
অসুস্থ বা উদ্বিগ্ন অবস্থায় কিংবা কোনো ক্ষতির আশঙ্কায় অথবা শত্রুর হাত থেকে মুক্তির জন্য হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল পড়া হয়। দোয়াটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে ইবরাহিম (আ.) ও প্রিয় নবি মুহাম্মাদ (সা.) সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে এই দোয়া পড়তেন। ইবরাহিম (আ.)-কে যখন অবিশ্বাসী অত্যাচারী শাসক নমরুদ আগুনে নিক্ষেপ করে, তখন তিনি পড়েন ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল’। যার ফলে আল্লাহ তাকে আগুন থেকে রক্ষা করেছিলেন।
সুরা আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াতের অংশ ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, নিমাল মাওলা ওয়া নিমান নাসির।’ বাংলা অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক।’
মুসলিমরা প্রথমবারের মতো জানতে পারে তাদের বদরের যুদ্ধে অংশ নিতে হবে। আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যযাত্রা, মক্কার কুরাইশদের এক হাজার সদস্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে আগমন সব তথ্য মুসলিমরা পাচ্ছিল। মুসলিমরা বদরের ময়দানে যুদ্ধের জন্য উপস্থিত হলেও তাদের তখনো প্রস্তুতি চলছিল। এ অবস্থায় সাহাবিদের মানসিকতা কেমন ছিল, আল্লাহ সে প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তাদেরকে লোকে বলেছিল যে তোমাদের বিরুদ্ধে লোক জমায়েত হয়েছে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো। তখন এ তাদের বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছিল আর তারা বলেছিল ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনিই কত ভালো কর্মবিধায়ক।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) মুশরিকদের আক্রমণের কথা শুনে হামরাউল আসাদ নামক জায়গায় দোয়াটি পাঠ করেন। (বুখারি, হাদিস: ৪৫৬৩)
এটি পড়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হবে। যেকোনো অন্যায়-অত্যাচার-অবিচারের শিকার হলে অথবা অন্যায়ভাবে কারাবন্দি থাকলে নিচে উল্লিখিত আয়াতটি বেশি বেশি পড়া প্রয়োজন। আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, কিয়ামতের বর্ণনা শুনে সাহাবারা ভীত হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়তে বলেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৪৩১)
দোয়াটির আরবি—
حسبُنا اللَّهُ ونعمَ الوَكيلُ على اللَّهِ توَكَّلنا
বাংলা উচ্চারণ: হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল, আলাল্লাহি তাওয়াক্কালনা।
বাংলা অর্থ: মহান আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধানকারী। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম।
লেখক: আলেম ও অনুবাদক