শীত শুরু হলেই খেজুর রসের চাহিদা বেড়ে যায়। গাছে গাছে হাঁড়ি ঝুলিয়ে সংগ্রহ করা হয় রস। পিঠাপুলি, ফিরনি, পায়েস খাওয়ার ধুম থেকেই খেজুর রস সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। কেউ কেউ সরাসরি গাছ থেকে নামিয়ে নেয় খাওয়ার জন্য। লোভনীয় এ খেজুর রস আমাদের অজান্তে বয়ে আনে নিপাহ ভাইরাসসহ নানাবিধ রোগবালাই। সাধারণত গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য দিনের বেলায় গাছে হাঁড়ি বেঁধে দেন। রাতে রস মজুত হয় হাঁড়িতে।
পরের দিন সকালে হাঁড়ি থেকে বাজারে সরবারহ করা হয়। খেজুর রসে আকৃষ্ট হয়ে রাতে বাদুড়, সাপ, পোকামাকড় রস খেতে আসে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় হাঁড়িতে কীটপতঙ্গের প্রবেশ লক্ষ করা যায়। অধিকাংশ সময় রস পরিশোধন ব্যতীত সরাসরি বাজারজাত করা হয় বা গাছ থেকে সরাসরি পান করা হয়। বাদুড়ের লালা, মল রসে মিশ্রিত হওয়ার কারণে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যায়। জ্বর, বমি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাথাব্যথা, প্রলাপ বকা, অজ্ঞান হওয়া, পেটে পীড়া, কখনো কখনো নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, বুকে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। ২০২৩ সালে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা ৭০ ভাগ। ২০২২-২৩ সালে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে ১০ জন মৃত্যুবরণ করেছে।
নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে প্রথম শর্ত সরাসরি কাঁচা রস পান না করা। আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। জনসচেতনতার উদ্যোগ গ্রহণ করে নিপাহ ভাইরাসে বিস্তার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আহাম্মদ উল্লাহ
ঢাকা