ঢাকা ৭ চৈত্র ১৪৩১, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
English
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

আ-মরি বাংলা ভাষা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
আ-মরি বাংলা ভাষা

ভাষা শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালে, প্রবল দেশাত্মবোধে আবেগ আর উদ্দীপনায় জেগে উঠেছিল সর্বস্তরের মানুষ। সবার মুখেই তখন রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’র দাবি। সবারই স্লোগান তখন ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘উর্দুর সঙ্গে বিরোধ নাই’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে তখন আলোচনা, তর্ক-বিতর্কের বিষয় খাজা নাজিমুদ্দিন-এর সেই বিতর্কিত বক্তৃতা ও সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন। ধীরে ধীরে নাজিমুদ্দিন সরকারের ওপর সবার ক্ষোভ বাড়তে থাকে। 

সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠনের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ সরকার, এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদেরও আগ্রহের কমতি ছিল না। রাষ্ট্রভাষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উভয় দিক থেকেই সমান তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই তৎকালীন অনেক রাজনৈতিক নেতারই লক্ষ্য ছিল ভাষা আন্দোলনের মঞ্চে আধিপত্য বজায় রাখা। সংগ্রাম পরিষদ গঠনের সভায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি ছাড়াও আরেকটি প্রস্তাব ছিল, বন্দিদের মুক্তি। শেখ মুজিবুর রহমান, মহিউদ্দিন আহমদ প্রমুখ নেতা ছাড়াও সে সময় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন বাম ঘরানার কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী! হয়তো সে কারণেই ভাষা আন্দোলনের মিছিলে মিছিলে এও স্লোগান ছিল ‘রাজবন্দিদের মুক্তি চাই’! যা ভাষা সংগ্রামীদের গভীর রাজনৈতিক সচেতনতার পরিচয় বহন করে। 

’৪৭-এর শেষে পাক সরকারের ছাপা চিঠি লেখার খাম, মানি অর্ডার ফরম ইত্যাদিতে উর্দু ও ইংরেজি লেখার পাশে বাংলা লেখা না থাকায় মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। অনেক সরকারি কর্মচারীও তখন সাহস করে পাকিস্তানি উন্মাদনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানিয়েছিলেন। 

আসিফ আল মাহমুদ 
ফ্রিল্যান্স রাইটার/নবীন কলাম লেখক 
আকবরশাহ মাজার, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম ৪২০২ 
[email protected] 

পর্যটন নগর শ্রীমঙ্গল এখন জটের নগরী

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
পর্যটন নগর শ্রীমঙ্গল এখন জটের নগরী

বাংলাদেশের চা-কন্যা হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গল একসময় ছিল নিরিবিলি ও নয়নাভিরাম পর্যটন নগরী। চা বাগানের সবুজ স্নিগ্ধতা, লাউয়াছড়ার অপার সৌন্দর্য এবং সাতরঙা চায়ের জন্য বিখ্যাত এই শহর আজ ভয়াবহ যানজট ও অব্যবস্থাপনার কবলে। একসময়ের প্রশান্তির শহর শ্রীমঙ্গলের রাস্তাগুলো এখন অনিয়ন্ত্রিত যান চলাচল, অপরিকল্পিত বাজার সম্প্রসারণ, অবৈধ পার্কিং ও অব্যবস্থাপনার কারণে এক বিভীষিকাময় জটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোর প্রবেশপথে গাড়ির দীর্ঘ সারি, হকারদের দখলদারি এবং অপরিকল্পিত স্থাপনার কারণে চলাচল দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল মহাসড়ক, ভানুগাছ রোড, হবিগঞ্জ রোড ও কলেজ রোডে যানজট নিত্যদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে, কিন্তু সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থাপনায় নেই কোনো আধুনিক পরিকল্পনা। প্রয়োজনীয় ট্রাফিক সিগন্যাল, পার্কিং স্পেস এবং পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় পথচারীদের সড়কে নেমে হাঁটতে হচ্ছে, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। একসময় পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলের প্রশান্ত পরিবেশে এসে স্বস্তি পেতেন কিন্তু বর্তমানে যানজট ও বিশৃঙ্খলার কারণে ভ্রমণের আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে। ফলে পর্যটন শিল্পও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় এখানকার যানজট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। তাই শ্রীমঙ্গলের যানজট সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রীমঙ্গল পৌরসভা, সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

প্রজ্ঞা দাস 
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ 
[email protected]

ঈদে জাল টাকা থেকে সাবধান

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৮ পিএম
ঈদে জাল টাকা থেকে সাবধান

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দেশের জাল টাকার কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ঈদের বাজারে জমজমাট বেচাকেনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাল টাকা পরিচালনার জন্য সক্রিয় হয়েছে। রাজধানীসহ সারা দেশে জাল টাকার ছড়াছড়ি। ঈদকে টার্গেট করে নতুন নতুন কৌশল নিয়ে জাল টাকার চক্রগুলো বাজারে এখন ভীষণ সক্রিয়। ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের পাশাপাশি ২০ ও ৫০ টাকার জাল নোটও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকার নোট ঢুকছে। ভারতীয় চক্রের টার্গেট পশুর হাট।

 দেশের বড় বড় পশুর হাটে এসব জাল টাকা ছাড়ার চেষ্টা করছে চক্রের সদস্যরা। তবে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও তৈরি হচ্ছে জাল টাকা। ভারত ছাড়াও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক জাল টাকা আনছে ও তৈরি করছে। প্রতারক চক্রের অনেকেই একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছে পুলিশের কাছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারবারিরা এতই বেপরোয়া যে ফেসবুকে পেজ খুলে জাল টাকা বেচাকেনার প্রচারণা চালাচ্ছে প্রকাশ্যে। দিচ্ছে হোম ডেলিভারি। চক্রটির প্রধান টার্গেট ঈদ। জাল টাকার সঙ্গে জড়িতরা গ্রেপ্তার হলেও তাদের আটকে রাখা সম্ভব হয় না। এদের অধিকাংশই এখন মুক্ত। জাল টাকার কারবারিদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও অনেক আসামির সাজা হয়নি। আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যায়। যে কারণে জাল টাকার ব্যবসা বেড়েই চলছে।

ওসমান গণি 
সাংবাদিক ও কলামিস্ট 
আহ্বায়ক, চান্দিনা প্রেসক্লাব, কুমিল্লা 
[email protected]

মুখস্থ রাজনীতি চর্চা আর কতকাল!

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
মুখস্থ রাজনীতি চর্চা আর কতকাল!

বিখ্যাত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক তরুণদের বেশি করে বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতো আরও অনেক প্রথিতযশা ব্যক্তিই যুবসমাজকে একই উপদেশ দিয়েছেন। আর এই ব্যাপারে দ্বিমত পোষণের কোনো সুযোগ নেই। 

জ্ঞান আহরণে পাঠাভ্যাসের আদৌ কোনো বিকল্প নেই। রুশ সাহিত্য সম্রাট লিও টলস্টয়ের ভাষায়, ‘জীবনে তিনটি জিনিস প্রয়োজন- বই, বই এবং বই’। তার এই কথা থেকে পুস্তক পাঠের গুরুত্ব বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করা যায়। উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘বই কেনা’ প্রবন্ধে আমাদের দেশের মানুষের বই পড়ার প্রতি অনাগ্রহের বিষয়টি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যারা রাজনীতি চর্চা করেন, নিয়মিত বই পড়া তাদের জন্য অপরিহার্য। অতীতে রাজনৈতিক দলগুলোতে নিয়মিত পাঠচক্র আয়োজনের পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চারও রেওয়াজ ছিল। 

বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক কর্মীদের অধিকাংশই দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীদের বক্তৃতা-ভাষণে যেটুকু শোনেন, সেটুকুই তাদের সম্বল, জ্ঞানের পরিধি। অনেকেই মনঃক্ষুণ্ণ হতে পারেন, তবে প্রকৃত সত্যিটা হলো, এখনকার তরুণদের অনেকেই আসলে মুখস্থ রাজনীতি করেন। তাদের অনেকেরই জ্ঞানচর্চার দিকে তেমন মনোযোগ নেই, বরং ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে তারা ছুটছে মরীচিকার পেছনে। জ্ঞান কিংবা বুদ্ধি বিকাশের প্রচেষ্টা না করে তারা দিব্যি ব্যস্ত পদপদবি হাসিল করতে। সব চিন্তাচেতনা বিসর্জন দিয়ে তারা বেপরোয়াভাবে পেশিশক্তি প্রদর্শন করে বেড়াচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জনপ্রত্যাশা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে।

আসিফ আল মাহমুদ 
আকবরশাহ মাজার, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম ৪২০২ 
[email protected] 

 

ঈদের বাজারে পকেটমার থেকে সাবধান

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
ঈদের বাজারে পকেটমার থেকে সাবধান

ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটার ঢল পড়ে রমজান মাসের শুরু থেকেই। ছোট থেকে বড় সবাই যায় বাজার ও মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করতে। বহু মানুষের ভিড়ে লুকিয়ে থাকে পকেটমাররাও। কেনাকাটার জন্য ক্রেতারা বেশ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েই মার্কেট যায়। আর পকেটমাররা যায় মানুষের সেই টাকা চুরি করতে। ঈদের বাজারগুলোতে একটা সাধারণ বিষয় হলো রোজই কারও না কারও টাকা হারায়। আনন্দ কেনার জন্য বাজারে বা মার্কেটে গেলেও ফিরতে হয় মন খারাপ নিয়ে। ভদ্রবেশী চেহারা নিয়ে ঘুরে বেড়ায় পকেটমাররা। দেখে তাদের চেনার উপায় থাকে না। কথার জালে ফাঁসিয়ে আবার কখনো বুঝে ওঠার সুযোগ না দিয়েই চুরি করে নেয় মানুষের টাকা।

 তাই ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বাজার ও মার্কেটগুলোতে গেলে অবশ্যই সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। নিজ নিজ টাকা-পয়সা, মোবাইল ফোন, জিনিসপত্র, বাচ্চা নিজ আয়ত্তে রেখে কেনাকাটা করতে হবে। তাছাড়া ঈদ উপলক্ষে সবাই যেহেতু কেনাকাটা করতে যায়, তাই বাজারগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ভিড় জমে। কেনাকাটা করতে গেলে খুব দামি জিনিসপত্র না পরে যাওয়াই ভালো। কারণ পকেটমারের নজর দামি জিনিসপত্রের ওপরেই বেশি পড়ে। একটু অসাবধানতার কারণে ঈদের আনন্দটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরিবারের সদস্যদের নতুন পোশাক, জিনিসপত্র আর কেনা নাও হতে পারে। তাই সবার উচিত ঈদের বাজার বা মার্কেটগুলোতে সাবধানতা অবলম্বন করা। সেই সঙ্গে সন্দেহজনক কাউকে দেখলে বিশৃঙ্খলা না করে সবাই মিলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

মোসা. তামিম তুলি 
শিক্ষার্থী, রাজশাহী কলেজ 
[email protected]

টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়ম

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়ম

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দেশের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। কিন্তু টিসিবির পণ্য বিতরণব্যবস্থা বর্তমানে এক নীরব সংকটে রূপ নিয়েছে। সরকারনির্ধারিত কম মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর কথা থাকলেও, বাস্তবে এই জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির কালো ছায়ায় জর্জরিত। টিসিবির পণ্য প্রকৃত উপকারভোগীদের হাতে পৌঁছানোর আগেই কিছু অসাধু ডিলার ও মধ্যস্বত্বভোগীর হাতে চলে যাচ্ছে। 

প্রকৃত নিম্ন আয়ের মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েও বঞ্চিত হচ্ছেন, আর কালোবাজারে সেই পণ্য দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি বিতরণকেন্দ্রে অনিয়মিত সরবরাহ, তথ্য গোপন করা এবং স্বজনপ্রীতি বর্তমান সময়ে নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে প্রকৃত নিম্ন আয়ের মানুষ প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদি এই অনিয়মের সংস্কৃতি রোধ করা না যায় তাহলে শুধু গরিব মানুষের হক নষ্ট হবে তাই নয়, সরকারের এই জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি আস্থার সংকটে পড়বে। এই অবস্থায় টিসিবির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

প্রজ্ঞা দাস 
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ 
[email protected]