ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

প্রতিকার ও সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
প্রতিকার ও সচেতনতামূলক দিকনির্দেশনা

বর্তমান সময়ে কিডনি ও পিত্তথলি পাথর বা স্টোন একটি সাধারণ অথচ যন্ত্রণাদায়ক স্বাস্থ্যসমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের বহু মানুষ এ দুই ধরনের পাথরের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ দুটি রোগই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে জটিল রূপ নিতে পারে। তবে সময়মতো কারণ চিহ্নিত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। 

পরিশেষে বলতে চাই, কিডনি পাথর ও পিত্তথলির পাথর- দুটি রোগই যন্ত্রণাদায়ক এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে, যদি সময়মতো প্রতিকার না করা হয়। তবে ভালো খবর হলো, স্বাস্থ্য সচেতনতা, সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এগুলো প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্ভব। আমাদের উচিত সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ ও সতর্ক জীবনযাপনকে গুরুত্ব দেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের যন্ত্রণাদায়ক রোগের সম্মুখীন না হতে হয়।

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
[email protected]

 

বন্যা একটি প্রকৃতিক দুর্যোগ

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১২:২৪ পিএম
বন্যা একটি প্রকৃতিক দুর্যোগ

বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, যেখানে প্রতি বছরই কোনো না কোনো অঞ্চলে বন্যা দেখা যায়। বন্যা হলো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা অতিবৃষ্টি, নদীর পানি বৃদ্ধি, পাহাড়ি ঢল বা সাগরজলের জোয়ারের কারণে ঘটে। এটি মানুষের জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং কৃষি, বাসস্থান, অবকাঠামোসহ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বন্যার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- অতিবৃষ্টি, নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি ধারণক্ষমতা কমে যাওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন। বিশেষ করে হিমালয় থেকে নেমে আসা বরফগলা পানি ও ভারী বর্ষণের ফলে পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে গিয়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়। সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের বন্যায় শুধু সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়।

‎বন্যার ফলে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে, খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব দেখা দেয়, রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। গবাদিপশু, ধান, সবজি, মাছের ঘের ইত্যাদি নষ্ট হয়ে কৃষকদের মারাত্মক ক্ষতি হয়। কিছু প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। যেমন- নদী খনন, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন, জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি ও দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ। বন্যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলেও এর প্রভাব কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা বন্যা-পরিস্থিতি অনেকটাই মোকাবিলা করতে পারি।

‎অনিরুদ্ধ সূত্রধর
‎লালমাই সরকারি কলেজ, কুমিল্লা
[email protected]

রূপকথার দিন ফিরে আসবে

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
রূপকথার দিন ফিরে আসবে

বইয়ের বাজার বেশ খারাপ। মানুষ ভুল করেও যেন বই ধরতেই চান না। কোথায় গেল সেই বইপোকা পাঠক-পাঠিকা? রাতারাতি সব পাল্টে যাবে? ভাবাই যায় না! সবার হাতে স্মার্টফোন। আর জগৎটাও যেন হাতের মুঠোয়। এমন ভাব দেখানো, যেন সবজান্তা বা সর্বজ্ঞানী।

কিন্তু স্মার্টফোনের অন্যতম একটি কুফল হলো, মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কুরুচিকর ভাষা, উসকানিমূলক মন্তব্য অনেক সময় উত্তপ্ত পরিস্থিতির জন্ম দেয়। স্মার্টফোন বা অ্যান্ড্রয়েড ফোনের মধ্যে যা যা আছে সবই যেন অসভ্যতামি। এ জন্য এক্ষেত্রে প্রশাসনের পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। স্মার্টফোনের ব্যবহারও হোক আবার বই পড়ার অভ্যাসও চালু হোক। মেধা বিকশিত হোক। 

লিয়াকত হোসেন খোকন 
রূপনগর, ঢাকা
[email protected]

পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা নাওডোবাবাসী

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৮ পিএম
পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা নাওডোবাবাসী

পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে এখন জাজিরার নাওডোবা প্রান্তে। পদ্মার গর্ভে বিলীন হচ্ছে হাজার হাজার মানুষের জমিজমা, ঘরবাড়ি আর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। মুহূর্তের মধ্যে ঘরবাড়ি পদ্মার করাল গ্রাসে হারিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের যেন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোনো গত্যন্তর নেই। 

প্রথম দিকে পদ্মার নদীশাসন এলাকার উজানের ২ কিলোমিটার জিরো পয়েন্ট এলাকায় সামান্য ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তা মেরামত না করায় এ ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম দিকে পদ্মা সেতু কর্তপক্ষ ২ কিলোমিটার এলাকা ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু তা ছিল অনিয়মে এবং লুটপাটে ভরপুর। নদীর তলদেশ থেকে বাঁধ দেওয়ার কথা থাকলে তা যথাযথভাবে করা হয়নি। তাতেই এখন ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। 

কেউ কেউ ঘর সরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে নিতে পারলেও অনেক গরিব মানুষ টাকার অভাবে ঘর সরিয়ে নিতে পারেনি। চোখের সামনেই তাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন। তাদের আর্তচিৎকারে প্রশাসনের কেউ এগিয়ে এসে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। নদীভাঙন এলাকা প্রভাবশালী দুজন উপদেষ্টা গত জুনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তখন কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ভাঙনের এত তীব্রতা হতো না। তবে এখন ভাঙনকবলিত এলাকায় ডাম্পিং করা হচ্ছে। এখন বর্ষাকাল। দেশের নদ-নদীগুলো বর্ষায় ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো ভাঙনের কাজ শুরু না করে অসময়ে করার কারণে তা মূলত কোনো কাজেই আসছে না। 

হাজি মো. রাসেল ভূঁইয়া
খলিফাবাড়ী, সিপাহীপাড়া, মুন্সীগঞ্জ
[email protected]

কবে থামবে মিডিয়া ট্রায়ালের দৌরাত্ম্য?

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম
কবে থামবে মিডিয়া ট্রায়ালের দৌরাত্ম্য?

বিচারিক কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা ও আস্থাহীনতাই মিডিয়া ট্রায়ালের অন্যতম কারণ। এর দ্বারা নিমেষেই কারও অর্জিত সুনাম ভূলুণ্ঠিত হতে পারে। বিভীষিকাময় হয়ে উঠতে পারে তার সামাজিক সম্পর্কগুলো। স্বাভাবিক জীবনেও ঘটতে পারে ছন্দপতন। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ মিডিয়া ট্রায়ালের প্রবণতা আরও প্রবল করেছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডিসইনফরমেশন, ডিপফেকের মতো অনুষঙ্গ। সুষ্ঠু সাংবাদিকতার ধারা অব্যাহত রাখতে গণমাধ্যমের এ নেতিবাচক চর্চা পরিহার করা উচিত। 

সহজ ভাষায়, মিডিয়া ট্রায়াল হলো সংবাদপত্র ও টেলিভিশন কাভারেজের ফল। এর মাধ্যমে বিচারিক আদালতের রায়ের আগেই কোনো ব্যক্তিকে সম্ভাব্য দোষী হিসেবে আখ্যায়িত করে তার সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়। তখন সেই ব্যক্তির জীবনযাপন করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। এ ধরনের বিচার উচ্ছৃঙ্খল মানসিকতাকে উৎসাহিত করে। গণমাধ্যম নীতির ন্যূনতম মানদণ্ড হলো, বিচার কিংবা দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগে কাউকে কোনো নেতিবাচক অভিধায় অভিযুক্ত করা যাবে না। এমনকি বিচারে প্রমাণিত হওয়ার আগে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে চিহ্নিত করাও মিডিয়া ট্রায়ালের অন্তর্ভুক্ত। 

যদিও বাংলাদেশে এর বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বাস্তবতার নিরিখে বলতে হয় যে, আমাদের দেশে এখনো মিডিয়া ট্রায়ালের পরম্পরা চলমান। এর ফলে ধ্বংস হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কাউকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে গিয়ে গোটা সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে অস্থিরতার বিষবাষ্প। মনে রাখা প্রয়োজন, বিচারিক প্রক্রিয়া ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে আলাদা এবং স্বতন্ত্র। বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রভাব থাকা কোনোভাবেই উচিত নয়। অবশ্য সংবাদমাধ্যমগুলো নানাভাবে প্রভাবিত হওয়ার সুযোগ থাকে।

আসিফ আল মাহমুদ 
আকবরশাহ মাজার, পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম ৪২০২ 
[email protected] 

 

বর্ষার সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম
বর্ষার সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

প্রকৃতিতে এখন বর্ষাকাল। এ ঋতু অনেকের কাছে মনোমুগ্ধকর হলেও শরীরের জন্য বয়ে আনতে পারে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি। বিশেষ করে বর্ষায় বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। আর ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে ব্যক্তিসচেতনতার বিকল্প নেই। বিশেষ করে এ সময় জ্বর হলে কখনো তা নিয়ে অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ, হতে পারে তা ডেঙ্গু জ্বর। শরীরে ডেঙ্গুর ভাইরাস প্রবেশ করলে প্লাটিলেটের সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে ডেঙ্গু রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।

 প্রচণ্ড জ্বর (১০৪ ডিগ্রি), প্রচণ্ড মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, পেশি ও শরীরের বিভিন্ন গাঁটে যন্ত্রণা, বমি বমিভাব, মাথা ঘোরা, বিভিন্ন গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া, শরীরে র‌্যাশ বের হওয়া ইত্যাদি। যাদের একবার ডেঙ্গু সেরে যাওয়ার পর আবারও ডেঙ্গু হয়, তাদের সিভিয়ার ডেঙ্গু হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অর্থাৎ তাদের ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার নিতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে উচ্চ তাপমাত্রা রোধ করতে শরীর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুছে দিতে হবে। শরীর বেশি ঠাণ্ডা মনে হলে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। নিজেকে ও পরিবারের সবাইকে ডেঙ্গু থেকে নিরাপদে রাখতে প্রয়োজন সতর্কতা। বর্ষাকাল যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বার্তা আনে, তেমনি রোগজীবাণুর জন্যও উপযুক্ত সময়। একটু সচেতন থাকলেই নিজেকে ও পরিবারকে ডেঙ্গু থেকে সহজেই সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। এখনই সতর্ক হোন, সুস্থ থাকুন।

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি