
বাংলাদেশে এখন এক তীব্র, ভয়-আতঙ্কের নাম রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ। এই সাপের দংশনে সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছেন কৃষকরা। ধান কাটতে গিয়ে রাসেলস ভাইপারের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তারা। আগে হাতে গোনা কয়েকটি জেলায় এই সাপের উপস্থিতি দেখা গেছে। এখন তা ২৮টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। দিন দিন রাসেলস ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা খুবই আতঙ্কের বিষয়। কিন্তু স্বস্তির বিষয় হলো, বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের সঠিক চিকিৎসা আছে। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে হবে। সর্প দংশনের শিকার হলেই নিশ্চিত মৃত্যু হবে- ব্যাপারটা মোটেই এমন নয়। সর্প দংশনের শিকার হলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। সর্প দংশনের পর রোগীকে সাহস দিতে হবে। শান্ত রাখতে হবে। সর্প দংশিত অঙ্গের নড়াচড়া বন্ধ রাখা, যাতে বিষ শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে। অধিকাংশ সাপ হাতে বা পায়ে দংশন করে, দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া না করার ফলে শরীরে বিষ ছড়াতে সময় লাগে। পায়ে ছোবল দিলে লাঠি বেঁধে পা সোজা করে স্টেচারে শুইয়ে দ্রুত চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতে হবে। চিকিৎসককে সব খুলে বলতে হবে। উল্লেখ্য, যেকোনো ধরনের বাঁধনে সাপের বিষ আটকাতে পারে না। এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে হাত-পা চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চন্দ্রবোড়া ও সবুজবোড়া সর্প দংশনে বাঁধন মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
জমিতে কাজের সময় অবশ্যই গামবুট পরতে হবে। সম্ভব হলে হাতে গ্লাভস থাকা উত্তম। দেখা গেছে সাপ হাত এবং পায়ে দংশন করে সবচেয়ে বেশি। রাতের বেলা লাইট নিয়ে চলাফেরা করতে হবে। রাতে জমিতে কাজ না করাই ভালো। জমির ধান, ভুট্টাসহ নানা ফসল কাটার জন্য যান্ত্রিক মেশিন ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। জমি এবং জমির ঝোপঝাড় দিয়ে হাঁটার সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাসেলস ভাইপার হিসহিস শব্দ করে। যা কানে বেশ জোরেই শোনা যায়। এ কারণে হিসহিস শব্দ শুনলে সাবধান হতে হবে। কাজ করার সময় মাটিতে শব্দ করা যেতে পারে, যাতে সামান্য হলেও কম্পন সৃষ্টি হয়। রাসেলস ভাইপার কম্পন বুঝতে পারে। রাসেলস ভাইপার দ্রুত দংশন করতে পারে। কিন্তু এরা তেড়ে এসে কামড়ায় না। এরা খুব অলস প্রকৃতির সাপ। কুণ্ডুলী পাকিয়ে বসে থাকে। এই সাপের বিষে বিভিন্ন ধরনের বিষ থাকে না। রাসেলস ভাইপারের দংশনের সঠিক চিকিৎসা বাংলাদেশে আছে।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
বনানী, ঢাকা
[email protected]