
দেশে একসময় হাজার হাজার শকুন চোখে পড়ত। দিন দিন শকুন আমাদের কাছ থেকে বিপন্ন হতে চলেছে। মানবহিতৈষী হিসেবে শকুনের একটা আলাদা ভূমিকা ছিল। তা ছাড়া প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় শকুনের বিকল্প কিছু নেই। মানুষের কারণে শকুনের বিলুপ্ত খুব দ্রুতই ত্বরাম্বিত হয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে আমাদের দেশে গরুর ব্যথানাশক হিসেবে ব্যবহার করা হতো ডাইক্লোফেনাক। এই ওষুধ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার ফলে গরু বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যেত।
আর তা খেয়েই দেশের অধিকাংশ শকুন বিলুপ্তের প্রধান কারণ বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। শকুন মরা পশুপাখির বর্জ্য খেয়ে পরিবেশ রক্ষা করত। সেই সঙ্গে বর্জ্যে থাকা প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়াও নির্মূল হতো। তখন প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার কোনো সুযোগ ছিল না। শকুন বিপন্ন হওয়ায় প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া কুকুর-বিড়ালের মাধ্যমে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে মানুষকে রোগাক্রান্ত করছে।
এতে মানুষের ব্যাপক মৃত্যুর কারণ বলে গবেষণায় উঠে আসে। জানা যায়, ভারতেই শুধু প্রতিবছর ১ লাখ লোকের মৃত্যু ঘটে শকুন বিলুপ্তের কারণে। আগে ময়লার ভাগাড়ে কোনো মরা প্রাণীর বর্জ্য থাকলে শকুন দল বেঁধে খেয়ে পরিচ্ছন্নতার কাজটি করত। তাই এখনই সময় মানবহিতৈষী প্রাণ-প্রকৃতির নীরব বন্ধু শকুনের অনুকূল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। প্রকৃতিকে তার নিজস্ব বলয়ে চলতে দেওয়া উচিত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় শকুন রক্ষাকবচ। মনে রাখতে হবে, শকুন ফিরিয়ে আনা গেলেই বেঁচে যাবে নিরীহ প্রাণী ও মানুষ।
অলিউর রহমান ফিরোজ
সাংবাদিক
মিরাপাড়া, রিকাবীবাজার, মুন্সীগঞ্জ
[email protected]