ঢাকা ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফেরেশতাদের স্বপ্নে দেখলে যা হয়

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:২৩ এএম
আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:২২ এএম
ফেরেশতাদের স্বপ্নে দেখলে যা হয়
আরবি ও ইংরেজিতে ‘মালায়িকা’ লেখা ছবি। ইন্টারনেট

শায়খ আবু সাদ (রহ.) বলেন, ফেরেশতাদের স্বপ্নে দেখা—যদি পরিচিত এবং সুসংবাদবাহী ফেরেশতাকে কেউ স্বপ্ন দেখে, তবে যে স্বপ্ন দেখেছে, তার কাছে কোনো আশ্চর্য বিষয় প্রকাশের, অত্যাচারের পর আল্লাহর সাহায্য, মান-সম্মান ও খোশখবরের, অসুস্থতার পর রোগমুক্তির, ভয়-ভীতির পর স্বস্তি ও নিরাপত্তার, অভাব-অনটনের পর সুখভোগের, দুর্ভিক্ষের পর সচ্ছলতার, দুশ্চিন্তার পর নিষ্কৃতির, হজ পালন বা জিহাদে শহিদ হওয়া বোঝায়।


যদি কেউ জিবরাইল-মিকাইল ফেরেশতার সঙ্গে বিদ্বেষ পোষণ করতে বা ঝগড়া করতে দেখে, তা হলে সে এমন কোনো কাজে আছে, যার কারণে যেকোনো মুহূর্তে তার ওপর আল্লাহর শাস্তি আসতে পারে। বুঝতে হবে তার চিন্তাধারা ইহুদিদের চিন্তাধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
 

জিবরাইল (আ.)-এর কাছ থেকে খাদ্যগ্রহণ করতে দেখা, জান্নাতিদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া বুঝায়। তাঁকে দুঃখিত ও চিন্তিত দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার ওপর কঠোরতা এবং শান্তি আসার অর্থ বহন করে।
 

যে ব্যক্তি মিকাইল (আ.)-কে স্বপ্নে দেখতে পায়, সে উভয় জাহানে কামিয়াব হবে যদি সে পরহেজগার হয়। যদি সে পরহেজগার না হয়, তবে তাকে সতর্ক থাকতে হবে। স্বপ্নে কেউ তাঁকে কোনো শহর বা গ্রামে দেখলে, সেখানে প্রচুর বৃষ্টি হবে এবং নিত্যপণ্যের দাম কমবে। যে স্বপ্ন দেখেছে, তার সঙ্গে যদি মিকাইল কথা বলেন বা কিছু দেন, তবে তিনি ধন্য ও সন্তুষ্ট হবেন।

 
স্বপ্নে ইসরাফিল (আ.)-কে চিন্তিত অবস্থায় শিংগা ফুঁক দিতে দেখলে এবং স্বপ্নদ্রষ্টা যদি ধারণা করে যে সে একাই তা শুনেছে। অন্য কেউ শোনেনি, তা হলে স্বপ্নদ্রষ্টা মারা যাবে। স্বপ্নদ্রষ্টা যদি ধারণা করে যে, উক্ত এলাকার সকলেই শিংগার আওয়াজ শুনেছে, তবে সেখানে দেখা দেবে মহামারি।


স্বপ্নে আজরাইল (আ.)-কে আনন্দিত দেখা শহিদি মৃত্যুর ইঙ্গিত। তাঁকে ক্রোধান্বিত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত দেখা তওবা ছাড়াই মারা যাওয়ার লক্ষণ। তাঁকে ধরাশায়ী করতে দেখা এবং সেও তাকে ধরাশায়ী করতে দেখা স্বপ্নদ্রষ্টার মারা যাওয়ার ইশারা।
 

যদি স্বপ্নে কেউ ফেরেশতাদের হাতে ফলের ফলক দেখতে পান, তবে তিনি শহিদ হয়ে এই পৃথিবী থেকে বিদায় নেবেন।

 
যদি স্বপ্নে দেখেন যে, ফেরেশতাদের দল হতে কোনো ফেরেশতা তার বাড়িতে প্রবেশ করেছেন, তবে তাকে সতর্ক থাকতে হবে যে, যেকোনো সময় চোর বাড়িতে ঢুকতে পারে। যদি দেখে যে, কোনো ফেরেশতা তার হাতিয়ার বা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গেছে, তবে তার শক্তি ও অনুগ্রহ চলে যাবে। কখনো এটা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানোর ইঙ্গিত দেয়। যদি কেউ ফেরেশতাদের কোনো এক জায়গায় সমবেত দেখে ভয় পেতে দেখে, তবে সে সেখানকার কলহ ও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে।

 
ফেরেশতাদের যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধরত অবস্থায় দেখা শত্রুদের ওপর বিজয় লাভের লক্ষণ। ফেরেশতাদের তার সামনে রুকু-সেজদা করতে দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার সব কামনা-বাসনা পূরণ হওয়ার লক্ষণ। এতে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে চারদিকে। পক্ষান্তরে, ফেরেশতাকে পরাস্ত করতে দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার সম্মাননার পর অবমাননার কথা বোঝায়। কোনো রুগ্ন ব্যক্তি যদি দেখে যে, এক ফেরেশতা আরেক ফেরেশতার ওপর পড়ছেন, তা হলে বুঝতে হবে তার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে।

 
ফেরেশতাদের যদি স্বাভাবিক অবস্থায় আকাশ থেকে ভূমণ্ডলে নামতে দেখে, তবে এটা হকপন্থিদের বিজয়, ভ্রান্ত গোষ্ঠীর পরাজয় এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরতদের সাহায্যের জানান দেয়। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৪০)

 
কেউ যদি স্বপ্নে দেখে, ফেরেশতারা তাকে অভিশাপ দিচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে, এটা তার দ্বীনী দুর্বলতার লক্ষণ। কেউ যদি স্বপ্নে দেখে, ফেরেশতারা ঝগড়া করছে, তা হলে এটা তার বাড়ি বা আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার আলামত। কেউ যদি স্বপ্নে দেখে, ফেরেশতারা তার মতোই কোনো কাজ করছে, তা হলে বুঝতে হবে, এটা তার পেশার ক্রম-উন্নতির লক্ষণ।

স্বপ্নে কিরামান-কাতিবিনকে দেখা, দুনিয়া-আখিরাতে শান্তি ও আনন্দ পাওয়ার লক্ষণ। স্বপ্নদ্রষ্টা সৎকর্মশীল হলে, ঈমানের ওপর মারা যাবে। অসৎকর্মশীল হলে, তার জন্য ভয়ের কারণ আছে। (সুরা ইনফাতির, আয়াত: ১১-১২)

(স্বপ্নের ব্যাখ্যাবিদ মুহাম্মাদ ইবনে সিরিনের বিখ্যাত বই তাফসিরুল আহলাম বা স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকে সংক্ষেপিত) 

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম
বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত

ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখল বাংলাদেশ। বিশেষত ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ ১৩টি জেলার মানুষ এই বন্যায় অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। 

বন্যার শুরু থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধার, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, শুকনো খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার, আলেম ও মধ্যবিত্ত পরিবারে নগদ অর্থ ও কাপড় দিয়েছে সংস্থাটি। 

জানা যায়, ২২ আগস্ট থেকে বন্যার্তদের সহযোগিতায় কাজ শুরু করে আন-নূর। শুরু থেকেই সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের নিয়ে কাজ করতে থাকেন। পরে আমেনা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয়দের নিয়ে টিম করে সেবা দেন। প্রতিদিনই দুটি টিমে ১০ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবী কাজ করত। এ পর্যন্ত ৩ হাজার বন্যার্ত পরিবারকে বহুমুখী সহযোগিতা করেছে সংস্থাটি। 

বন্যা-পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে আন-নূর। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চূড়ান্ত করে ১০০ নতুন ঘর করে দেবে সংস্থাটি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতও করছেন তারা। যেসব পরিবারের আয়-রোজগারের পথ একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, সেসব পরিবারের ছয় মাসের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা। স্বাবলম্বী করার প্রজেক্ট আছে সংস্থাটির। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান বলেন, ‘মাদরাসার শিক্ষকতার পাশাপাশি সেবামূলক কাজ করছি। আমৃত্যু দেশের অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই। আমরা সবাই মিলে যদি মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, তাহলে এ দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর হবে। এ দেশ হবে প্রকৃতার্থে সোনার বাংলাদেশ।’ 

উল্লেখ্য, করোনাকালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটি মানুষের সেবায় নানামুখী কাজ করছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন, অসহায়দের চিকিৎসা, এতিম ও বিধবাদের সহায়তা, বিবাহ সহায়তাসহ বহুমুখী সেবামূলক কাজ করে আন-নূর। এ ছাড়া দেশের দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে কাজ করে সংস্থাটি।

রায়হান/মিরাজ রহমান 

পরামর্শ করা সুন্নত

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ এএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ এএম
পরামর্শ করা সুন্নত
পরামর্শরত দুই বক্তির ছবি। এআই

রাসুলুল্লাহ (সা.) কাছের লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। তাদের মতামত শুনতেন। উপদেশ গ্রহণ করতেন। কী কী কাজে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘনিষ্ঠজন ও উম্মুল মুমিনিনদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন, কোন কোন প্রেক্ষাপটে তিনি তাদের মতামত শুনেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। হুদাইবিয়ায় তিনি উম্মে সালামা (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। বদর যুদ্ধের দিন তিনি সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। উহুদ যুদ্ধে যাত্রাকালে তিনি সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শে বসেছেন। আয়েশা (রা.)-এর ব্যাপারে ইফকের ঘটনায় তিনি আলি ইবনে আবু তালেব ও উসামা ইবনে জায়েদ (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। গাতফান গোত্রকে মদিনার ফসলের এক-তৃতীয়াংশ প্রদানের ব্যাপারে তিনি সাদ ইবনে উবাদা (রা.) ও সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। পরামর্শ করে করা কাজে কোনো দিন তিনি লজ্জিত হননি। আনাস ইবনে মালেক (রা.) ঠিক সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন, ‘যে ইস্তিখারা করে, সে বঞ্চিত হয় না। যে পরামর্শ চায়, সে লজ্জিত হয় না। আর যে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে, সে নিঃশেষ হয় না।’ (আল মুজামুল আওসাত লিত-তাবরানি, ৬৬২৭) 

পরামর্শদাতার কর্তব্য হচ্ছে নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে পরামর্শ দেওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়, সে আমানতদার।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫১২৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি না জেনে ফতোয়া দেবে, তার গুনাহ মুফতির ওপর বর্তাবে। আর যে ব্যক্তি তার ভাইকে জেনেশুনে কোনো ক্ষতির পরামর্শ দিল, সে যেন তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করল।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৬৫৭) 

পরামর্শ দেওয়া-নেওয়ার কাজে নিষ্ঠা থাকতে হবে উভয় পক্ষ থেকেই। প্রথমজন পরামর্শ চাইবে বিনয়ের সঙ্গে ও পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা নিয়ে। আর দ্বিতীয়জন পরামর্শ দেবে নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও পরামর্শপ্রার্থীর কল্যাণের দিকে লক্ষ রেখে। তা হলে একদিকে যেমন এর সুফল উভয়ে ভোগ করবে, অপরদিকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহর ওপরও আমল হয়ে যাবে।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

দুরুদ শরিফের উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
দুরুদ শরিফের উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত
মসজিদে নববি, মদিনা, সৌদি আরব। ছবি: ইন্টারনেট

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামে দুরুদ পড়া মুমিনের আত্মার খোরাক। দুরুদ মুমিনের আত্মাকে প্রশান্ত করে। দুরুদ পাঠের দ্বারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ নবির প্রতি অনুগ্রহ করেন, তাঁর ফেরেশতারা নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনরা, তোমরাও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো এবং যথাযথ শ্রদ্ধাভরে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

দুরুদে ইবরাহিমের আরবি উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি  মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারকতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

দুরুদে ইবরাহিমের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের নবি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেভাবে বর্ষণ করেছেন ইবরাহিম আ. ও তার পরিজনের প্রতি, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ, আপনি বরকত নাজিল করুন, আমাদের নবি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি যেভাবে আপনি বরকত নাজিল করেছেন ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।

দুরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত
নবির প্রতি দুরুদ পাঠ নবির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক উন্নয়ন করে। পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা বাড়ে। বেশি বেশি দুরুদ পাঠে শাফয়াত পাওয়া যাবে রোজ হাশরে। বিপদ থেকে মুক্তি, দোয়া কবুল হওয়া, গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে দুরুদ পাঠ বেশ সহায়ক। এ ছাড়াও প্রতিবার দরুদ পাঠে আল্লাহ বান্দার ওপর দশটি রহমত নাজিল করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, যে আমার ওপর একবার দরুদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১/১৬৬)

আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দুরুদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা উঁচু হবে। (নাসায়ি, হাদিস: ১/১৪৫)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ পিএম
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ঢেউটিন বিতরণ করেছে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন। ছবি: সংগৃহীত

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করেছে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন।  সংস্থাটি ফেনী ও কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন বিতরণ করেছে। শিক্ষা উপকরণ দিয়েছে ৫০০ শিক্ষার্থীকে। যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যামের আল-খাজরা মারকাজি মসজিদের মুসল্লিরা এ কার্যক্রমে অর্থায়ন করেছেন। 

এর আগে বন্যা শুরুর দিকে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধসহ ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন।

জানা যায়, কুমিল্লার সুধন্যপুর ও আশপাশের এলাকা, ফেনীর রশিদিয়া, ছানুয়া, ছাগলনাইয়া এবং পরশুরামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়।

শায়খে রেঙ্গার নাতি ও জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুর আহমদের তত্ত্বাবধান এবং স্থানীয় উলামায়ে কেরামের সহযোগিতায় পুনর্বাসন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা আব্দুল গফুর ও মৌলা মিয়া প্রমুখ।

জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুর আহমদ বলেন, ‘লন্ডনের আল-খাজরা মারকাজি মসজিদ আমাদেরকে অর্থায়নে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের ব্যবস্থাপনায় আমরা প্রথম ধাপে বন্যার্তদের খাবার ও নগদ অর্থ দিয়েছি। প্রাইমারি ও মাদরাসার ৫০০ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ দিয়েছি। পুনর্বাসনে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। আমরা সবসময় অসহায় মানুষের জন্য কাজ করছি। কাজ করতে চাই।’

উল্লেখ্য, আল্লামা সাইয়িদ হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর খলিফা মাওলানা বদরুল আলম শায়খে রেঙ্গা (রহ.)-এর পরিবারের সদস্যরা শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের দুর্যোগ-দুর্বিপাকে অসহায় মানুষের সহায়তায় পাশে থাকে এ সংস্থা। ২০২২ এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা ও পুনর্বাসনে কাজ করেছে তারা। প্রতি রমজানে অসহায়দের খাবার ও শীতকালে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য সেবামূলক কাজ করে এ সংস্থা।  

রায়হান/মিরাজ রহমান

স্ত্রীর সঙ্গে নম্র আচরণ করা সুন্নত

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ এএম
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
স্ত্রীর সঙ্গে নম্র আচরণ করা সুন্নত
শিল্পীর তুলিকে আঁকা মুসলিম স্বামী-স্ত্রীর ছবি। ফ্রিপিক

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে নিজের পরিবারের কাছে উত্তম। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার পরিবারের কাছে অধিক উত্তম।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৮৯৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনীতে স্ত্রীদের সঙ্গে কোমল আচরণের অনেক ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়। মুসলিমদের উচিত, এসব সুন্নাহ নিয়মিত চর্চা করা। অভ্যাসে পরিণত করা।

স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিটি কোমল আচরণের বিনিময়ে স্বামীর জন্য পুরস্কার বরাদ্দ থাকবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পরিবারের জন্য তুমি যা খরচ করবে সব তোমার জন্য সদকা হিসেবে লেখা হবে; এমনকি স্ত্রীর মুখে তুলে দেওয়া খাবারও।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০৩৯)

পাত্রের যেখানে ঠোঁট লাগিয়ে স্ত্রী খেয়েছেন বা পান করেছেন, স্বেচ্ছায় ঠিক সেখানে ঠোঁট লাগিয়েই খাওয়া সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) এমনটি করেছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি হায়েজ অবস্থায় পানি পান করে ওই পাত্র রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দিতাম। আমার মুখ লাগানো স্থানে তিনি তাঁর মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আমি হায়েজ অবস্থায় হাড়ের টুকরো চুষে তা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দিতাম। তিনি আমার মুখ লাগানো স্থানে তার মুখ লাগাতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৩০০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আদর করে স্ত্রীদের তিনি সংক্ষিপ্ত নামে ডাকতেন। এটিও ছিল তাঁর অন্যতম হৃদ্যতাপূর্ণ সুন্নাহ। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘হে আয়েশ। এই তো ফেরেশতা জিবরাইল তোমাকে সালাম দিচ্ছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৫৫৭)

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ভালোবেসে কখনো কখনো আমার নাম হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২৪৭৪)

এসব সুন্নাহ আমাদের অনুসরণ করা উচিত। স্ত্রীদের প্রতি হৃদ্যতা ও ভালোবাসা প্রকাশে নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা উচিত। তা হলে দুনিয়াতে আমাদের ঘরগুলো হয়ে উঠবে সুখময়, আর আখেরাতে বেড়ে যাবে আমাদের পুরস্কার। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক