জুলাই বিপ্লবের পর চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার নিরসন হলেও এখনো অনেক ক্ষেত্রে তা স্বরূপে বহাল রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা তার মধ্যে অন্যতম।
বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সর্বোচ্চ স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। প্রতিবছর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া কিছু মেধাবী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে।
তীব্র প্রতিযোগিতা বিদ্যমান থাকায় অনেক সময় শূন্য দশমিক ০০১ নম্বর কম পাওয়ার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, সেখানে কোটার কারণে এর চেয়ে অনেক কম নম্বর পেয়েও বহু শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। অনেক সময় ফেল করেও পোষ্য কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে।
১৯৭৭ সালে তৎকালীন উপাচার্য ড. আব্দুল বারী তার সন্তানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম পোষ্য কোটা চালু করেন। বাংলাদেশ সংবিধানে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তার সন্তান কোনো দিক দিয়ে সমাজে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে গণ্য হতে পারে না। অথচ একজন কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়, অনেক সময় টাকার অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। রিকশা চালিয়ে সন্তানের পড়াশোনার খরচ জোগানোর চেষ্টা করছেন বৃদ্ধ বাবা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার পরও শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মো. সবুজ মিয়া
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শাখা
[email protected]