ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত বিএনপির

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ১১:৩৩ এএম
ডিসেম্বরের মধ্যেই সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত বিএনপির
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে একদিকে আবহাওয়ার সংকট এবং অন্যদিকে রমজানের মধ্যে নির্বাচনি প্রচারণা ও কার্যক্রম এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে যা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অধিকন্তু, কেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ তার (প্রধান উপদেষ্টা) ভাষণে উল্লেখ করা হয়নি।

শুক্রবার (৬ জুন) রাতে দলটির জরুরি স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে সময়সীমা প্রস্তাব করেছেন তা পর্যালোচনা করেন সিনিয়র নেতারা। 

পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থানের কথা জনান।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রায় দেড় যুগ ধরে মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য গুম, খুন, জেল-জুলুম, আহত ও নির্যাতিত হয়েও অব্যাহত লড়াই চালিয়ে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে তার বিজয় অর্জিত হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে অহেতুক বিলম্বে জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে বিধায়, এই সভা রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করছে।

এতে বলা হয়, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার কথা বললেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত অগ্রাহ্য করে নিজেদের নিরপেক্ষতাকেই যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে দেশের জনগণ সঙ্গতভাবেই শঙ্কিত হতে পারে বলে সভা মনে করে।

জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ভাষণ পর্যালোচনা করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সর্বসম্মতভাবে এই অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তার বক্তব্য প্রসঙ্গকে অতিক্রম করে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পরিণত হয়েছে। এই দীর্ঘ ভাষণে তিনি বন্দর, করিডর ইত্যাদি এমন সব বিষয়ে অবতারণা করেছেন যা তারই ভাষায় অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি ‘ম্যান্ডেটের’ মধ্যে পড়ে না। ভাষণে তিনি শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম করায় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

২৫ জুনেই জাপার পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে: শামীম হায়দার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৭ পিএম
২৫ জুনেই জাপার পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে: শামীম হায়দার
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির নবনিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির (জাপা) নবনিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সব সময় জাতীয় পার্টির সঙ্গেই ছিল। তারা কখনো জাতীয় পার্টির মূল স্রোতের বাইরে যায়নি। গেল ২৫ জুন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় এসে জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেছেন। সেই দিনই জাতীয় পার্টির আগামী দিনের পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে।

বুধবার (৯ জুলাই) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা-কর্মীরা এই নবনিযুক্ত মহাসচিবকে সংবর্ধনা দিয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘দলের কর্তৃত্ব নিয়ে নানা টানাপোড়েনের মধ্যে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। তারা দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকেই ফের নেতৃত্বে দেখতে চান।’

নবনিযুক্ত মহাসচিব বলেন, ‘জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে যতবার ষড়যন্ত্র হয়েছে, ততবারই তিনি সততার শক্তিতে স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।’

তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা জি এম কাদেরের ‘মূল শক্তি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে অনেকেই বলেছিলেন এরশাদের মৃত্যুর পর আর জাতীয় পার্টি টিকবে না। শ্রম ও মেধা দিয়ে জি এম কাদের জাতীয় পার্টিকে শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমন বাস্তবতায় যদি কেউ কেউ বলেন, জিএম কাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দেবেন এটা শুধুই হাস্যকর।’

জাপা থেকে বহিষ্কারের পর ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, কাউন্সিলে হেরে যাওয়ার ভয়ে জি এম কাদের জাপার দশম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনের আয়োজন করতে চাইছেন না। এর জবাবে জাপার নবনিযুক্ত মহাসচিব বলেন, ‘কাউন্সিলে কারা থাকবেন? তৃণমূল নেতা-কর্মীরাই তো থাকবেন। তৃণমূল নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে জিএম কাদেরের পাশে আছেন। আর কাউন্সিলে জি এম কাদেরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী কে আছেন?’

জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের জবাবও দিয়েছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ‘গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সততা ও স্বচ্ছতা জাজ্বল্যমান। পাঁচ বছর গুরুত্বপূর্ণ ২টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। তখন তার বিরুদ্ধে কেউ একটি দুর্নীতির অভিযোগও আনতে পারেননি। আওয়ামী লীগ সরকার বারবার চেষ্টা করেও জি এম কাদেরের  বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা করতে পারেনি। দুর্নীতি জি এম কাদেরকে কখনো স্পর্শ করতে পারেনি।’ 

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. সামছুল হক। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগরের দক্ষিণের আহ্বায়ক মীর আব্দুস সবুর আসুদ, শেরীফা কাদের, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মমতাজ উদদীন, ইঞ্জিনিয়ার মইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নুরুল আজহার শামীম, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমসহ কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতা। অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির অনেক নেতাও উপস্থিত ছিলেন।

জয়ন্ত/সালমান/

বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম
বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিএসএফ কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনী নয়, বরং এটি একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে। আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হয়নি। অর্থনৈতিকভাবে, সাংস্কৃতিকভাবে বারবার বাংলাদেশকে অবদমন করা হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহিদ হাসান চত্বরে আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

নাহিদ বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা আমরা কখনোই মেনে নেব না। গত ৫৪ বছরে সীমান্তে হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। শুধু চুয়াডাঙ্গাতেই সীমান্ত এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিগত ১৬ বছর ভারত সরকারের সহায়তায় দেশে গুম, খুন ও দমন-পীড়নের রাজনীতি চালিয়েছে।’ 

এ সময় দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরাসরি গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজেই গণহত্যা পরিচালনা করেছেন। অথচ সেই শেখ হাসিনাকে ভারতের বর্তমান মোদি সরকার আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। একজন মানবতাবিরোধী অপরাধী, একজন গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়ার দায় ভারতকেই নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ইতিহাসের কাছে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। মোদি সরকারকে মনে রাখতে হবে, গণমানুষের রক্তের দায় কখনো ধোয়া যায় না।’

এদিন পথসভায় এনসিপির ভবিষ্যৎ রূপরেখা ও রাজনৈতিক দর্শন তুলে ধরেন আখতার হোসেন। 

তিনি বলেন, ‘এনসিপি দেশে নতুন ধারা ও নতুন রাজনীতির সূচনা করতে চায়। আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র, যেখানে প্রতিটি মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও ন্যায়ের নিশ্চয়তা থাকবে। হাজারো মানুষ আমাদের এই পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন, শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, ভালোবাসা দিচ্ছেন। আমরা সেই ভালোবাসার দায়িত্ব নিতে চাই, নতুন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিজেদের উৎসর্গ করে।’

নেতারা আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক ভাই শহিদ হয়েছেন। গণতন্ত্র, মানবিকতা, স্বাধীন মত প্রকাশ এবং আইনের শাসনের জন্য তাদের রক্ত ঝরেছে। সেই রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে কেবল সরকারের পরিবর্তন নয়, গোটা রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক রূপান্তর ঘটাতে হবে।’

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব মোল্লা মো. ফারুক এহসান, ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

এর আগে, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজারে ‘জুলাই পদযাত্রা’র আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। এরপর দুপুর দেড়টায় আলমডাঙ্গা শহরের আলতাইবা মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের শহিদ হাসান চত্বরে আয়োজিত পথসভাটি ছিল এই কর্মসূচির অন্যতম কেন্দ্রীয় আয়োজন।

পরে বিকেলে দর্শনা ও জীবননগরে আরও দুটি পথসভা শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

মিজানুর/সালমান/

 

শেখ হাসিনার সঙ্গে আ.লীগেরও বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৬ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
শেখ হাসিনার সঙ্গে আ.লীগেরও বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

গণহত্যা ও ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও বিচার হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময়ই মনে করি, যেসব রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদের পক্ষে থাকবে, যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে কাজ করবে- যেটা আওয়ামী লীগ করেছে, তাদের প্রতিটি ব্যক্তির শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।’

বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে সাংবাদিকদের করা ‘বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন দমাতে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন’ এখন এমন একটি দলের বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী- এমন প্রশ্নে এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ও জিয়া পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল কদ্দুস এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে তাদের চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশেষ করে দলের প্রধান শেখ হাসিনার, তার বিচার কিন্তু শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, তার সঙ্গে যারা এই গণহত্যা এবং এই ফ্যাসিবাদের আক্রমণের সঙ্গে জড়িত- প্রত্যেকেরই বিচার হবে। সেই হিসেবে আমরা দেখতে চাই, দলকেও (আওয়ামী লীগ) যদি আইনের আওতায় নিয়ে এসে দলগত হিসেবে বিচার করা হয়, তা হলে অবশ্যই তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগের নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুম-খুনের সবচেয়ে বড় ভিক্টিম আমাদের দল বিএনপি। আমি নিজেও ১১২টা মামলার আসামি এবং ১৩ বার জেলে যেতে হয়েছে।’
 
সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা মনে করেন যে নির্বাচন প্রয়োজন নেই। আমার মনে হয়, তারা আবার চিন্তা করবেন নির্বাচন প্রয়োজন জনগণের জন্য। একটা নির্বাচিত সরকার দরকার। যে নির্বাচনে জনগণের সম্পর্ক থাকবে। সে কারণেই আমরা বলেছি যে সংস্কারগুলো হচ্ছে প্রত্যেকটি সংস্কারের দাবি আমরাই তুলেছি সবার আগে। সংস্কার এবং নির্বাচনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। দুটো একসঙ্গে চলতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দেশটাকে সবাই মিলে বাঁচাতে হবে এবং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হচ্ছে দেশকে সঠিক ট্র্যাকে উঠানো। যত দ্রুত সেটা উঠানো যাবে ততই মঙ্গল।’

এর পর বিএনপি মহাসচিব আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতালে শিল্পী ফরিদা পারভিনকে দেখতে যান এবং চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, সহসাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, জাসাস সভাপতি হেলাল খান ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রুকন প্রমুখ।

শফিকুল/পপি/

ফুটবলার ঋতুপর্ণার ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের পাশে তারেক রহমান

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:৩১ পিএম
ফুটবলার ঋতুপর্ণার ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের পাশে তারেক রহমান
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘গোল্ডেন গার্ল’ খ্যাত ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার ক্যানসার আক্রান্ত মা ভূজোপতি চাকমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধিদল। 

বুধবার (৯ জুলাই) সকালে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম মগাছড়িতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ভূজোপতি চাকমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

এ সময় সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন উপস্থিত ছিলেন।

ঋতুপর্ণা চাকমার পরিবারের প্রতি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঋতুপর্ণা চাকমার মা ভূজোপতি চাকমার হাতে চিকিৎসা সহায়তা তুলে দেন রিজভী। পাশাপাশি তার পরিবারের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, সংগঠনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, সংগঠনটির সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি প্রমুখ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য রাজীব জাফর চৌধুরী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ। 

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ক্যানসারে মারা যান ঋতুপর্ণার বাবা বরজ বাঁশি চাকমা। বাবার অনুপ্রেরণায় ঋতুপর্ণা খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠেন। পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঋতুপর্ণা মায়ানমারের বিপক্ষে দুটি গোল করে দলকে ২-১ ব্যবধানে জয় এনে দিয়েছেন। তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষেও একটি গোল করেন তিনি।

সালমান/

সিলেটে জয়া সেনের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপকে পুলিশে সোপর্দ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
সিলেটে জয়া সেনের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপকে পুলিশে সোপর্দ
এভাবেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রদীপ রায়কে। ভিডিও থেকে ধারণ করা ছবি

পরনে সাদামাটা সেন্ডুগেঞ্জি ও লুঙ্গি। মেঝেতে বসা। উঠতে চাইলে ‘এই বস-বস, মাটিতে বসা থাক’ বলে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছিল না। চারপাশ ঘিরে রেখেছেন কয়েকজন লোক। দুজন পুলিশও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে বলা হচ্ছিল, ‘ডেভিল, ডেভিল ধরা পড়ছে...’।

এভাবে পুলিশে সোপর্দ করা হয় দিরাই-শাল্লার (সুনামগঞ্জ-১ আসন) সাবেক সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপ রায়কে। 

তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত প্রায় আড়াইটার দিকে সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকার লন্ডনি রোডের একটি বাসা থেকে তাকে জালালাবাদ থানায় সোপর্দ করা হয়।

বুধবার যোগাযোগ করলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘স্থানীয় জনতা প্রদীপ রায়কে আটক করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে।’

ওসি জানান, প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে ও পরে সিলেট-সুনামগঞ্জে মোট সাতটি মামলা রয়েছে। জলমহাল দখল নিয়ে হত্যা মামলাও রয়েছে। তাকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

জানা গেছে, প্রদীপ রায় বিগত ১৫ বছর দিরাই শাল্লায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। নানা ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমালোচিতও ছিলেন তিনি। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার ভাই বিশ্বজিৎ রায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দিরাই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর প্রদীপ রায় ও তার ভাই আত্মগোপনে ছিলেন।

পুলিশ জানায়, প্রদীপের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় বসবাসরত দিরাই বিএনপি কর্মীরা স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রদীপ রায়কে আটকের সময় একটি ভিডিও মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রদীপকে বাসার মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বার কয়েক দাঁড়াতে চাইলেও উঠতে বা নড়তে দেওয়া হচ্ছিল না। দিগম্বর ও ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দেখা যাচ্ছিল। ভিডিওতে তাকে ‘ডেভিল’ বলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাকালে দিরাই-শাল্লায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে বিক্ষুব্ধদের নানা কথাবার্তা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। শেষে দুজন পুলিশ সেখানে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করে প্রদীপকে তাদের হেফাজতে নেন। 

প্রদীপের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে মামলার বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে দিরাই থানা সূত্রে জানা গেছে, দিরাইয়ের কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারুলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় প্রদীপ রায়কে আসামি করা হয়। তবে পুলিশের চার্জশিটে তাকেসহ আরও কয়েকজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর দিরাইয়ের ভাটিপাড়া জলমহালের দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনার একজন নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায়ও প্রদীপ রায় আসামি। ৫ আগস্টের পর দিরাই ও সিলেটে আরও পাঁচটি মামলার আসামি।

জানা গেছে, দিরাই-শাল্লায় ভোটের রাজনীতিতেও প্রদীপ রায় একজন অবৈধ প্রভাব বিস্তারকারী হিসেবে পরিচিত। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে ডামি প্রার্থী জয়া সেনগুপ্তকে বিজয়ী করেছিলেন। সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনটি প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনি এলাকা। ভোটের রাজনীতিতে ‘সুরঞ্জিতের আসন’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেলে তার স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্ত ওই বছরের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের দ্বিতীয়বার মতো তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ছোট ভাই চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলে প্রদীপ রায় তার এমপি প্রতিনিধি টিকিয়ে রাখতে দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন বলে তখন খোদ আওয়ামী লীগ থেকে অভিযোগ উঠেছিল।

অমিয়/