ঢাকা ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২

শরীরে ট্যাটু আঁকার ভয়াবহ পরিণতি

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম
শরীরে ট্যাটু আঁকার ভয়াবহ পরিণতি
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ট্যাটু আঁকা হাতের ছবি

বর্তমানে একশ্রেণির মানুষের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ট্যাটু আঁকা বা উল্কি অঙ্কন। অনেকে না জেনে ফ্যাশন হিসেবে শরীরে ট্যাটু আঁকে। ট্যাটু আঁকা বা উল্ক অঙ্কন সম্পর্কে ইসলামের বিস্তারিত বিধান তুলে ধরা হলো—

আল্লাহ মানুষকে সুন্দর অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম কাঠামো দিয়ে।’ (সুরা তিন, আয়াত: ৪)। তবে একশ্রেণির মানুষ এই সুন্দরকে অসুন্দর করছে। অসুন্দরের চর্চায় হারামে জড়াচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকেই কিছু মানুষ শরীরে ট্যাটু আঁকত। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগেও এর প্রচলন ছিল। একে ইংরেজিতে ট্যাটু, বাংলায় উল্কি এবং আরবিতে ওয়াশম বলে। মানবদেহের ত্বকে সুই বা এ জাতীয় কোনো কিছু দিয়ে ক্ষত করে বাহারি রঙের নকশা করার নামই উল্কি বা ট্যাটু। ট্যাটু সাধারণত স্থায়ী হয় অথবা সহজে মুছে ফেলা যায় না। ইসলামে ট্যাটু করা হারাম। 

আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন সব নারীর ওপর অভিসম্পাত করেছেন, যারা শরীরে উল্কি আঁকে ও অন্যকে দিয়ে উল্কি আঁকায় এবং সৌন্দর্যের জন্য ভ্রুর চুল উপড়িয়ে আল্লাহতায়ালার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে।’ (তিরমিজি, ২৭৮২)
ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘যেসব নারী নকল চুল ব্যবহার করে, যারা অন্য নারীকে নকল চুল এনে দেয় এবং যেসব নারী উল্কি আঁকে ও যাদের জন্য করে; রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন।’ (তিরমিজি, ১৭৫৯)


ট্যাটুতে বিভিন্ন প্রাণীর ছবি আঁকা হয়, যা গুনাহের কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যারা প্রাণীর ছবি আঁকে, তাদের কেয়ামতের দিন শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাদের বলা হবে, তোমরা যা সৃষ্টি করেছিলে তাদের আত্মা ও জীবন দাও।’ (বুখারি, ৪৭৮৩)
শরীরের মধ্যে ট্যাটু বা উল্কি আঁকা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃতির নামান্তর। রাসুলুল্লাহ (সা.) ট্যাটু করতে নিষেধ করেছেন। ট্যাটুর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিসম্পাত করেছেন। 


কৃত্রিম উপায়ে অঙ্গে বিকৃতি সাধন করা গুনাহের কাজ। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতি হয় এমন যেকোনো কাজই ইসলামে নিষেধ। একইভাবে ট্যাটু করতে গিয়ে পর্দার বিধান পুরোপুরি  লঙ্ঘিত হয়, যা শরিয়তের বিধান অনুযায়ী অপরাধের শামিল। যেখানে সর্বদা নারীর অঙ্গ ঢেকে রাখা আবশ্যক, সেখানে একজন নারীর অঙ্গে  ট্যাটু করে মানুষকে দেখিয়ে বেড়ানো মারাত্মক গুনাহের কাজ। এই বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। 


এটি একটি অভিশপ্ত প্রথা, যা প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। শরীরে ট্যাটু বা উল্কি আঁকা বেশির ভাগ ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞের দৃষ্টিতে হারাম। তারা বলেছেন, যেসব উপায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্ট অঙ্গে পরিবর্তন আনা হয়, তার সবই নিষিদ্ধ। আলাদা চুল লাগানো, ভ্রু প্লাক করা, চোখে আলাদা পালক লাগানো ইত্যাদি ইসলাম অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যেসব নারী সৌন্দর্যের জন্য উল্কি অঙ্কন করে এবং যাদের জন্য করে এবং যেসব নারী ভ্রু উৎপাটন করে এবং দাঁত ফাঁকা করে, আল্লাহতায়ালা তাদের অভিসম্পাত করেছেন।’ (বুখারি, ৫৬০৪)

লেখক: শিক্ষক, মারকাজুল কোরআন মাদরাসা, শ্রীপুর

অজুতে প্রতিটি অঙ্গ ৪-৫ বার ধৌত করা যাবে কী?

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
অজুতে প্রতিটি অঙ্গ ৪-৫ বার ধৌত করা যাবে কী?
অজু করার দৃশ্য। সংগৃহীত

প্রশ্ন : এক ব্যক্তি অজুতে প্রতিটি অঙ্গ অন্তত ৪-৫ বার ধৌত করে। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে, এ ছাড়া আমার মন পরিতৃপ্ত হয় না। এভাবে নিয়মিত তিন বারের অধিক ধোয়ার অভ্যাস গড়ার হুকুম কী? এতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো অসুবিধা আছে কি?

উত্তর : অজুর অঙ্গগুলো তিন বার করে ধোয়া সুন্নত। তাই তিন বার ধোয়ারই অভ্যাস করা চাই। তিন বারের অধিক ধোয়ার অভ্যাস করা উচিত নয়। আর তিনের অধিক ধোয়াকে উত্তম মনে করে এর উপর আমল করা গুনাহ। পক্ষান্তরে তিনবার ধোয়ার পরও কোনো স্থানে পানি পৌঁছার ব্যাপারে সন্দেহ হলে সে স্থানটি আবার ধুয়া। তবে শুধু ওয়াসওয়াসার ভিত্তিতে এরূপ করা যাবে না।

[তথ্যসূত্র: সুনানে আবু দাউদ ১/১৮, বাদায়েউস সানায়ে ১/১১৩, শরহুল মুনিয়্যা ২৬, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২, আলবাহরুর রায়েক ১/৪৬]

নামাজের মধ্যে সময় দেখতে ঘড়ির দিকে তাকানো কী হবে?

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
নামাজের মধ্যে সময় দেখতে ঘড়ির দিকে তাকানো কী হবে?
নামাজরত মুসল্লির ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন : আমাদের মসজিদের সামনের দেওয়ালে একটি ডিজিটাল ঘড়ি লাগানো আছে। অনেক সময় যোহরের নামাজ পড়তে এসে সময় না দেখেই সুন্নত নামাজ শুরু করে দেই। জামাত দাঁড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হলে সুন্নত শেষ করতে পারব কি না, তা নিশ্চিত হতে ঘড়ির দিকে তাকাই। আমার প্রশ্ন হলো, নামাজের মধ্যে সময় দেখার জন্য ঘড়ির দিকে তাকালে কি নামাজের কোনো ক্ষতি হয়?


উত্তর : নামাজের মধ্যে সময় দেখার উদ্দেশ্যে ঘড়ির দিকে তাকানো মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। এটি নামাজের খুশুখুযু বা একাগ্রতার পরিপন্থী কাজ। তাই এমনটা করা থেকে বিরত থাকা উচিত। নামাজে আমাদের মন এবং দৃষ্টি শুধুমাত্র আল্লাহর দিকে নিবদ্ধ থাকা উচিত। ঘড়ি বা অন্য কোনো বস্তুর দিকে তাকালে মনোযোগ বিঘ্নিত হয়, যা নামাজের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। যদিও এতে নামাজ পুরোপুরি ভেঙে যায় না, তবে এটি নামাজের পরিপূর্ণতা ও সওয়াব কমিয়ে দেয়।
এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি যে, সুন্নত নামাজ শুরু করার আগে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে শুরু করা উচিত, যাতে জামাত শুরু হওয়ার আগেই তা শেষ করা যায়। যদি মনে হয় সময় কম, তাহলে সুন্নত বাদ দিয়ে সরাসরি ফরজ নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

[তথ্যসূত্র : বুরহানী (২/১৫৯), খুলাসাতুল ফাতাওয়া (১/৯৯), ফাতহুল কাদীর (১/৩৫১), শরহুল মুনইয়া (পৃ. ৪৪৭), আলবাহরুর রায়েক (২/১৪), এবং আদ্দুররুল মুখতার (১/৬৩৪)]

এসব গ্রন্থ অনুযায়ী, ছোটখাটো নড়াচড়া বা দৃষ্টির কারণে নামাজ ভেঙে যায় না, তবে তা নামাজের একাগ্রতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া এড়িয়ে চলা উত্তম।

 

আ দিয়ে মেয়ে শিশুর আধুনিক ও অর্থপূর্ণ নাম—পর্ব ২

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৪০ এএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:১১ পিএম
আ দিয়ে মেয়ে শিশুর আধুনিক ও অর্থপূর্ণ নাম—পর্ব ২
মেয়ে শিশুর ছবি । সংগৃহীত

শিশুর জন্য একটি সুন্দর নাম নির্বাচন করা সব মা-বাবারই স্বপ্ন। নামের মাধ্যমেই শিশুর ব্যক্তিত্ব পরিচয় ফুটে ওঠে। ইসলামিক আধুনিক রুচির সমন্বয়ে '' অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া কিছু চমৎকার নামের তালিকা এখানে দেওয়া হলো, যা আপনার আদরের কন্যার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। প্রতিটি নামের রয়েছে বিশেষ অর্থ, যা আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হবে।

ক্রমিক

নাম

অর্থ

.

আদিবা

শিষ্ট, ভদ্র

.

আদিলা

ন্যায়পরায়ণ

.

আফিফা

পবিত্রা, সচ্চরিত্রা

.

আমেনা

নিরাপদ, নিশ্চিন্ত

.

আমিরা

রাজকন্যা

.

আয়েশা

সচ্ছল (উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রা.-এর নাম)

.

আরুবা

সোহাগিনি

.

আলিফা

বান্ধবী

.

আলিমা

জ্ঞানী

১০.

আলিয়া

উচ্চ

১১.

আসমা

মহত্তর, উচ্চতর

১২.

আসিফা

ঝড়ো বাতাস

১৩.

আসিমা

হেফাজতকারিণী, রাজধানী

১৪.

আসিয়া

চিকিৎসক (ফেরআউনের স্ত্রীর নাম)

১৫.

আহিদা

প্রতিজ্ঞাকারিণী

১৬.

আনিয়া

ঘনিষ্ঠ

১৭.

আতিফা

দয়ালু

১৮.

আতিয়্যা

দান, উপঢৌকন

১৯.

আজওয়া

আলো

২০.

আজিজা

শক্তিশালী, সম্মানিত

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কালিমা তাইয়্যিবা পড়ার পর দুরূদ পড়ার বিধান কী?

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
কালিমা তাইয়্যিবা পড়ার পর দুরূদ পড়ার বিধান কী?
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন : কালিমা তাইয়্যিবা পড়ার পর কি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলা জরুরি? 

উত্তর : কালেমা তাইয়িবা তো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ এতটুকুই। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালেমার অংশ নয়। তাই রাসুলুল্লাহর নামের পর দুরূদ শরিফ পড়তে হয়, এ নিয়ম অনুযায়ী কালেমার পরেও তা পড়া যাবে। তবে কালেমার সাথে একেবারে মিলিয়ে নয়; বরং কালেমার পর ওয়াকফ করে এরপর পড়বে। যেন দরূদ শরিফকে কালেমার অংশ মনে না হয়।

[সূত্র : ফাতাওয়া উসমানী ১/৫৮]

 

খতিব কি খুতবার সময় মুসল্লিদের সতর্ক করতে পারবেন?

প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
খতিব কি খুতবার সময় মুসল্লিদের সতর্ক করতে পারবেন?
মসজিদে জুমার খুতবা দেওয়ার ছবি। সংগৃহীত

যখন খতিব সাহেব খুতবা দেন, তখন যদি তিনি এমন কোনো কাজ দেখেন যা শরিয়ত বিরোধী, যেমন মুসল্লিরা কথা বলছে বা অন্য কোনো বিশৃঙ্খলা করছে, তখন তিনি তাদের সতর্ক করতে পারবেন। খুতবার মাঝখানে মুসল্লিদের চুপ থাকার নির্দেশ দিলে বা তাদের সতর্ক করলে খুতবার কোনো ক্ষতি হবে না। এতে দোষের কিছু নেই, বরং এটা খতিব সাহেবের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তিনি চাইলে এ বিষয়ে তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ফতোয়ার কিতাবসমূহে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা (২/২৫), বাদায়েউস সানায়ে (১/৫৯৫) এবং খুলাসাতুল ফাতাওয়া (১/২০৬)-এর মতো নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোতে এই বিধানের কথা উল্লেখ আছে। তাই খতিব সাহেবের জন্য খুতবার মাঝখানে মুসল্লিদের সতর্ক করা সম্পূর্ণ বৈধ। এটি খুতবার সম্মান এবং পরিবেশ বজায় রাখার জন্য জরুরি।

অতএব, মুসল্লিদের উচিত খুতবার সময় সম্পূর্ণ নীরবতা ও মনোযোগ বজায় রাখা। অন্যদিকে, খতিব সাহেব যদি দেখেন যে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে, তাহলে তিনি পরিস্থিতি অনুযায়ী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।