শিশুদের আকিকা করা মুস্তাহাব। আকিকা হলো নবজাতকের পক্ষ থেকে পশু জবাই করা। আলেমদের অনেকেই আকিকা করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন। সন্তানের অভিভাবক সক্ষম হলে আকিকা করবেন। আকিকা করা অভিভাবকের ওপর আবশ্যকীয় নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক শিশু তার আকিকার বিনিময়ে বন্ধকস্বরূপ। তাই সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করবে এবং তারা মাথা মুণ্ডন করে নাম রাখবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৯২)
আকিকার বরকতে নবজাতক শিশুর বিপদ দূর হয়। সন্তান ছেলে বা মেয়ে হোক; উভয়ের জন্য আকিকা করতে হবে।
আকিকা কখন করতে হয়?
সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর দৌহিত্রদ্বয় হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর আকিকা সপ্তম দিনে করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৩৪)। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে ১৪তম দিনে বা ২১তম দিনে করা ভালো। তাও সম্ভব না হলে, অন্য যেকোনো দিন আদায় করে নেওয়া যাবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আকিকা সপ্তম দিনে হওয়া উচিত। তা সম্ভব না হলে ১৪তম দিনে এবং তাও সম্ভব না হলে ২১তম দিনে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)
কোন ধরনের পশু দিয়ে আকিকা করতে হয়?
উট, গরু, মহিষ, ভেড়া বা ছাগল দিয়ে আকিকা করতে হবে। কোরবানির পশুর মতো আকিকার পশু সুস্থ, সবল ও ত্রুটিমুক্ত হওয়া ভালো। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের ছেলে সন্তানের জন্য দুটি সমবয়সী ছাগল আর মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করার নির্দেশ করেছেন।’ (তিরমিজি, ১/১৮৩; আবু দাউদ, ১/৪৪)
উম্মে কুরজ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নবজাতক সন্তান ছেলে হলে দুটি ছাগল আর মেয়ে হলে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করবে।’ (তিরমিজি, ১/১৮৩; আবু দাউদ, ২/৪৪)
আকিকার গোশত কারা খেতে পারবেন?
আকিকার গোশত সন্তানের পিতা-মাতা, আত্মীয়স্বজন সবাই খেতে পারবে। (মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৭৬৬৯)। হাদিয়াও দেওয়া যায়। (ফাতহুল বারি, ৯/৫০৭)। গরিবদেরও দান করা যায়। গোশত হাদিয়া দেওয়ার চেয়ে রান্না করে খাওয়ানো উত্তম। নববি (রহ.) বলেন, ‘মুস্তাহাব হলো আকিকার গোশত কাঁচা সদকা করবে না; বরং তা রান্না করে খাওয়াবে। (আল মাজমু, ৮/৪১০)
লেখক: আলেম ও গবেষক