো হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ঈদুল ফিতরে যে বিলবোর্ডটি ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ও বিএনপির চেয়ারপরসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদির ঈদের শুভেচ্ছা ছিল, ঠিক সেখানেই রয়েছে জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা হাবিবুরর রহমানের ঈদ শুভেচ্ছার বিলবোর্ড। একই সড়কে সুবিদবাজার মোড়ে আরেকটি বিলবোর্ড রয়েছে। দুটো বিলবোর্ডে অভিন্ন লেখা- 

‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম/ ঈদুল আযহা উপলক্ষে সিলেট-১ আসনসহ সর্বস্তরের জনগণকে জানাই ঈদ শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক/ মাওলানা হাবিবুর রহমান/ বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী/ সিলেট-১ (সিটি ও সদর)...।’ 

জামায়াতের ‘সিলেট-১ আসন নির্বাচন কমিটি’ জানায়, মদিনা মার্কেট থেকে সুবিদবাজার পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে বিলবোর্ডের মধ্যে দুটো বিলবোর্ড রয়েছে ইবনে সিনা হাসপাতালের। জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান ইবনে সিনা হাসপাতালের চেয়ারম্যান। এজন্য একটি শুভেচ্ছা বিলবোর্ড ইবনে সিনার বিলবোর্ডে ব্যবহার করা হয়েছে। অপরটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা থেকে ভাড়া নিয়ে ঈদ-শুভেচ্ছার ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।
 
যোগাযোগ করলে ভাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বিজ্ঞাপনী সংস্থার বিলবোর্ড তদারক শাখা। সিসিকের ওই দপ্তর জানায়, মদিনা মার্কেট ও সুবিদবাজার এলাকায় যে দুটো বিলবোর্ড রয়েছে, এগুলোর একটি ইবনে সিনা হাসপাতালের। অপরটি একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার। সেখান থেকে ভাড়া নিয়ে জামায়াত প্রার্থীর প্রচারণায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিলবোর্ডে ঈদ শুভেচ্ছায় নির্বাচনি প্রচারণার গড্ডলিকায় কখনো জামায়াতকে দেখা যায়নি। এবারই প্রথম দেখছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিএনপিকে টপকে জামায়াতের প্রচারণায় জনমনে কৌতূহল ও চাঞ্চল্যও দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এ বিষয়টিকে জাতীয় পর্যায়ে জামায়াতের নির্বাচনমুখী ভূমিকার সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে ভূমিকার বৈপরীত্য বলে মন্তব্য করছেন। এ নিয়ে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বেশি হচ্ছে। 

‘ওরে বিলবোর্ড দেখে করিসনে তোরা ভয়/...আড়ালে বিএনপি অবাক তাকিয়ে রয়’, ‘নির্বাচন শুধু বিএনপি চায়’এ রকম স্যাটায়ার কথা লিখে মদিনা মার্কেটে জামায়াতের নির্বাচনি প্রচারণার বিলবোর্ডের ছবিসহ ফেসবুকে পোস্ট দিতে দেখা গেছে। পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চললেও মাঠ পর্যায়ে জামায়াতের নির্বাচনমুখী তৎপরতার বিষয়টিই ফুটে উঠছে।

তবে এসব ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করে জামায়াতের নির্বাচন কমিটির আহ্বায়ক হাফিজ আব্দুল হাই হারুন খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচন তো ছয় থেকে আট মাসের ভেতর হয়ে যাবে। তাই নির্বাচনি প্রচার এখন থেকেই শুরু করা উচিত। অনেক দলের প্রার্থীরা আরও আগে থেকে কাজ শুরু করেছেন। আমরা কাজ শুরু করেছি মাত্র ১০ দিন হলো। বিএনপি বা অন্যান্য দলের যারা আছেন তারা অনেক আগে থেকে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রচারণার কাজ করছেন। কিন্তু আমরা এর আগে কখনো কোনো কাজ করিনি। মাত্র ১৫দিন আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সিলেট-১ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমানকে প্রার্থিতার ব্যাপারে। তাই উনাকে যে জামায়েত মনোনয়ন দিয়েছে এটা জামায়াতের লোকজনসহ সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে। তাই সব ধরনের প্রচার আমরা করছি।’

জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-১ নির্বাচনি আসনটি রাজনীতিতে একটি মর্যাদার আসন হিসেবে পরিচিত। ‘মিথ’ রয়েছে এ আসনে যে দলের প্রার্থী জিতেন, সেই দলই সরকার গঠন করে। ১৯৯১ সাল থেকে নির্বাচনি রাজনীতিতে ওই মিথটি প্রচলিত এবং সবকটি নির্বাচনে তার প্রতিফলনও দেখা গেছে। 

১৯৯১ সাল থেকে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল থেকে জানা গেছে, সিলেট-১ আসনে একক প্রার্থী হিসেবে জামায়াত সর্বশেষ নির্বাচন করেছিল ১৯৯৬ সালে। এর আগে ১৯৯১ সালে প্রথম একক প্রার্থী দিয়েছিল জামায়াত। বর্তমানে কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান ’৯১ ও ’৯৬ সালে প্রার্থী হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মালিক। জামায়াত প্রার্থী তৃতীয় হয়েছিলেন। প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৭ হাজার ৫১৭। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী বিজয়ী হয়েছিলেন। আর জামায়াত প্রার্থী ডা. শফিকুর রহমান চতুর্থ হলেও ’৯১ সালের তুলনায় ভোট বেড়েছিল। প্রাপ্ত ভোট ছিল ১৮ হাজার ২৯। এরপর ২০০১ সালে বিএনপির সঙ্গে চারদলীয় জোটের হয়ে নির্বাচন করায় একক প্রার্থী নিয়ে জামায়াতকে আর নির্বাচনী মাঠে দেখেননি ভোটাররা। 

প্রায় ২৮ বছর পর দলীয় প্রার্থী নিয়ে মাঠে নির্বাচনি প্রচারণায় কি রকম সাড়া মেলছে? জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরীর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম গত মঙ্গলবার রাতে খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগের মতোন না পরিবর্তন - এ রকম মনোভাব থেকে আমরা ভোটার তথা সাধারণ মানুষের মধ্যে জামায়াতকে নিয়ে ইতিবাচক আগ্রহ লক্ষ্য করছি। মানুষ আগের মতোন কিছুই চায় না, পরিবর্তন চাইছে। সিলেট-১ আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬-এর পর জামায়াত একক প্রার্থী না দিলেও জোটগতভাবে নির্বাচনি মাঠেই ছিল। এরপর রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রে প্রচারবিহীন থাকলেও জামায়াত কখনো রাজনীতি বা ভোটের মাঠ ছাড়া ছিল না। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে এবার মাঠে জামায়াত বাঁধাহীন বলা যায়। আগের মতোন না পরিবর্তন-এ আগ্রহের কেন্দ্রে এখন জামায়াত।’

অমিয়/

গণতন্ত্রের চর্চা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম
গণতন্ত্রের চর্চা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রটা চর্চা হয়নি। গণতন্ত্রের চর্চা পাকিস্তান আমল থেকে এখানে হয়নি। খুব স্বল্প সময় ধরে কিছুটা চর্চা হয়েছিল। তারপরে আবার সেই চর্চা থেকে আমরা দূরে সরে গেছি।'

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলা একাডেমিতে 'সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫'-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশের তরুণরা ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ রাজনীতিতে আগ্রহীর একটা জরিপ দেখে সকালে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখানে এসে আমার আশা বেড়েছে। আমাদের তরুণরা আরও বেশি যোগ্য। তারা দেশ গঠনে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।' 

তিনি বলেন, 'বর্তমান প্রজন্ম এখন আমাদের চেয়ে অনেক অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অনেকে বলেন যে এখানে কিছু হবে না। এটা সঠিক নয়। আমি অত্যন্ত আশাবাদী অনেক কিছু হবে এবং বাংলাদেশে অবশ্যই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।' 

মির্জা ফখরুল বলেন, 'তর্ক আছে, বিতর্ক আছে। মতের অমিল আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। এটাই হচ্ছে উপযুক্ত একটা ডেমোক্রেসি।'

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের একটি প্রদেশের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'শুধুমাত্র তার একজন দেহরক্ষী নিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আর আমাদের এখানে যেই মন্ত্রী হয়ে গেল সেই সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে যায়। তার বাড়ির সামনে গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি- এই একটা মানসিকতা তৈরি হয়। এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। স্পিকার, প্রাইম মিনিস্টার বললেই তো যথেষ্ট হয়। আমি আশাবাদী মানুষ, আমি মনে করি, আমাদের নতুন ছেলেরা এই বিষয়টা চালু করবে। ভালো সময় আসবে, আরও ভালো সময় আসবে।'

আয়োজকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'তারা অত্যন্ত সুন্দর একটা ভালো কাজ করেছেন। আমাদের নতুন প্রজন্মের চেঞ্জের সঙ্গে আমাদের পরিচয়টা আর বাড়ানো দরকার। এখানে একটা বড় গ্যাপ আছে। ঢাকাতে যে চিন্তাভাবনা আবার ঠাকুরগাওয়ে সেই চিন্তাভাবনা না। আমরা একটা প্রজন্ম তৈরি করতে চাচ্ছি, একটা শক্তি তৈরি করতে চাচ্ছি, একটা আর্মি তৈরি করতে চাচ্ছি, যে আর্মি বাংলাদেশকে বদলে দেবে। যদি আমরা সামনের দিকে যেতে পারি তাহলে নিশ্চই আমরা জয় করব।'

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইলিয়াস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশনা ইমাম প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার যুবদল নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৭ পিএম
চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার যুবদল নেতা বহিষ্কার
মনিরউজ্জামান মনির

নরসিংদীর পলাশে সিমেন্ট কারখানায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরউজ্জামান মনিরকে বহিষ্কার করেছে জেলা যুবদল। 

সোমবার (৭ জুলাই) জেলা যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সুমন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) জেলা যুবদলের সভাপতি ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মনিরউজ্জামান মনিরকে যুবদলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ ও সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার হাসান।

জেলা যুবদল সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, ‘দলীয় আদর্শ ও শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরউজ্জামান মনিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এর আগে, গত ৪ জুলাই (রবিবার) রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, গত ৩ জুলাই দুপুরে ডাঙ্গা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে। মনিরের নির্দেশে নদীপথে দুটি ট্রলারে করে ২৫-৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল কারখানায় প্রবেশ করে। তারা শ্রমিকদের থাকার ৬টি কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এবং মোবাইল, ল্যাপটপসহ মালামাল লুট করে নেয়। হামলায় অন্তত সাতজন শ্রমিক আহত হন। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ মনিরউজ্জামান মনিরকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে পলাশ থানায় মামলা করে।

শাহিন/সালমান/

জামায়াতের লক্ষ্য সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা: শফিকুর রহমান

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৪ পিএম
জামায়াতের লক্ষ্য সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা: শফিকুর রহমান
ছবি: খবরের কাগজ

জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্য জুলাই-আগস্টের জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন এবং জীবন উৎসর্গকারী ছাত্র-জনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর মগবাজারে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘জাতীয় সমাবেশ’ বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ৭-দফা আদায়ের মাধ্যমেই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সফলতা অর্জন করা সম্ভব বলে জামায়াতের আমির বৈঠকে অভিমত ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে ৭-দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৯ জুলাই বেলা ২টায় রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করা হয়।

জাতীয় সমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করার জন্য সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান জাতীয় জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বৈঠকে আরও উপস্থিতি ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসাইন, মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ইসলামিক দাওয়াহ সার্কেল মালয়েশিয়ার সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল্লাহ মানসুর, উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, মো. ইয়াসিন আরাফাত, সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাড. আতিকুর রহমান, ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং ড. জুবায়ের আহমাদ প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি: নাহিদ

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম
আবরার ফাহাদের দেখানো পথেই রাজনীতি করছে এনসিপি: নাহিদ
পথসভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে আবরার ফাহাদ মাইলফলক ছিলেন। আবরারের মৃত্যু ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ও বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। আবরারের মৃত্যুর প্রতিবাদের মিছিলে দিল্লি না ঢাকা স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই স্লোগানই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ে আবার দেওয়া হয়। বাংলাদেশপন্থী পথ দেখিয়ে গেছেন আবরার ফাহাদ। সেই পথেই জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনীতি করছে। সেই পথ ধরেই জুলাই গণ-অভ্যুথান সংগঠিত হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘আবরার ফাহাদ থেকে আবু সাঈদ মুগ্ধসহ শহিদদের আমরা স্মরণ করি। তারা যেই বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল, পদযাত্রার মাধ্যমে আমরা সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে এক পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কুষ্টিয়ায় যারা শহিদ ও আহত হয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘এই কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান আবরার ফাহাদ। যাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করেছিল। আমরা সেই আবরার ফাহাদের উত্তরসূরী। এই আন্দোলন ছিল গোলামির বিরুদ্ধে ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। শত শত শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা গোলামি থেকে আজাদি পেয়েছি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে আবরার ফাহাদের পথ ধরে এগিয়ে গেছি। আবার যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা পক্ষ সেই আধিপত্যবাদের গোলাম হতে চায় তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াব। দেশের মানুষও তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। আমাদের কথা স্পষ্ট- গোলামি নয়, আমরা আজাদি চায়। আমরা আগামী দিনে মেরুদণ্ড সোজা করে মর্যাদার সঙ্গে দাঁড়াব। কুষ্টিয়ার শহিদ আবরার ফাহাদ ও শহিদ ইয়ামিন আমাদের সেই শিক্ষা দিয়ে গেছে।’

পরে আবরার ফাহাদের বাবা বরকতউল্লাহ এবং মা রোকেয়া বেগমের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার আগে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

এর আগে, দুপুর ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার রায়ডাঙা গ্রামে শহিদ আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, আবরার ফাহাদের বাবা বরকতউল্লাহ, মা রোকেয়া খাতুনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

এদিন সকালে শহরের দিশা টাওয়ারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

মিলন/সালমান/

মানিকগঞ্জে বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
মানিকগঞ্জে বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলম

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এস.এম. জাহাঙ্গীর আলমকে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর আলম দৌলতপুর উপজেলার পারুরিয়া গ্রামের মৃত জয়নুদ্দিন শেখের ছেলে।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.আর.এম আল মামুন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করা হয়। মামলায় দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩২৪, ৩২৬, ৪২৭ ও ৫০৬(২) ধারাও যুক্ত রয়েছে। মামলার পর থেকে আসামি জাহাঙ্গীর আলম পলাতক ছিলেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সোমবার বিকেলে বাঘুটিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আসাদ/মেহেদী/