
বিয়ে মহান আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ এক নেয়ামত। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক। চারিত্রিক আত্মরক্ষার অনন্য হাতিয়ার। আদর্শ পরিবার গঠন, জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং মানসিক প্রশান্তি লাভের প্রধান উপকরণ।
বিয়ের বরকতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এমন এক গভীর বন্ধন ও ভালোবাসা গড়ে ওঠে, সম্পূর্ণরূপে তারা একে অন্যের হয়ে যায়। তাদের মধ্যে এমন এক প্রেম-প্রীতি সৃষ্টি হয়, এখন আর একজন অন্যজন ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারে না। শরিয়তের সঠিক পদ্ধতিতে বিয়ের পর স্বামীর ওপর স্ত্রীর যাবতীয় ভরণ-পোষণ ও ভালো-মন্দ ইত্যাদি দেখাশোনা করা ওয়াজিব হয়ে যায়। আর স্বামীর জন্য স্ত্রীর ধার্যকৃত মোহর আদায় করা ওয়াজিব হয়ে যায়।
স্ত্রীর সম্মান ও স্বামীর সাধ্যানুযায়ী মোহর নির্ধারণ করা সুন্নত। বিয়ের পর স্ত্রীর মোহর অবশ্যই আদায় করতে হবে। মোহর কোনো আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং মোহর স্ত্রীর অধিকার। এই অধিকার থেকে স্ত্রীকে বঞ্চিত করা শরিয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক জুলুম ও অন্যায়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর মুমিনদের মধ্যেকার সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যকার সচ্চরিত্রা নারী (তোমাদের পক্ষে হালাল) যদি তোমরা তাদেরকে বিবাহের হেফাজতে আনার জন্য তাদের মোহর প্রদান কর, (বিবাহ ছাড়া) কেবল ইন্দ্রীয় বাসনা চরিতার্থ করা ইচ্ছা না করো।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৫)
আরেকটা আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘নারীদের খুশি মনে তাদের মোহর দিয়ে দাও, তারা নিজেরা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে তার কিছু অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা আনন্দে, স্বাচ্ছন্দ্যভাবে ভোগ করতে পার।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৪)
মোহরে ফাতেমি
মোহরে ফাতেমি বলা হয়, রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বীয় কন্যা ফাতেমাকে আলি (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহের সময় যে পরিমাণ মোহর নির্ধারণ করেছিলেন। বিবাহের সর্বনিম্ন মোহর দশ দিরহাম। অর্থাৎ দুই তোলা সাড়ে সাত মাশা বা ৩০.৬১৮ গ্রাম রুপা। আর মোহরে ফাতেমির পরিমাণ ৫০০ দিরহাম। অর্থাৎ ১৩১.২৫ তোলা বা ১.৫৩০৯ কিলোগ্রাম রুপা। এক দিরহামের ওজন ৩.০৬১৮ গ্রাম। বর্তমানে প্রতি তোলা রুপার মূল্য ১২০০ টাকা হলে ১০ দিরহামের মূল্য দাঁড়ায় ৩, হাজার ১৫০ টাকা। আর মোহরে ফাতেমির মূল্য হয় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলুম মাদরাসা, মধুপুর