ঢাকা ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে বিস্তীর্ণ জনপদ নদীগর্ভে

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:৪৩ এএম
আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে বিস্তীর্ণ জনপদ নদীগর্ভে

মাদারীপুরের কালকিনী উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত আড়িয়াল খাঁ এখন ভাঙন-তাণ্ডব চালাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সাহেব রামপুর, সিডিখান, আণ্ডারচর, বাঁশগাড়ী, মোল্লারহাটে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। আড়িয়াল খাঁ পদ্মার গোয়ালন্দ ঘাটের ৫১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। উৎসের মুখ থেকে এ নদটি প্রবাহিত হয়ে ১৬২ কিলোমিটার ভাটিতে পাড়ি দিয়ে সেখানে কীর্তনখোলা, আন্ধারমানিক এবং বরিশ্বর শাখা নদীর জন্ম দিয়েছে। 

এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে আড়িয়াল খাঁ মাঝে মাঝেই ভাঙনের সৃষ্টি করে তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে। তাতে হাটবাজার, স্কুল-মাদ্রাসা, বেড়িবাঁধ, সড়ক ও কৃষকের জমি গিলে নিয়েছে। আর হাজার হাজার মানুষকে করেছে গৃহহীন। বিশেষ করে সস্থাল প্রাইমারি স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। হোগলপাতিয়া লঞ্চঘাট ভেঙে সেখানে এখন বিস্তীর্ণ চর পড়েছে। অপরদিকে আলীপুর বেড়িবাঁধের পুরোটাই নদী কেড়ে নিয়েছে। মোল্লারহাট লঞ্চঘাট ভেঙে হাটের কাছে চলে এসেছে। 

আর কিছু ভাঙলেই মোল্লার হাটসহ লালচাঁন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলী উচ্চবিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। আড়িয়াল খাঁর ভয়াবহ ভাঙন-তাণ্ডব চললেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেনি। তাই এ অঞ্চল রক্ষায় শক্ত বাঁধ দেওয়া জরুরি। হাজার হাজার মানুষ ভাঙনের শিকার হয়ে তাদের বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি হারিয়ে এখন উদ্বাস্তু। বর্ষার তীব্র পানি প্রবাহে নদীভাঙন ঠেকানো অত্যন্ত জরুরি। 

রোকসানা রহমান 
আলীপুর, মোল্লারহাট, কালকিনী, মাদারীপুর
[email protected]

নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে ভাবনা

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ এএম
নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে ভাবনা

বাঙালি হুজুগের পাবলিক। দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন কারিকুলাম নিয়ে তেলেসমাতি কাণ্ড ঘটে গেল। সবাই নিজের মতো করে মতামত দিল! ব্যস! যা হওয়ার হতে থাকুক। এবার সরকার আর অভিভাবকের গ্যাঁড়াকলে পড়লাম আমরা শিক্ষার্থীরা। একটু অশুদ্ধ ভাষায় বললে ‘মাইনকার চিপায়’। এই দুর্মূল্যের বাজারে কারিকুলামের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এক মাস পেলাম নতুন কারিকুলামের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। ক্লাসে বসলাম গ্রুপ ওয়ার্কের জন্য, কিন্তু বেঞ্চে বসতে না বসতেই সময় শেষ। অ্যাসাইনমেন্টসের স্তূপ জমেছে বাসায়। শিক্ষার্থীরা তো তখনই আনন্দের সঙ্গে অ্যাসাইনমেন্টস করবে, যখন শিক্ষক ধৈর্যসহকারে পড়াবেন। এক কথায় শিক্ষকদেরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। যে কারিকুলামে সরকার আমাদের শিক্ষিত করাতে চাচ্ছে, সে কারিকুলাম বিদেশের, আর সেখানে একটা শ্রেণিকক্ষে বেশি হলে ২০-৩০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে। তাও আবার সকাল থেকে সন্ধ্যা। আর আমাদের এক একটা শ্রেণিকক্ষে কমপক্ষে ৮০-৯০ জন ছাত্রছাত্রী থাকে। সময় সকাল থেকে খুব বেশি হলে দুপুর ১২টা অবধি। বিদেশের শিক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়ে পড়াশোনা, অ্যাসাইনমেন্টস, প্রজেক্টস ইত্যাদি কিছুই করতে হয় না। তাহলে কীভাবে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম বিদেশের মতো উন্নত হয়ে উঠবে? এখন সরকার যদি জাতিকে মূর্খ বানাতে চায় সেটা আলাদা কথা, কিন্তু কোনো ভালো উদ্দেশ্য যদি থেকে থাকে, তাহলে আমার একটাই কথা। যারা এই কারিকুলামের পেছনে ভূমিকা রাখছেন, আপনারা আর একটু পরিকল্পনা করুন। সময় এখনো ফুরায়নি কিন্তু নিঃসন্দেহে অতি দ্রুত ফুরিয়ে যাবে।

সামিহা তাহমিদ
২৯৭ পূর্ব রামপুরা, ঢাকা-১২১৯

সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সংকট ও সমাধান

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সংকট ও সমাধান

সাখাওয়াত হোসেন বিজিবিকে বলেছিলেন, সীমান্তে আপনারা পিঠ দেখাবেন না। তার কথার সূত্র ধরে বিজিবি সীমান্তে নড়েচড়ে বসে। তার বক্তব্য ভারত সরকার ভালোভাবে নেয়নি। সাখাওয়াত সাহেবের বক্তব্যের রেশ শেষ না হতেই স্বর্ণা দাস নামে নিরীহ কিশোরকে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা হয়। সাখাওয়াত সাহেবের বিদায় ঘটে। নতুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টাও একই উক্তি করেন সীমান্ত নিয়ে। এবারও জয়ন্ত নামের আরেক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ভারতের বিএসএফের হত্যাকাণ্ড কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। কয়েক দিন আগে ভারতের চারজন অনুপ্রবেশকারী বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। বিজিবির হাতে যখন ধরা পড়েছিল তখন ইচ্ছা করলেই তো ভারতের নাগরিকদের গুলি করতে পারত বিজিবি। তা না করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বিজিবি সদস্যদের অনেক জটিল পরিস্থিতির মুখে সেখানে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সীমান্তে আমাদের অংশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়নি। নদীর পাড়, খেতের আইল এবং জমির মধ্য দিয়েই বিজিবিকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। অপরদিকে ভারত সীমান্তের অংশে পাকা সড়ক। তাদের টহল থাকে জোরদার। কঠোর ভাষায় হুংকারের চেয়ে সীমান্তেই বিএসএফকে বুঝিয়ে দিতে হবে আমরাও ইচ্ছা করলে গুলি চালাতে পারি। দু-একটি নজির রাখলেই আঁতে ঘা লাগবে ভারত সরকারের। তখন উভয় দেশের জটিল সমস্যা দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুরহা করা যাবে।   
 
রোকসানা রহমান 
আলীপুর, মোল্লার হাট, কালকিনী, মাদারীপুর
[email protected]

কালোটাকার দুর্বৃত্তদের ধরতে হবে

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
কালোটাকার দুর্বৃত্তদের ধরতে হবে

অন্তর্বর্তী সরকার কালোটাকা সাদা করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ঢালাওভাবে প্রথাগত করের চেয়েও কম করহার দিয়ে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ সাদা করার যে প্রক্রিয়া সংসদে দলীয় সরকার পাস করেছিল, তা রোধ করা হয়েছে। কালোটাকা সাদা করার সুযোগেই দেশে মূলত দুর্নীতিবাজ লোকের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। দুর্নীতিতে রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গেই ক্ষত তৈরি হয়েছিল। এমন কোনো সেক্টর পাওয়া যাবে না যেখানে দুর্নীতি নেই। আর তাদের দোসর হিসেবে কাজ করেছে দলীয় সরকার। 

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের মধ্যে অন্যতম ওয়াদা হলো দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা। প্রতিটি সেক্টরকে আগে সাদা করতে হবে। যাতে কালোটাকার সুযোগ তৈরি না হয়। ইতোমধ্যে অনেক কালোটাকার মালিক ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে ঘরে রেখেছেন। কোন কোন দেশে মূলত টাকা পাচার সবচেয়ে বেশি হয়, তা আগে চিহ্নিত করতে হবে সবার আগে। 

কালোটাকা রোধের যুদ্ধ যাতে দলীয় সরকার এলেই আবার বন্ধ হয়ে না যায়, তার জন্য আইনের কঠোরতা তৈরি করে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিতে হবে কঠোর এবং সাহসী ভূমিকা। যারা এর আগে কালোটাকা সাদা করেছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। দেখতে হবে কারা কালোটাকার বিত্তবৈভবে আলিশান অট্টালিকা তৈরি করে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। 
                                                                  
মো. ফাহিম সরদার
বরপা, তারাবো, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ
[email protected]

জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আরও বাস চাই

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০২ পিএম
জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আরও বাস চাই

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, দয়াগঞ্জ, ফরিদাবাদ, ফরাশগঞ্জ, মিলব্যারাক, নারিন্দা, ওয়ারী প্রভৃতি এলাকায় লাখ লাখ মানুষের বসবাস। অথচ এই এলাকা থেকে মতিঝিল হয়ে মালিবাগ, নতুনবাজার, এয়ারপোর্ট হয়ে টঙ্গী পর্যন্ত কোনো পরিবহন বা বাস দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নেই। এ ক্ষেত্রে বিপুল শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশার লোকদের অনেক কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

আশা করি, সরকার বা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পুরান ঢাকার জনগণের সুবিধার্থে অবিলম্বে গেন্ডারিয়ার লোহারপুল থেকে মতিঝিল, মালিবাগ, নতুনবাজার হয়ে এয়ারপোর্ট, টঙ্গী পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করবে।
 
মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী
গণমাধ্যমকর্মী
১৭ ফরিদাবাদ, গেন্ডারিয়া, ঢাকা-১২০৪
[email protected]

গুজব থেকে বেরিয়ে আসুন

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
গুজব থেকে বেরিয়ে আসুন

গুজব হলো এমন কোনো তথ্য বা খবর, যা প্রমাণিত না হয়ে শুধু প্রচারিত হয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর সত্যতা যাচাই করা হয় না। গুজব একটি সমাজকে অস্থিতিশীল এবং বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে দেয়। আমাদের নিজেদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে। বর্তমানে গুজব শুধু ধর্মীয় বা সামাজিক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হচ্ছে না, রাজনৈতিকভাবেও বিভাজন সৃষ্টিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে আমরা বিভিন্ন সংঘাত ও আক্রমণাত্মক আচরণ দেখতে পাচ্ছি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। গুজব প্রতিরোধে আমাদের সবার সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। 

এ ক্ষেত্রে জেনারেশন-জেড  মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তারা সাধারণত প্রযুক্তিগত দিক থেকে একটু হলেও এগিয়ে। তারা গুজবে কান দেয় না। যেকোনো তথ্য সমাজে ছড়িয়ে পড়ার আগে আমাদের ফ্যাক্ট চেক করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট, যেমন- পলিটিফ্যাক্ট, ব্রেকিং নিউজ, স্নোপস প্রভৃতির মাধ্যমে নির্ভুল তথ্য পেতে পারি। এ ছাড়া আমাদের দেশের সংবাদপত্রগুলোর ওপর নির্ভর করা যেতে পারে। 

সাধারণত সংবাদপত্রগুলো সেন্সিটিভ বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দেয় না। তারা ফ্যাক্ট চেক করেই খবর প্রচার করে। সরকারকেও এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে না পড়ে। সর্বোপরি গুজব থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সবাইকে সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। সঠিক তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা এবং মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে সচেতন থাকা আমাদের সবার দায়িত্ব। এভাবে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে একটি তথ্যবহুল সমাজ গঠন সম্ভব হবে এবং গুজবের প্রভাব কমিয়ে আনা যাবে।

আব্দুল্লাহ আল নোমান
শিক্ষার্থী, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]