বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন আমাদের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক চেতনায় গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। এর ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
স্বাধীনতার পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। যেখানে রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি মূলনীতি ছিল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ওই সংবিধান আমাদের কাছে এক অসাধারণ দলিল। এটি বৈষম্যহীন, উন্নত, সমৃদ্ধ ও সমতাভিত্তিক দেশের রূপরেখা তুলে ধরে। কিন্তু স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে আমরা ওই রূপরেখা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। এখনো সমাজে বৈষম্য, দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজমান। একই সঙ্গে ধীরে ধীরে আমরা মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে যাচ্ছি।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অভ্যুত্থান ঘটেছে। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনের অবসান হয়েছে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্ন উঠেছে। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে অবশ্যই সংস্কার জরুরি। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে রাষ্ট্র বা সংবিধানকে সংস্কার করতে হবে। সময়োপযোগী সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হলো মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন করা। এতেই রাষ্ট্রের সব বৈষম্য দূর হবে।
এম আর লিটন
লেখক ও সাংবাদিক, তেজগাঁও, ঢাকা
[email protected]