সম্প্রতি সারা দেশে আলোচিত বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় এর আগে র্যাব-১২ ব্রিফিংয়ে বলেছিল, ছেলেই তার মাকে হত্যা করে ফ্রিজে রেখে দিয়েছিল। কিন্তু পরক্ষণেই ঘটনাটি মোড় নেয় অন্যদিকে। তদন্তে পুলিশ বলছে, ভাড়াটিয়ার অনৈতিক কাজে বাধা ও তাকে বাসা ছাড়তে বলায় খুন হন গৃহমালিক উম্মে সালমা। কিন্তু এই জাতীয় মিডিয়া ট্রায়ালে গ্রেপ্তারের কোনো বক্তব্য মিডিয়া তুলে ধরছে না।
অথচ নির্দোষ ব্যক্তির যে ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে যাচ্ছে, যা কখনো পূরণযোগ্য নয়। বাংলাদেশে আলোচিত সব ঘটনাতেই সন্দেহভাজনদের আটকের পর সরাসরি গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন বা তাদের ছবি, পরিচয় প্রচার করা অনেকটা নিয়মিত হলুদ সাংবাদিকতার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ঘটনা তাদের জন্য শুধু মানহানিকর নয়, মানবাধিকারের লঙ্ঘনও বটে। কারণ, পরবর্তী সময়ে তিনি যদি দোষী প্রমাণিত না হন, তাহলে তার প্রতি মিডিয়া ট্রায়ালে যে অন্যায়টা করে ফেলা হচ্ছে, সেটার দায়ভার কি মিডিয়া নেবে?
মানুষের জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম এবং সম্পত্তির ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী এবং আইনগত সুরক্ষার লক্ষ্যে নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মুখ্য উদ্দেশ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুল তদন্তের কারণে একজন মানুষকে কী পরিমাণ হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ বুঝবে না।
অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সম্পাদক-প্রকাশক ‘দৈনিক ইন্টারন্যাশনাল’
[email protected]