শায়খ আবু সাদ (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি স্বপ্নে একবার বা দুইবার আজান-ইকামত দিতে এবং ফরজ নামাজ আদায় করতে দেখবে, তার হজ ও ওমরা করার সৌভাগ্য হবে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে তুমি হজের ঘোষণা দাও।’ (সুরা হজ, আয়াত: ২৭)
আজানে কোনো কিছু বাড়িয়ে বা কমিয়ে দিতে, কিংবা কোনো শব্দ পরিবর্তন করে দিতে দেখলে, সে বাড়ানো-কমানো হিসেবে মানুষের ওপর অত্যাচার করবে। যদি কেউ রাজপথে আজান দিতে দেখে আর লোকটি যদি সৎ হয়, তা হলে সে মানুষকে সৎ কাজে আদেশ দেবে; অসৎ কাজে নিষেধ করবে। পক্ষান্তরে, অসৎ হলে তাকে হত্যা করা হবে। দেয়ালে দাঁড়িয়ে আজান দিতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা কোনো ব্যক্তিকে সন্ধির আহ্বান জানাবে। ঘরের ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে আজান দিতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টার স্ত্রী মারা যাবে।
পবিত্র কাবার ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে আজান দিতে দেখলে, তার দ্বারা কোনো বেদয়াতি কাজ প্রকাশ পাবে। কাবার ভেতরে আজান দিতে দেখা কোনো প্রশংসনীয় কাজ নয়। প্রতিবেশীর ছাদে উঠে আজান দিতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা খিয়ানত করবে তার প্রতিবেশীর স্ত্রী বা পরিবারের সঙ্গে। যদি কেউ কোনো দলে আজান দিতে দেখে, আর লোকেরা যদি তার আজানের উত্তর না দেয়, তা হলে বুঝতে হবে, সে কোনো জালেম সম্প্রদায়ের মধ্যে বসবাস করছে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘উভয়ের মধ্যে ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে যে, জালিমদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ৪৪)
আজান-ইকামত দিতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা সুন্নত জীবিত করবে। বেদয়াত ধ্বংস করবে। কোনো বাচ্চাকে আজান দিতে দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টার মাতাপিতার প্রতি যে মিথ্যা অপবাদ রটানো হয়েছিল, তা থেকে অব্যাহতির আলামত।
ইমাম ইবনে সিরিন (রহ.) বলেন, আজান ঘনিষ্ঠ লোকের বিচ্ছেদের আলামত। আল্লাহ বলেন, ‘আর মহান হজের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে লোকদের প্রতি ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ৩)
কাফেলায় আজান দিতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা চুরি করবে। আল্লাহ বলেন, ‘হে কাফেলার লোকজন, তোমরা অবশ্যই চুরি করেছ।’ (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৭০)
দানিয়াল সগির বলেন, স্বপ্নে আজান-ইকামত দিতে এবং নামাজ পড়তে দেখলে বুঝতে হবে, তার আমল বা কাজকর্ম পূর্ণ হয়েছে। এটা তার মৃত্যুর আলামত। স্বপ্নে কেউ বাজারে আজান শুনলে বুঝতে হবে, ওই বাজারের কারও মৃত্যু হবে। যদি কেউ আজান শুনতে দেখে কিন্তু এটা সে অপছন্দ করে, তা হলে বুঝতে হবে- সে কোনো খারাপ কাজের দিকে মানুষকে আহ্বান করবে।
শায়খ আবু সাদ (রহ.) বলেন, স্বপ্নে আজান-ইকামত দেখার ব্যাপারে মূলনীতি হলো, সঠিক স্থানে যোগ্য লোককে আজান দিতে দেখলে প্রশংসনীয় হিসেবে বিবেচিত হবে। পক্ষান্তরে, অযোগ্য লোককে অনুপযুক্ত স্থানে আজান দিতে দেখলে বিবেচিত হবে অপছন্দনীয় হিসেবে। সুতরাং দুর্গন্ধযুক্ত স্থানে আজান দিতে দেখলে সে কোনো বোকাকে আপসের জন্য ডাকবে, কিন্তু সে এটা গ্রহণ করবে না। ঘরে আজান দিতে দেখলে সে স্ত্রীকে মীমাংসার দিকে আহ্বান করবে।
(স্বপ্নের ব্যাখ্যাবিদ মুহাম্মাদ ইবনে সিরিনের বিখ্যাত বই তাফসিরুল আহলাম বা স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকে সংক্ষেপিত)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক