বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে অপরিণত নবজাতকজনিত জটিলতায় সবচেয়ে বেশি শিশু মারা যায়, বাংলাদেশ তার একটি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন নবজাতক শিশুর অপরিণত জন্মজনিত জটিলতায় মারা যায়।
প্রিম্যাচিওর বাচ্চার জন্ম, জন্মসংক্রান্ত এবং জন্ম-পরবর্তী জটিলতা নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই মূলত ওয়ার্ল্ড প্রিম্যাচুরিটি ডে পালন করা হয়। প্রিম্যাচুরিটি নিয়ে বলা হয়, দেশে বর্তমানে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশুদের প্রতি ১ হাজারে ৩১টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রতি হাজারে ২০ নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশে বছরে ৫ লাখ ৭৩ হাজার অপরিণত শিশু জন্মগ্রহণ করে, যা মোট জন্মলাভ করা শিশুর ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। এই অপরিণত শিশু ও অল্প ওজনের বাচ্চার মৃত্যু অনূর্ধ্ব ৫ বছরে ২২ শতাংশ।
অপরিণত শিশুদের শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সংগ্রামও করতে হয়। তাদের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সবাইকেও জীবনযুদ্ধে শামিল হতে হয়। ভালোবাসার কমতি না থাকলেও অনেক সময় অভিভাবকরা ঠিক বুঝে পান না কী করবেন। বাড়ির পরিচর্যা, সামাজিক বিধিনিষেধ, অতিরিক্ত ব্যয়, অবহেলা ইত্যাদি মিলিয়ে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জের ফলে পরিবারটি জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
ভাষাগত সীমাবদ্ধতা তো আছেই, তার ওপর শারীরিক অক্ষমতা সব মিলিয়ে এই জীবনসংগ্রাম নিষ্পাপ শিশুদের জন্য বড়ই কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, সহানুভূতি, আধুনিক পরিবেশগত ব্যবস্থা, উন্নত মানসিকতা ইত্যাদির মাধ্যমে অপরিণত নবজাতকরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে, এমনকি জয় করতে পারে বিশ্বকেও।
ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
লেখক
[email protected]