ঢাকা ৩০ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে হোক পর্যটনকেন্দ্র

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
বুড়িগঙ্গাকে ঘিরে হোক পর্যটনকেন্দ্র

একসময় নদীপথ ছিল শহর ঢাকার অন্যতম লাইফলাইন। সেই সময় নদী মূলত বুড়িগঙ্গা এবং তার সংলগ্ন নদীগুলোকে ঘিরেই তৈরি হয়েছিল মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ। নদীতীরে গড়ে উঠেছিল আহসান মঞ্জিল, নাট্যমঞ্চ, সিনেমা হল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন স্থাপত্য কীর্তি, মন্দির, মসজিদ, খ্রিষ্টান মিশনারি, নবাববাড়ির মতো স্থান, সদরঘাট, সোয়ারীঘাট, ইসলামপুর, শ্যামবাজার, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, কুমারটুলি, কোতোয়ালি, মিটফোর্ড, লালবাগ, ফতুল্লা, বাবুবাজার এবং একাধিক ঐতিহাসিক স্থান ও বুড়িগঙ্গা নদীতীরবর্তী অসংখ্য ঘাট। এ ছাড়া বুড়িগঙ্গার তীরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। অনেকেই এই জায়গাগুলোতে ঘুরতে যান।

অভিযোগ, বুড়িগঙ্গা ভ্রমণ এবং এই নদীকে ঘিরে আলাদা পর্যটনের ব্যবস্থা বা প্যাকেজ ট্যুর নেই। এবার সেই পরিকল্পনা না হয় করুক পরিবহন এবং পর্যটন করপোরেশন। এই ট্যুরের পরিকল্পনা মূলত বুড়িগঙ্গাকে ঘিরেই হতে পারে। থাকতে পারে একাধিক প্যাকেজ।

ঢাকার বুড়িগঙ্গার যে ঘাটগুলো রয়েছে, তার বেশির ভাগেরই কোনো না কোনো ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই ঘাটগুলোর অবস্থা তেমন ভালো নয়। বাংলাদেশে এমন কোনো স্বেচ্ছেসেবী সংগঠনও নেই যে, ঢাকায় শুরু করতে পারে নদী উৎসব। মূলত বুড়িগঙ্গাকে ঘিরেই হতে পারে নানা পরিকল্পনা। বুড়িগঙ্গা নদীতীরবর্তী ঐতিহাসিক স্থান ও ঘাটগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ যাতে ঠিকমতো হয়, সেই দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। তা ছাড়া ঐতিহাসিক স্থান ও ঘাটগুলো উদ্ধার, ঘাট রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে ঘাটের সৌন্দর্যায়নও করা জরুরি। 

লিয়াকত হোসেন খোকন
রূপনগর, ঢাকা
[email protected]

লিবিয়া উপকূলে ভাগ্যবিড়ম্বিতদের বাড়ি মাদারীপুরে

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
লিবিয়া উপকূলে ভাগ্যবিড়ম্বিতদের বাড়ি মাদারীপুরে

লিবিয়া উপকূলের যে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তার বেশির ভাগের বাড়িই মাদারীপুরের। যে প্রবাসীরা নিজের জীবন দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে তাদের এরকম ভয়াবহ দৃশ্য দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। ইতালি যাওয়ার চোরাই পথ হলো লিবিয়া। সেখানেই আমাদের দেশীয় দালালরা লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের টার্গেট করে তাদের লিবিয়া পাঠিয়ে থাকে। এর পর নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয় আরও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। মাদারীপুরের বেশির ভাগ লিবিয়া প্রবাসীই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

 যখন দেশে এসে প্রতারকদের ব্যাপারে থানায় মামলা করতে যান তখন থাকে না তার কোনো প্রমাণ পত্র। আবার থাকলেও প্রতারক চক্রের কালো টাকার নৈরাজ্যে থানা-পুলিশের সহযোগিতাও তাদের মেলে না। কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমে লিবিয়া উপকূলে লাশের ভয়াবহ চিত্র ঘুরপাক খাচ্ছে। এতদিন লাশের পরিচয় না মিললেও শেষমেশ তাদের ঠিকানা পাওয়া গেছে। ২৩টি লাশের মধ্যে ১০ জনেরই বাড়ি মাদারীপুর। দেশের সবচেয়ে গরিব এবং অবহেলিত জেলা হলো- মাদারীপুর। এখানকার অর্থনীতি মূলত কৃষির ওপরই বেশি নির্ভরশীল। তাই তো এ জনপদের মানুষকে প্রতারক চক্র টার্গেট করে ফায়দা তুলতে পারছে সবচেয়ে বেশি। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে প্রতারক চক্র ও তাদের দালাল। তারাই মূলত লিবিয়ার উপকূল দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথ তৈরি করেন। তাদের ধরে আইনের আওতায় আনা না গেলে এ জনপদের আরও অনেক মায়ের বুক খালি হবে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের জলে। তবে যারা সমুদ্রের ভয়াবহ দুর্বিষহ পথ পাড়ি দিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রকে আরও যত্মশীল হতে হবে। তারা অবহেলিত হলে তার দায়ও রাষ্ট্রকে নিতে হবে। 

হাজি মো. রাসেল ভূঁইয়া
খলিফাবাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সীগঞ্জ
[email protected]

স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান বাড়াতে হবে

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
স্বাস্থ্য খাতে সেবার মান বাড়াতে হবে

সরকার প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করলেও স্বাস্থ্যসেবার মান তেমন উন্নত হয়নি। সাধারণত, সরকারি হাসপাতালগুলোয় নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোই চিকিৎসা নিতে ভিড় জমান। চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অবশেষে ডাক্তারের দেখা মিললেও রোগী তার সমস্যা সম্পূর্ণরূপে বলার আগেই ডাক্তার প্রেসক্রিপশন দিয়ে পরবর্তী রোগীকে ডাকেন। এর কারণ, ডাক্তারেরও অল্প সময়ে শত শত রোগী দেখার চাপ থাকে। আবার, কিছু ডাক্তার তাদের প্রাইভেট চেম্বারে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 অনেকে যথাসময়ে রোগী দেখা শুরু করেন না। এর পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে ইদানীং কিছু দালাল সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যারা বিভিন্নভাবে রোগীদের হয়রানি করছে। সরকারি ওষধ বিক্রয়যোগ্য নয় বলা হলেও, এর অনিয়ম ও কারসাজি এখনো বিদ্যমান।
এভাবে দরিদ্র মানুষ পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে- ১. পর্যাপ্তসংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া উচিত; ২. কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করা দরকার, যাতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়; ৩. দালালদের উৎপাত ও সরকারি ওষুষের কারসাজি বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করা সহজ হবে।

মুরশিদ আলম
শিক্ষার্থী, আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদ
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

আলু নিয়ে রাজশাহীর কৃষকরা দিশেহারা

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৫ পিএম
আলু নিয়ে রাজশাহীর কৃষকরা দিশেহারা

কৃষকদের যেন আর ভোগান্তির শেষ নেই। এবার আলুর ব্যাপক ফলন ফলিয়ে তা যেন এখন তাদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। রাজশাহীতে আলুচাষিরা আলু রাখার জন্য হিমাগার পাচ্ছেন না। পেলেও তা চড়া মূল্যে চাচ্ছেন রাখতে। একদিকে আলুর বাজার পড়তি। সেখানে এখন বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাদের। অপরদিকে হিমাগারের মালিকদের দৌড়াত্ম্যে তারা দিশেহার। গত মৌসুমে কৃষকরা হিমাগারে আলু রেখে দুটো পয়সার মুখ দেখতে পেয়েছিলেন। বাজারমূল্যে ভালো থাকায় আলুবাণিজ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। তার কারণেই এবার হিমাগারগুলোতে সিন্ডিকেট ব্যবসা শুরু হয়েছে। অনেক হিমাগারের মধ্যস্বত্বভোগীরা হিমাগারের কোটা আগে থেকেই কিনে রাখেন। 

পরে আলু ব্যবসায়ী বা ফড়িয়াদের কাছে তা লাভে ছেড়ে দেন। এবারও সে অবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকরা। আগের বার প্রতি কেজি আলু রাখা যেত যেখানে ৪ টাকায় এবার তার দাম ধরা হয়েছে ৮ টাকা। দ্বিগুণ বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। কতটা অরাজকতা থাকলে একটা দেশে এক বছরের ব্যবধানেই হিমাগারের ভাড়া ডবল হয়ে যেতে পারে তা কারও বোধগম্য নয়। আলুচাষিদের এবার তাদের উৎপাদিত আলু নিয়ে জটিলতায় পড়তে হবে, তা অনেকটা নিশ্চিত। তার কারণ হলো- যে টাকা দিয়ে তারা আলু ছাড়িয়ে বাজারজাত করবেন সে টাকাও বাজারমূল্যে পাবেন না। তাই তো রাজশাহীর আলুচাষিদের পাশে রাষ্ট্রকে এখন এগিয়ে আসতে হবে। নইলে চাষিরা ভবিষ্যতে আর আলুর চাষ করবেন বলে মনে হয় না। 


হাজি মো. রাসেল ভূঁইয়া
খলিফা বাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সীগঞ্জ
[email protected]

গাছ কাটা বনাম সবুজায়ন: আমরা কোন পথে?

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম
গাছ কাটা বনাম সবুজায়ন: আমরা কোন পথে?

প্রকৃতি আমাদের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ, আর তার অন্যতম উপাদান হলো গাছ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, নগরায়ণ, শিল্পায়ন ও অবৈধ বন উজাড়ের ফলে প্রকৃতি আজ সংকটের মুখে। অপরিকল্পিত গাছ কাটার ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন, খরা, বন্যা ও বায়ুদূষণের ভয়াবহ প্রভাব আমাদের ওপর পড়ছে। সবুজ প্রকৃতি শুধু পরিবেশ নয়, মানবজীবনের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গাছ আমাদের অক্সিজেন দেয়, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বৃষ্টিপাতের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কাটা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে।

সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আরও জোরদার করা, অবৈধ গাছ কাটা বন্ধ করা এবং বন সংরক্ষণ আইন কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি। উন্নয়ন দরকার তবে তা হতে হবে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।


মালিহা মেহনাজ 
শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা 
[email protected]

অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা: স্বপ্ন নাকি  মৃত্যুর ফাঁদ?

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪১ এএম
অবৈধ পথে ইউরোপ যাত্রা: স্বপ্ন নাকি 
মৃত্যুর ফাঁদ?

স্বপ্ন মানুষকে এগিয়ে যেতে শেখায়, কিন্তু যখন সেই স্বপ্ন মৃত্যুর পথে ঠেলে দেয়, তখন তা বিভীষিকা হয়ে ওঠে। উন্নত জীবন, উচ্চ আয় ও সামাজিক নিরাপত্তার আশায় প্রতিদিন অসংখ্য বাংলাদেশি তরুণ অবৈধ পথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই পথ অনিশ্চয়তা, প্রতারণা ও মৃত্যু ছাড়া কিছুই দেয় না। সাধারণত ঢাকা থেকে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া বা তুরস্ক-গ্রিস-জার্মানি হয়ে যাওয়া- এই দীর্ঘ ও ভয়ংকর পথগুলো তারা বেছে নেন। পথে পাচারকারীদের নির্যাতন, খাদ্য-পানির অভাব, ডাকাতের হামলা এবং নৌকাডুবির শিকার হন অনেকে।

 ভাগ্যক্রমে যারা পৌঁছান, তাদের জন্যও অপেক্ষা করে এক অনিশ্চিত জীবন। অবৈধ অভিবাসীদের বেশির ভাগই বৈধ কাগজপত্রের অভাবে চাকরি পান না, পুলিশের ভয়ে লুকিয়ে থাকেন এবং অমানবিক পরিবেশে শ্রম দিতে বাধ্য হন। অর্থনৈতিকসংকট, বেকারত্ব, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক চাপে তারা দালালদের ফাঁদে পা দেন, যারা মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এই মরণযাত্রা বন্ধ করতে সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সচেতনতা বৃদ্ধি, পাচারকারীদের দমন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। স্বপ্ন দেখা ভালো, তা যদি জীবনের বিনিময়ে হয়, সেই স্বপ্নের কোনো মূল্য নেই। নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।


প্রজ্ঞা দাস 
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ 
[email protected]