হরতাল-অবরোধ শব্দ দুটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে খুব পরিচিত শব্দ। এ দেশের রাজনীতির সঙ্গে শব্দ দুটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মূলত বিরোধী দলগুলো চাপ সৃষ্টি করে নিজেদের অধিকার ও দাবি-দাওয়া আদায় করার চেষ্টা করে থাকে।
শব্দগত দিক থেকে শব্দ দুটির মধ্যে বেশ পার্থক্য থাকলেও বাস্তবে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। হরতাল হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের সম্মিলিত আন্দোলন। এর সঙ্গে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বা সমর্থন থাকে। যদিও কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিষয়টি সংগঠিত হয়ে থাকে। তবে অন্য সবকিছু বন্ধ থাকলেও জরুরি প্রয়োজনীয় সংস্থা, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও গণমাধ্যম ইত্যাদি জরুরি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো হরতালের আওতার বাইরে রাখা হয়। অন্যদিকে অবরোধ হচ্ছে কোনো বিশেষ কর্মসূচি পালনে জনগণকে বাধ্য করার একটি পন্থা। এতে জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বা সমর্থন কোনোটাই থাকে না। বরং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কিংবা বিভিন্ন গোষ্ঠী তাদের নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য অবরোধের মাধ্যমে দেশে অচল অবস্থা সৃষ্টি করে সরকারের ওপর একপ্রকার চাপ প্রয়োগ করে থাকে। অবরোধ চলাকালে সব ধরনের পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করার মাধ্যমে সরকারকে চাপে ফেলতে বাধ্য করা হয়। এতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়ে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অফিস-আদালত এবং বিভিন্ন কল-কারখানা, গার্মেন্টস কর্মীদের প্রচুর ভোগান্তি পোহাতে হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত, এর থেকে উত্তরণের জন্য সহনশীলতা এবং পরমতসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করা।
সবুজ আহমেদ জীবন
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়