ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

লক্ষ্মীপুরে বিসিকের কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ দখল করল বিএনপি!

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
লক্ষ্মীপুরে বিসিকের কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ দখল করল বিএনপি!
ছবি: খবরের কাগজ

লক্ষ্মীপুরে বিসিক শিল্পনগরীর কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারকে সরিয়ে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতা কাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি মাসে এ কাজ শেষ হওয়া কথা থাকলেও এখনো অর্ধেক কাজ বাকী রয়েছে। এদিকে নিম্নমানের কাজের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। 

জানা গেছে, শিল্পনগরীতে সড়ক, ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণের লক্ষ্যে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি  উন্নয়ন প্রকল্প দরপত্রের মাধ্যমে বিজয়ী  শিপড়া ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত মার্চ মাসে প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। গত ২২ মে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে সময় বাড়িয়ে ৪ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৪২০ ফুট দীর্ঘ সড়ক, তিনটি কালভার্ট, নতুন ড্রেন এবং বিসিক ভবনের সংস্কার করা হয়েছে। তবে বাস্তবে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে দেয়নি স্থানীয় বিএনপি ও ছাত্রদল নেতা। তারা প্রভাব খাটিয়ে নিজেরাই কাজটি করে যাচ্ছেন। 

শিপড়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী চন্দন ঘোষ অভিযোগ করেন, 'প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার পেলেও স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাকে কাজটি করতে দেননি। প্রভাব খাটিয়ে এ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ নেন পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কাজী হেলাল উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও চররুহিতা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. সবুজ। তারা নিজেরা কাজ ভাগাভাগি করে নেন। এতে কাজের গুণগত মান ঠিক থাকেনি। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইতোমধ্যে কাজ সম্পন্ন করা বিসিকের নতুন সড়কের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় সড়কের উপর পানি জমে থাকা, সড়কে ঢেউয়ের মতো উঁচু-নিচু অবস্থা বিরাজসহ সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে রয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও ড্রেনের নির্মাণকাজে পাথর, রড ও সিমেন্ট ঠিকমতো দেওয়া হয়নি।

বিসিকসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া, তাজুল ইসলাম ও রফিক জমাদার জানান, ঠিকভাবে মাটি ভরাট না করেই ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এতে নতুন সড়কে ঢেউয়ের মতো তৈরি হয়েছে, যা যান চলাচলের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম কোটি টাকার কাজ হবে মানসম্মত। কিন্তু এখনই রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে, মানুষ পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছে। এটা দেখে মনে হয়, কাজ শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে।’

বিসিকের প্রকল্পের কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কাজী হেলাল উদ্দিন জানান, ঠিকাদারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমেই কাজটি তারা করেছেন। জোর করে তারা কাজটি নেননি ।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম বলেন, 'আগে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ছাত্রলীগ (নেতারা) করেছে। এখন ছাত্রদল উন্নয়ন কাজ করবে এটা স্বাভাবিক, সবাই জানে।' 

সড়কের কিছু জায়গায় পানি জমার বিষয়টি নজরে এসেছে জানিয়ে বিসিক প্রকৌশল শাখার টেকনিক্যাল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে কাজের মান পুনরায় মূল্যায়ন করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক মো. ফজলুল করিম জানান, কাজটি দেখতে আঞ্চলিক পরিচালক, টেকনিক্যাল কর্মকর্তাসহ অনেকে এসেছেন। অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টি তারাও তদন্ত করে গেছেন।

রফিকুল/মেহেদী/

সিলেটে জয়া সেনের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপকে পুলিশে সোপর্দ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
সিলেটে জয়া সেনের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপকে পুলিশে সোপর্দ
এভাবেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রদীপ রায়কে। ভিডিও থেকে ধারণ করা ছবি

পরনে সাদামাটা সেন্ডুগেঞ্জি ও লুঙ্গি। মেঝেতে বসা। উঠতে চাইলে ‘এই বস-বস, মাটিতে বসা থাক’ বলে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছিল না। চারপাশ ঘিরে রেখেছেন কয়েকজন লোক। দুজন পুলিশও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে বলা হচ্ছিল, ‘ডেভিল, ডেভিল ধরা পড়ছে...’।

এভাবে পুলিশে সোপর্দ করা হয় দিরাই-শাল্লার (সুনামগঞ্জ-১ আসন) সাবেক সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্তের ‘এমপি প্রতিনিধি’ প্রদীপ রায়কে। 

তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দিরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত প্রায় আড়াইটার দিকে সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকার লন্ডনি রোডের একটি বাসা থেকে তাকে জালালাবাদ থানায় সোপর্দ করা হয়।

বুধবার যোগাযোগ করলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘স্থানীয় জনতা প্রদীপ রায়কে আটক করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে।’

ওসি জানান, প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে ও পরে সিলেট-সুনামগঞ্জে মোট সাতটি মামলা রয়েছে। জলমহাল দখল নিয়ে হত্যা মামলাও রয়েছে। তাকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

জানা গেছে, প্রদীপ রায় বিগত ১৫ বছর দিরাই শাল্লায় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। নানা ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমালোচিতও ছিলেন তিনি। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার ভাই বিশ্বজিৎ রায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দিরাই পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৫ আগস্টের পর প্রদীপ রায় ও তার ভাই আত্মগোপনে ছিলেন।

পুলিশ জানায়, প্রদীপের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় বসবাসরত দিরাই বিএনপি কর্মীরা স্থানীয় লোকদের সহযোগিতায় তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রদীপ রায়কে আটকের সময় একটি ভিডিও মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। 

ভিডিওতে দেখা যায়, প্রদীপকে বাসার মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি বার কয়েক দাঁড়াতে চাইলেও উঠতে বা নড়তে দেওয়া হচ্ছিল না। দিগম্বর ও ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় দেখা যাচ্ছিল। ভিডিওতে তাকে ‘ডেভিল’ বলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকাকালে দিরাই-শাল্লায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে বিক্ষুব্ধদের নানা কথাবার্তা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। শেষে দুজন পুলিশ সেখানে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করে প্রদীপকে তাদের হেফাজতে নেন। 

প্রদীপের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে মামলার বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে দিরাই থানা সূত্রে জানা গেছে, দিরাইয়ের কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারুলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় প্রদীপ রায়কে আসামি করা হয়। তবে পুলিশের চার্জশিটে তাকেসহ আরও কয়েকজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর দিরাইয়ের ভাটিপাড়া জলমহালের দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনার একজন নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায়ও প্রদীপ রায় আসামি। ৫ আগস্টের পর দিরাই ও সিলেটে আরও পাঁচটি মামলার আসামি।

জানা গেছে, দিরাই-শাল্লায় ভোটের রাজনীতিতেও প্রদীপ রায় একজন অবৈধ প্রভাব বিস্তারকারী হিসেবে পরিচিত। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে ডামি প্রার্থী জয়া সেনগুপ্তকে বিজয়ী করেছিলেন। সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনটি প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনি এলাকা। ভোটের রাজনীতিতে ‘সুরঞ্জিতের আসন’ হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মারা গেলে তার স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্ত ওই বছরের ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের দ্বিতীয়বার মতো তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ছোট ভাই চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আল-আমিন চৌধুরী) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলে প্রদীপ রায় তার এমপি প্রতিনিধি টিকিয়ে রাখতে দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন বলে তখন খোদ আওয়ামী লীগ থেকে অভিযোগ উঠেছিল।

অমিয়/

বিএনপির ৩১ দফা মানেই আগামীর বাংলাদেশ: আফরোজা আব্বাস

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম
বিএনপির ৩১ দফা মানেই আগামীর বাংলাদেশ: আফরোজা আব্বাস
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির ৩১ দফা মানেই গণতন্ত্র, আর এই ৩১ দফার মধ্যেই রয়েছে আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস।

তিনি বলেন, 'এই ঘোষণার মধ্যেই আছে ভবিষ্যতে সরকার গঠনের রূপরেখা, কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং নারী ও শিশু মুক্তির দিকনির্দেশনা।'

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আয়োজিত জনসভা ও নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে নারীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের দায়িত্বশীল নেতা কবীর আহমেদ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সরকার তুহিন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক শামীমা বাছির স্মৃতি, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন আব্দু, সাধারণ সম্পাদক ডা. খোরশেদ আলম, পৌর বিএনপির সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আকতার খান এবং উপজেলা মহিলা দলের সভানেত্রী অন্তরা চৌধুরী।

সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মাসুম ভূঁইয়া।

আফরোজা আব্বাস বলেন, 'নারীরা শুধু রাজনীতি করে না, তারা সংসার সামলায়, সন্তান প্রতিপালন করে এবং দেশের প্রয়োজনে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। নারীদের অধিকার আদায়ে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য। আর তারেক রহমানই হলেন নির্যাতিত মানুষের কাঁধে হাত রাখা সত্যিকারের নেতা।' 

তিনি আরও বলেন, 'স্বৈরাচারী হাসিনা মামলা দিয়েছিল, বাড়ি ছাড়া করেছিল তবু আমাদের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া পালিয়ে যায়নি। হাসিনা পালিয়ে গেছে'

জুটন বনিক/মেহেদী/

ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৫০ এএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ১১:২০ এএম
ময়মনসিংহে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২
বামে খন্দকার বাকী বিল্লাহ ও অন্যজন যুবলীগ নেতা

ময়মনসিংহে সাগর হত্যা মামলা ও বিএনপির অফিস ভাঙচুরের মামলায় যুবলীগ নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে শহরের চরপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ময়মনসিংহের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ও দীপু-সায়েম পরিষদের সহসভাপতি ও আওয়ামী লীগ কর্মী খন্দকার বাকী বিল্লাহ এবং মহানগর যুবলীগের সদস্য তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী।

বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'খন্দকার বাকী বিল্লাহ সাগর হত্যা মামলার আসামি। এ ছাড়া বিএনপির অফিস ভাঙচুর মামলার আসামি তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী। গত ৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে যান তারা। পরে দুপুরে দুজন চরপাড়া এলাকায় ছিলেন। এ সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়মনসিংহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদধারী এক নেতা খবরের কাগজকে বলেন, 'বাকী বিল্লাহ আওয়ামী লীগের কর্মী। তিনি সদরের সাবেক সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর আস্থাভাজন। মারা যাওয়া ছাত্রলীগ নেতা দীপু ও সায়েমের স্মরণে দীপু-সায়েম স্মৃতি পরিষদ গঠন করেছিল আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্ত। ওই কমিটির সভাপতি শান্ত নিজেই। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর খন্দকার বাকী বিল্লাহকে ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দ্বায়িত্ব পালন করতে আর দেখা যায়নি। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে ছিলেন। এ ছাড়া তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী যুবলীগের সক্রিয় নেতা।'

গত বছরের ১৯ জুলাই ময়মনসিংহ নগরের মিন্টু কলেজ এলাকায় ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রেদোয়ান হোসেন ওরফে সাগর (২৪) নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ গত ২৪ জুলাই বাদী হয়ে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। এ ছাড়া বিএনপি পার্টি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায়ও স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে আলাদা মামলা হয়।

মিন্টু/মেহেদী/

গণতন্ত্রের চর্চা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৭ পিএম
গণতন্ত্রের চর্চা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'দুর্ভাগ্য যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রটা চর্চা হয়নি। গণতন্ত্রের চর্চা পাকিস্তান আমল থেকে এখানে হয়নি। খুব স্বল্প সময় ধরে কিছুটা চর্চা হয়েছিল। তারপরে আবার সেই চর্চা থেকে আমরা দূরে সরে গেছি।'

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলা একাডেমিতে 'সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫'-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশের তরুণরা ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ রাজনীতিতে আগ্রহীর একটা জরিপ দেখে সকালে মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এখানে এসে আমার আশা বেড়েছে। আমাদের তরুণরা আরও বেশি যোগ্য। তারা দেশ গঠনে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে।' 

তিনি বলেন, 'বর্তমান প্রজন্ম এখন আমাদের চেয়ে অনেক অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অনেকে বলেন যে এখানে কিছু হবে না। এটা সঠিক নয়। আমি অত্যন্ত আশাবাদী অনেক কিছু হবে এবং বাংলাদেশে অবশ্যই আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।' 

মির্জা ফখরুল বলেন, 'তর্ক আছে, বিতর্ক আছে। মতের অমিল আছে। আমরা বিশ্বাস করি যে আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে। এটাই হচ্ছে উপযুক্ত একটা ডেমোক্রেসি।'

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের একটি প্রদেশের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'শুধুমাত্র তার একজন দেহরক্ষী নিয়ে এসে আশ্রয় নেওয়া সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আর আমাদের এখানে যেই মন্ত্রী হয়ে গেল সেই সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে যায়। তার বাড়ির সামনে গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি- এই একটা মানসিকতা তৈরি হয়। এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। স্পিকার, প্রাইম মিনিস্টার বললেই তো যথেষ্ট হয়। আমি আশাবাদী মানুষ, আমি মনে করি, আমাদের নতুন ছেলেরা এই বিষয়টা চালু করবে। ভালো সময় আসবে, আরও ভালো সময় আসবে।'

আয়োজকদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'তারা অত্যন্ত সুন্দর একটা ভালো কাজ করেছেন। আমাদের নতুন প্রজন্মের চেঞ্জের সঙ্গে আমাদের পরিচয়টা আর বাড়ানো দরকার। এখানে একটা বড় গ্যাপ আছে। ঢাকাতে যে চিন্তাভাবনা আবার ঠাকুরগাওয়ে সেই চিন্তাভাবনা না। আমরা একটা প্রজন্ম তৈরি করতে চাচ্ছি, একটা শক্তি তৈরি করতে চাচ্ছি, একটা আর্মি তৈরি করতে চাচ্ছি, যে আর্মি বাংলাদেশকে বদলে দেবে। যদি আমরা সামনের দিকে যেতে পারি তাহলে নিশ্চই আমরা জয় করব।'

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ইলিয়াস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশনা ইমাম প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার যুবদল নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৭ পিএম
চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার যুবদল নেতা বহিষ্কার
মনিরউজ্জামান মনির

নরসিংদীর পলাশে সিমেন্ট কারখানায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরউজ্জামান মনিরকে বহিষ্কার করেছে জেলা যুবদল। 

সোমবার (৭ জুলাই) জেলা যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সুমন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) জেলা যুবদলের সভাপতি ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মনিরউজ্জামান মনিরকে যুবদলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ ও সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার হাসান।

জেলা যুবদল সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ বলেন, ‘দলীয় আদর্শ ও শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরউজ্জামান মনিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এর আগে, গত ৪ জুলাই (রবিবার) রাতে নরসিংদী সদর উপজেলার ব্রাহ্মন্দী এলাকা থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, গত ৩ জুলাই দুপুরে ডাঙ্গা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেড কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটে। মনিরের নির্দেশে নদীপথে দুটি ট্রলারে করে ২৫-৩০ জনের একটি সশস্ত্র দল কারখানায় প্রবেশ করে। তারা শ্রমিকদের থাকার ৬টি কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এবং মোবাইল, ল্যাপটপসহ মালামাল লুট করে নেয়। হামলায় অন্তত সাতজন শ্রমিক আহত হন। পরে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ মনিরউজ্জামান মনিরকে প্রধান আসামি করে ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে পলাশ থানায় মামলা করে।

শাহিন/সালমান/