ঢাকা ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অতিথির সেবা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
অতিথির সেবা করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত অতিথি আপ্যায়নের ছবি

মেহমানদারি মানুষের মধ্যে সদ্ভাব তৈরি করে। সম্পর্কের বাঁধন দৃঢ় করে। সামাজিক বন্ধন ও সৌহার্দ উন্নত করে। মুসলমানদের জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.) প্রতিদিন মেহমানদারি করতেন। এটা ছিল তাঁর আদর্শ। কথিত আছে, তিনি মেহমান ছাড়া খুব সহজে খাবার গ্রহণ করতেন না। আল্লাহ বলেন, ‘আমার ফেরেশতারা (পুত্রসন্তানের) সুসংবাদ নিয়ে ইবরাহিমের কাছে এলো। তারা বলল, ‘সালাম’। সেও বলল, ‘সালাম’। সে অবিলম্বে ভুনা গরুর গোশত নিয়ে এলো।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ৬৯)

মেহমানকে স্বাগত জানানো : মেহমানকে স্বাগত জানানো ও তার আগমনে খুশি প্রকাশ করা মেজবানের দায়িত্ব। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে কোনো মেহমান কিংবা প্রতিনিধি দল এলে তিনি স্বাগত জানাতেন। ‘মারহাবা’ বলতেন। খুশি প্রকাশ করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবি (সা.)-এর কাছে এলে তিনি বললেন, এই প্রতিনিধি দলের প্রতি ‘মারহাবা’, যারা লাঞ্ছিত ও লজ্জিত হয়ে আসেনি। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা রাবিয়া গোত্রের লোক। আমাদের ও আপনার মাঝে মুজার গোত্র অবস্থান করছে। এ জন্য আমরা হারাম মাস ছাড়া আপনার খেদমতে পৌঁছতে পারি না। সুতরাং আপনি আমাদের এমন কিছু চূড়ান্ত নিয়ম-নীতি বলে দেন, যা অনুসরণ করে আমরা জান্নাতে যেতে পারি এবং আমাদের পেছনে যারা আছে তাদের পথ দেখাতে পারি। 
তিনি বলেন, আমি চারটি আদেশ ও চারটি নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি। তোমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে, জাকাত দেবে, রমজান মাসের রোজা রাখবে এবং গনিমতের সম্পদের পঞ্চমাংশ দান করবে। আর কদুর খোল, সবুজ রঙ করা কলস, খেজুর মূলে এবং আলকাতরা রাঙানো পাত্রে পান করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১৭৬)

অতিথিসেবা মুমিনের বৈশিষ্ট্য : ঘরে মেহমান এলে তাকে হাসিমুখে সাদরে আমন্ত্রণ জানানো মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মুমিন তার আগমনে শুভেচ্ছা বিনিময় করবে। খুশির কথা বলবে। সদাচরণ করবে। ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসের ওপর ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের প্রতি সদাচরণ করে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৭)

অতিথিসেবার নিয়ম : মেহমানের সম্মান করা ইসলামের বিধান। মুহাম্মাদ  (সা.)-এর শিক্ষা। একদিন একরাত মেহমানের জন্য উত্তম ব্যবস্থাপনা করা ওয়াজিব। তিনদিন তিনরাত সাধারণ ব্যবস্থাপনা করা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মেহমানের সম্মান একদিন ও একরাত। আর সাধারণ মেহমানদারি তিনদিন ও তিনরাত। এরপরে (তা হবে) সদকা। মেজবানকে কষ্ট দিয়ে তার কাছে মেহমানের অবস্থান করা বৈধ নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১৩৫)

মেহমানের খাতির করা : সামর্থ্য অনুযায়ী মেহমানের হক আদায় করা মেজবানের কর্তব্য। এক্ষেত্রে মুহাম্মাদ (সা.)-এর দিকনির্দেশনা সম্পর্কে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। উকবা ইবনে আমির (রা.) বলেন, ‘একবার আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমাদের কোনো জায়গায় পাঠালে এমন জাতির কাছে গিয়ে উপস্থিত হই, যারা আমাদের মেহমানদারি করে না। এ ব্যাপারে আপনার হুকুম কী? তিনি বলেন, যদি তোমরা কোনো জাতির কাছে উপস্থিত হও, আর তারা মেহমানদারির জন্য উপযুক্ত যত্ন নেয়, তবে তোমরা তা গ্রহণ করবে। আর যদি তারা না করে, তা হলে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের থেকে মেহমানের হক আদায় করে নেবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১৩৭)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম
বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত

ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখল বাংলাদেশ। বিশেষত ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ ১৩টি জেলার মানুষ এই বন্যায় অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। 

বন্যার শুরু থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধার, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, শুকনো খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার, আলেম ও মধ্যবিত্ত পরিবারে নগদ অর্থ ও কাপড় দিয়েছে সংস্থাটি। 

জানা যায়, ২২ আগস্ট থেকে বন্যার্তদের সহযোগিতায় কাজ শুরু করে আন-নূর। শুরু থেকেই সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের নিয়ে কাজ করতে থাকেন। পরে আমেনা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয়দের নিয়ে টিম করে সেবা দেন। প্রতিদিনই দুটি টিমে ১০ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবী কাজ করত। এ পর্যন্ত ৩ হাজার বন্যার্ত পরিবারকে বহুমুখী সহযোগিতা করেছে সংস্থাটি। 

বন্যা-পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে আন-নূর। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চূড়ান্ত করে ১০০ নতুন ঘর করে দেবে সংস্থাটি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতও করছেন তারা। যেসব পরিবারের আয়-রোজগারের পথ একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, সেসব পরিবারের ছয় মাসের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা। স্বাবলম্বী করার প্রজেক্ট আছে সংস্থাটির। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান বলেন, ‘মাদরাসার শিক্ষকতার পাশাপাশি সেবামূলক কাজ করছি। আমৃত্যু দেশের অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই। আমরা সবাই মিলে যদি মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, তাহলে এ দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর হবে। এ দেশ হবে প্রকৃতার্থে সোনার বাংলাদেশ।’ 

উল্লেখ্য, করোনাকালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটি মানুষের সেবায় নানামুখী কাজ করছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন, অসহায়দের চিকিৎসা, এতিম ও বিধবাদের সহায়তা, বিবাহ সহায়তাসহ বহুমুখী সেবামূলক কাজ করে আন-নূর। এ ছাড়া দেশের দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে কাজ করে সংস্থাটি।

রায়হান/মিরাজ রহমান 

পরামর্শ করা সুন্নত

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ এএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ এএম
পরামর্শ করা সুন্নত
পরামর্শরত দুই বক্তির ছবি। এআই

রাসুলুল্লাহ (সা.) কাছের লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। তাদের মতামত শুনতেন। উপদেশ গ্রহণ করতেন। কী কী কাজে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘনিষ্ঠজন ও উম্মুল মুমিনিনদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন, কোন কোন প্রেক্ষাপটে তিনি তাদের মতামত শুনেছেন তা গুনে শেষ করা যাবে না। হুদাইবিয়ায় তিনি উম্মে সালামা (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। বদর যুদ্ধের দিন তিনি সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। উহুদ যুদ্ধে যাত্রাকালে তিনি সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শে বসেছেন। আয়েশা (রা.)-এর ব্যাপারে ইফকের ঘটনায় তিনি আলি ইবনে আবু তালেব ও উসামা ইবনে জায়েদ (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। গাতফান গোত্রকে মদিনার ফসলের এক-তৃতীয়াংশ প্রদানের ব্যাপারে তিনি সাদ ইবনে উবাদা (রা.) ও সাদ ইবনে মুয়াজ (রা.)-এর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। পরামর্শ করে করা কাজে কোনো দিন তিনি লজ্জিত হননি। আনাস ইবনে মালেক (রা.) ঠিক সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন, ‘যে ইস্তিখারা করে, সে বঞ্চিত হয় না। যে পরামর্শ চায়, সে লজ্জিত হয় না। আর যে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে, সে নিঃশেষ হয় না।’ (আল মুজামুল আওসাত লিত-তাবরানি, ৬৬২৭) 

পরামর্শদাতার কর্তব্য হচ্ছে নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে পরামর্শ দেওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়, সে আমানতদার।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫১২৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি না জেনে ফতোয়া দেবে, তার গুনাহ মুফতির ওপর বর্তাবে। আর যে ব্যক্তি তার ভাইকে জেনেশুনে কোনো ক্ষতির পরামর্শ দিল, সে যেন তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করল।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৬৫৭) 

পরামর্শ দেওয়া-নেওয়ার কাজে নিষ্ঠা থাকতে হবে উভয় পক্ষ থেকেই। প্রথমজন পরামর্শ চাইবে বিনয়ের সঙ্গে ও পরামর্শ গ্রহণ করার মানসিকতা নিয়ে। আর দ্বিতীয়জন পরামর্শ দেবে নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও পরামর্শপ্রার্থীর কল্যাণের দিকে লক্ষ রেখে। তা হলে একদিকে যেমন এর সুফল উভয়ে ভোগ করবে, অপরদিকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহর ওপরও আমল হয়ে যাবে।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

দুর্গতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম
দুর্গতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী
বন্যাদুর্গত মানুষদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ দিচ্ছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী। ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। নিঃস্ব হাজারো পরিবার। বন্যার পানি কমে গেলেও মানুষের জীবন ও জনপদে দেখা দিচ্ছে নিত্যনতুন ক্ষত। পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে সব জায়গায়। পুনর্বাসনের প্রয়োজন পড়ছে বহু মানুষের। জীবন বাঁচানোর উপকরণের পাশাপাশি স্বাবলম্বী করার প্রয়োজনও দেখা দিয়েছে হাজারো মানুষের। এসব দুর্গত মানুষের আর্থিক সাহায্যে এগিয়ে এসেছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী।

শুরু থেকেই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী। শুরুর দিনগুলোয় দুর্গত মানুষকে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ দিয়েছেন। সেসময় একদল স্বেচ্ছাসেবী টাকা সংগ্রহ করেছেন মোমেনশাহীর স্থানীয় এলাকায়, আরেকদল কাজ করেছেন ফেনীর দাগনভূঞা ও মহিপালের বিভিন্ন এলাকায়। আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করেছেন। মানুষের কাছে গিয়ে সহায়তা দিয়ে এসেছেন। এ পর্যন্ত সংস্থাটি প্রায় ২ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন। 

জানা যায়, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। ১৮টি টিমে প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন বন্যাদুর্গত এলাকায়। তারা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি রান্না করা খাবার দিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়েছেন। পানি কমতে শুরু করলে বন্যার্তদের জন্য আয়োজন করেছেন বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার। ফুলগাজীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। দিয়েছেন বিনা মূল্যে দরকারি ওষুধ। অসহায়দের নগদ অর্থও দিয়েছেন সেসময়। কারও জন্য করেছেন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। মাদরাসাছাত্রদের শিক্ষা উপকরণ দিয়েছেন। 

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আমীর ইবনে আহমাদ বলেন, ‘বন্যার শুরুর দিকে আমরা আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করি। শুরুতে শুকনো খাবার দিই। পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বা চাল, ডাল ইত্যাদি দিই। আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়েছি। পুনর্বাসনে কাজ করেছি। প্রায় ২ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে মোমেনশাহী আলেমদের নেতৃত্বাধীন এ সংগঠন। আমাদের বেশির ভাগ সহায়তা ও ত্রাণ কাজগুলো দুর্গম এলাকায় করা হয়েছে। অসহায় মাদরাসাছাত্রদের সহযোগিতা, মানুষের জন্য পুনর্বাসন করব ও বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার চেষ্টা করব।’ 

উল্লেখ্য, ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী ১৯৯৩ সালের ১২ আগস্টে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই সংগঠনটি প্রাথমিক দ্বীনি শিক্ষার প্রচার-প্রসার, সিরাত মাহফিল, অসহায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অনৈসলামিক কাজের মোকাবিলা করে আসছে। মোমেনশাহীর সব আলেম ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। দেশব্যাপী কাজ করছে সংগঠনটি। দুর্যোগ-দুর্বিপাকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

দুরুদ শরিফের উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
দুরুদ শরিফের উচ্চারণ, অর্থ ও ফজিলত
মসজিদে নববি, মদিনা, সৌদি আরব। ছবি: ইন্টারনেট

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নামে দুরুদ পড়া মুমিনের আত্মার খোরাক। দুরুদ মুমিনের আত্মাকে প্রশান্ত করে। দুরুদ পাঠের দ্বারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ নবির প্রতি অনুগ্রহ করেন, তাঁর ফেরেশতারা নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনরা, তোমরাও নবির জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো এবং যথাযথ শ্রদ্ধাভরে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

দুরুদে ইবরাহিমের আরবি উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি  মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারকতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

দুরুদে ইবরাহিমের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আপনি আমাদের নবি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেভাবে বর্ষণ করেছেন ইবরাহিম আ. ও তার পরিজনের প্রতি, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ, আপনি বরকত নাজিল করুন, আমাদের নবি মুহাম্মাদ (সা.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি যেভাবে আপনি বরকত নাজিল করেছেন ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পরিজনের প্রতি, নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।

দুরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত
নবির প্রতি দুরুদ পাঠ নবির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক উন্নয়ন করে। পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা বাড়ে। বেশি বেশি দুরুদ পাঠে শাফয়াত পাওয়া যাবে রোজ হাশরে। বিপদ থেকে মুক্তি, দোয়া কবুল হওয়া, গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতে দুরুদ পাঠ বেশ সহায়ক। এ ছাড়াও প্রতিবার দরুদ পাঠে আল্লাহ বান্দার ওপর দশটি রহমত নাজিল করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, যে আমার ওপর একবার দরুদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১/১৬৬)

আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দুরুদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা উঁচু হবে। (নাসায়ি, হাদিস: ১/১৪৫)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১২ পিএম
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ঢেউটিন বিতরণ করেছে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন। ছবি: সংগৃহীত

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করেছে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন।  সংস্থাটি ফেনী ও কুমিল্লায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন বিতরণ করেছে। শিক্ষা উপকরণ দিয়েছে ৫০০ শিক্ষার্থীকে। যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যামের আল-খাজরা মারকাজি মসজিদের মুসল্লিরা এ কার্যক্রমে অর্থায়ন করেছেন। 

এর আগে বন্যা শুরুর দিকে বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধসহ ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন।

জানা যায়, কুমিল্লার সুধন্যপুর ও আশপাশের এলাকা, ফেনীর রশিদিয়া, ছানুয়া, ছাগলনাইয়া এবং পরশুরামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়।

শায়খে রেঙ্গার নাতি ও জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুর আহমদের তত্ত্বাবধান এবং স্থানীয় উলামায়ে কেরামের সহযোগিতায় পুনর্বাসন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা আব্দুল গফুর ও মৌলা মিয়া প্রমুখ।

জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার সিনিয়র শিক্ষক মঞ্জুর আহমদ বলেন, ‘লন্ডনের আল-খাজরা মারকাজি মসজিদ আমাদেরকে অর্থায়নে শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের ব্যবস্থাপনায় আমরা প্রথম ধাপে বন্যার্তদের খাবার ও নগদ অর্থ দিয়েছি। প্রাইমারি ও মাদরাসার ৫০০ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ দিয়েছি। পুনর্বাসনে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। আমরা সবসময় অসহায় মানুষের জন্য কাজ করছি। কাজ করতে চাই।’

উল্লেখ্য, আল্লামা সাইয়িদ হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর খলিফা মাওলানা বদরুল আলম শায়খে রেঙ্গা (রহ.)-এর পরিবারের সদস্যরা শায়খে রেঙ্গা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের দুর্যোগ-দুর্বিপাকে অসহায় মানুষের সহায়তায় পাশে থাকে এ সংস্থা। ২০২২ এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা ও পুনর্বাসনে কাজ করেছে তারা। প্রতি রমজানে অসহায়দের খাবার ও শীতকালে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য সেবামূলক কাজ করে এ সংস্থা।  

রায়হান/মিরাজ রহমান