শিক্ষিত বেকারত্বের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে দিন দিন বেকারত্ব সৃষ্টি হচ্ছে ভয়ংকর রূপে। অনেকে বলেন, শিক্ষা হলো দারিদ্র্য বিমোচনের প্রধান শর্ত। কিন্তু বাংলাদেশে যে শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে তা কি শিক্ষিত জাতির কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে কি না, তা ভেবে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি। একজন স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী কিংবা শিক্ষিত তরুণ তার পড়ালেখা শেষে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি করবেন, এটাই স্বাভাবিক।
এ ছাড়া আর উপায় কী? কেননা এ দেশে একজন তরুণের উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত তরুণ বেকারত্বের যন্ত্রণা মাথায় বয়ে বেড়াচ্ছেন। দেশে কাজ না পেয়ে দুবেলা দুমুঠো ভাতের জন্য তরুণরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন উন্নত দেশে যাত্রাপথে জীবন দিচ্ছেন বা পৌঁছাতে পারলেও নানা সমস্যার কারণে লুকিয়ে জীবন পার করছেন। বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ ও তরুণী কাজ পাচ্ছে না, অথচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় দেখা যায়, বিদেশ থেকে উঁচু বেতন দিয়ে দক্ষ কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। আমাদের যোগ্য লোকবল তৈরি করতে অপারগ। শিক্ষিত তরুণদের মেধা ও শ্রমশক্তি যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে দেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে।
এতে বেকারত্বের বোঝা কিছুটা লাঘব হবে। তরুণরা কাজের সুযোগ না পেয়ে অনেকে মাদকসহ নেশাজাতীয় নানাবিধ অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। হতাশা-নিরাশায় জীবন কাটাচ্ছে। এর জন্য দায়ী দেশের সরকার। দেশের জন্য এ মুহূর্তে সমস্যা হলো জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ বেকার। যুব জনগোষ্ঠীর একটি অংশ অভিভাবকদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের যথাযথ পদক্ষেপ যেমন দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, তেমনি এ ক্ষেত্রের ব্যর্থতা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের সোনালি ভবিষ্যতের স্বার্থেই কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গতি আনার উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সঠিক হবে না। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা
[email protected]