আমাদের দেশে সড়ক ও রেল দুর্ঘটনা যেন অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সারা দেশে ট্রেনে কাটা পড়ে হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, কুমিল্লার ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশায় থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ সাত যাত্রী মারা গেছেন। অসচেতনতা ও অবৈধ রেলক্রসিং এই ধরনের মর্মান্তি দুর্ঘটনার মূল কারণ। জানা গেছে, দুর্ঘটনাস্থলের রেলক্রসিংটি অবৈধ ছিল। এমন দুর্ঘটনা যেন দেশের রেল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতার করুণ চিত্র তুলে ধরে। এক জরিপে দেখা গেছে- দেশের ৮২ শতাংশ রেলক্রসিং অরক্ষিত; অর্থাৎ ট্রেন চলাচলের সময় যানবাহন আটকানোর জন্য এসব ক্রসিংয়ে কোনো পাহাড়াদার নেই, সুরক্ষাব্যবস্থা অপ্রতুল এবং ট্রেন আসার সংকেত কার্যকর নয়। ফলে একেকটি রেলক্রসিং যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবছরই গড়ে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। এগুলো কেবল পরিসংখ্যান নয়; এটি রেললাইনের চরম নিরাপত্তা দুর্বলতার ইঙ্গিতও বটে। এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রেলক্রসিংগুলো সুরক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। অবৈধ রেলক্রসিংগুলো অবিলম্বে উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নিরাপদ রেলপথ নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হলে মূল্য দিতে হবে হাজারো নিরীহ প্রাণের। অতএব, রেলপথ ব্যবস্থাপনায় দ্রুত সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
তুহিন চাকমা
শিক্ষার্থী, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
[email protected]