ঢাকা ৩০ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বপ্নে নামাজ ও নামাজের রুকন দেখার ব্যাখ্যা

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম
স্বপ্নে নামাজ ও নামাজের রুকন দেখার ব্যাখ্যা
সিজদারত মুসল্লির ছবি। ইন্টারনেট

শায়খ আবু সাদ (রহ.) বলেন, নামাজ স্বপ্নে দেখার ব্যাপারে মূলনীতি হলো, এটা দুনিয়া-আখেরাতের বিবেচনায় উত্তম। নামাজ স্বপ্নে দেখা বেলায়েতের পদমর্যাদা লাভ, ঋণ পরিশোধ, আমানত আদায় বা আল্লাহতায়ালার ফরজসমূহ থেকে কোনো ফরজ আদায় করার আলামত। তিন ধরনের হতে পারে নামাজ আদায়ের স্বপ্ন। যথা— ফরজ, সুন্নত ও নফল।

ফরজ, সুন্নত ও নফল
ফরজ নামাজ আদায় করতে দেখলে তার ফলাফল সেটাই হবে, যা আগে বর্ণনা করা হয়েছে এবং স্বপ্নদ্রষ্টার হজ করার সৌভাগ্য হবে। সে অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকবে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ মন্দ এবং অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫) 

সুন্নত নামাজ আদায় করতে দেখা স্বপ্নদ্রষ্টার পবিত্রতা, বিপদে ধৈর্যধারণ এবং সুনাম ছড়িয়ে পড়ার আলামত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ২১) 

সুন্নত নামাজ আল্লাহতায়ালার বান্দা ও সৃষ্টিকুলের প্রতি দয়া ও মমতা এবং অধীনস্থ ও পরিবার-পরিজনের প্রতি সদ্ভাব ও সম্মান প্রদর্শন এবং উপরস্থ লোকদের পক্ষ থেকেও তার প্রতি সদ্ব্যবহারের কথা জানান দিয়ে যায়। সুন্নত নামাজ স্বপ্নে দেখা পরিবার-পরিজন এবং অধীনস্থদের ব্যয়ভার বহন এবং বন্ধু-বান্ধবের প্রয়োজনে আপ্রাণ চেষ্টারও আলামত। এসবের কারণে সে হবে সম্মানের অধিকারী। নফল নামাজ স্বপ্নে দেখলে দুশ্চিন্তা দূর হবে। আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

জোহর: মেঘমুক্ত আকাশ থাকাবস্থায় জোহরের ফরজ পড়তে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা যেকোনো কাজে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে। দিনের উজ্জ্বলতা হিসেবে এটা তার সম্মান বাড়িয়ে দেবে। দিন মেঘাচ্ছন্ন থাকলে দুশ্চিন্তা দেখা দেবে।

আসর: আসরের ফরজ পড়তে দেখলে বুঝতে হবে যে কাজে স্বপ্নদ্রষ্টা নিয়োজিত আছে, সেই কাজের খুব সামান্যই বাকি আছে। আসরের সময় জোহরের নামাজ পড়তে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা তার ঋণ পরিশোধ করবে। যদি দেখে দুটি নামাজের একটি ছুটে গেছে, তা হলে সে অর্ধেক ঋণ বা মোহর আদায় করবে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যা তোমরা নির্ধারিত করেছ, তার অর্ধেক আদায় করতে হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৩৭) 

মাগরিব: মাগরিবের ফরজ পড়তে দেখলে পরিবারের যে দায়-দায়িত্ব তার ওপর অর্পিত আছে, তা সঠিকভাবে আদায় করবে।

এশা: এশার ফরজ পড়তে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা পরিবার-পরিজনের সঙ্গে এমন আচরণ করবে, যাতে তাদের মন আনন্দিত হবে এবং অন্তর তৃপ্ত হবে।

ফজর: ফজরের ফরজ নামাজ পড়তে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা এমন কোনো কাজ শুরু করবে, যার মাধ্যমে স্বপ্নদ্রষ্টা এবং তার পরিবারের জীবিকার বন্দোবস্ত হবে। জোহর, আসর বা এশার নামাজ দুই রাকাত পড়তে দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টা সফর করবে। একই স্বপ্নই কোনো নারী দেখলে ওই দিন হতেই তার হায়েজ শুরু হবে।

(স্বপ্নের ব্যাখ্যাবিদ মুহাম্মাদ ইবনে সিরিনের বিখ্যাত বই তাফসিরুল আহলাম বা স্বপ্নের ব্যাখ্যা থেকে সংক্ষেপিত) 


লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

সমস্যা সমাধানের দুই উপায়

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ এএম
সমস্যা সমাধানের দুই উপায়
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত মোনাজাতরত মুসল্লির ছবি

জীবনের বাঁকে বাঁকে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। নানা বিপদ-আপদ ও দুশ্চিন্তা আমাদের গ্রাস করে। আমরা তখন হতাশ হয়ে পড়ি। করণীয় ঠিক করতে পারি না। এটা আমাদের যেমন হয়, মানুষ হিসেবে দুনিয়ার জীবনে নবি-রাসুলদেরও হতো। কিন্তু তারা আমাদের মতো হতাশ হতেন না। আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করতেন। আল্লাহর সাহায্য কামনা করতেন। এই আশ্রয় গ্রহণ এবং সাহায্য কামনার দুটি পদ্ধতি পবিত্র কোরআন আমাদের জানাচ্ছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে  সাহায্য কামনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩) 

ধৈর্য ধারণ করা: বিপদ আসলে ধৈর্য ধরতেই হয়। কেউ স্বেচ্ছায় ধৈর্য ধরে, কেউ বাধ্য হয়ে। ধৈর্য ধরা ছাড়া মানুষের উপায় থাকে না। হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, একজন সাধারণ মানুষের ধৈর্য আর মুমিনের ধৈর্য এক নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের ব্যাপারটি আশ্চর্যজনক! তার প্রতিটি বিষয়ই কল্যাণকর। এ মর্যাদা মুমিন ছাড়া আর কারও জন্য নয়। যদি সে সুখ-শান্তিতে থাকে, তাহলে কৃতজ্ঞতা আদায় করে; ফলে সেটা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি সে বিপদাক্রান্ত হয়, তখন সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে সেটাও তার জন্য কল্যাণকর হয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৯৯৯)। এই হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি, মুমিনের জীবনে বিপদ এলেও লাভ। মুমিন ধৈর্য ধরে আখেরাতের সম্বল অর্জন করে নেয়। 

নামাজ আদায় করা: সমস্যা সমাধানে সাহায্য চাওয়ার দ্বিতীয় মাধ্যম নামাজ। এটা সব নবি-রাসুলের আমল ছিল। তাঁরা সমস্যায় পড়লে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নবিরা বিচলিত হলেই, সমস্যায় পড়লেই নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৮৯৩৭)। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও এমন করতেন। হুজাইফা (রা.) বলেন, ‘কোনো বিষয় নবিজিকে চিন্তিত করলেই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ১৩১৯) 
বিপদে পড়লে নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাওয়ার কথা কোরআনে আছে। সমস্যায় পড়লে কী করতে হবে এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা হলো, ‘কেউ কোনো সমস্যায় পতিত হলে সে যেন খুব ভালোভাবে অজু করে, পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে অন্যান্য নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৪৭৮) 
 

লেখক: শিক্ষক , মাদরাসাতুল হেরা, মিরপুর, ঢাকা

হতাশা থেকে মুক্তির আমল

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
হতাশা থেকে মুক্তির আমল
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত হতাশাগ্রস্ত তরুণের ছবি

স্বভাবতই মানুষ মানসিকভাবে দুর্বলচিত্তের মনের; অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। হতাশা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। মুমিনদের উদ্দেশে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হতাশ হয়ো না, অবশ্যই আল্লাহতায়ালা তোমাদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা তওবা, আয়াত: ৪০)। জীবনে হতাশা পেয়ে বসলে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হতে হবে। তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। হতাশা থেকে বেঁচে থাকার কয়েকটি আমল এখানে তুলে ধরা হলো

ধৈর্য ধারণ করা: হতাশা শয়তানের চক্রান্ত ও ফাঁদ। হতাশা আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। হতাশা মুমিনকে আল্লাহর রহমতের কথা ভুলিয়ে রাখতে চায়। হতাশা থেকে বাঁচার জন্য মুমিনদের ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা মাঝে মধ্যে বিপদ-আপদ দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন। যারা আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস রেখে ধৈর্য ধারণ করেন, তিনি তাদের সফলতা দান করেন। আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমাদের ভয় ও ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি (এসবের) কোনো কিছুর দ্বারা নিশ্চয়ই পরীক্ষা করব, ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ প্রদান করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)

অল্পে তুষ্ট থাকা: অল্পে তুষ্ট থাকা আমাদের হতাশা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আমরা আল্লাহতায়ালার লাখো নেয়ামতে ডুবে আছি। আমাদের উচিত, নেয়ামতগুলো স্মরণ করে শুকরিয়া আদায় করা। প্রাচুর্যতাই সচ্ছলতা নয়; আবার সম্পদের স্বল্পতাই দরিদ্রতা নয়। যতটুকু আছে তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকাই মুমিনের গুণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তাহাজ্জুদের নামাজ আর মানুষ থেকে অমুখাপেক্ষিতার মধ্যে আছে মুমিনের সম্মান।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব, হাদিস: ৯২৯)

নামাজ আদায় করা: নামাজ আদায় হতাশা দূর করে। কখনো হতাশা চেপে বসলে বিচলিত না হয়ে অজু করে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার জন্য পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)

তাকদিরে বিশ্বাস রাখা: ঈমানের অন্যতম ভিত্তি তাকদিরে বিশ্বাস রাখা। ভালো-মন্দ যাই হোক না কেন; তাকদিরের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলে হতাশ হওয়ার অবকাশ থাকবে না। সমস্যার সমাধান একমাত্র আল্লাহই করতে পারেন, অন্তরে এই বিশ্বাস লালন করুন; হতাশা আপনার আশপাশেও আসবে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ যদি তোমাকে কষ্ট দিতে চান তাহলে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই, আর আল্লাহ যদি তোমার কল্যাণ করতে চান, তাহলে তাঁর অনুগ্রহ ফিরিয়ে দেওয়ার কেউ নেই।’ (সুরা ইউনুস, আয়াত: ১০৭)

আল্লাহকে ডাকা বা সাহায্য চাওয়া: আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমাদের উচিত সবসময় আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি তো নিশ্চয়ই নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

দোয়া পড়া: হতাশা ও দুশ্চিন্তা অনেক সময় আর্থিক সংকটের কারণে হয়। এজন্য বেশি বেশি ইসতেগফার করলে আল্লাহতায়ালা আর্থিক সংকটসহ অন্যান্য বিপদ দূর করে দেবেন। হতাশা থেকে বাঁচার জন্য দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা জরুরি। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে এই দোয়াটি পড়তে পারি– 

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হামমি ওয়াল হুজনি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়াল বুখলি, ওয়া আউজুবিকা মিন গলাবাতিদ দাইনি ওয়া কহরির রিজাল।
বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, আপনার কাছে আশ্রয় চাই ভীরুতা ও কার্পণ্য হতে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোষানল থেকে। 

লেখক : শিক্ষার্থী, আনন্দমোহন সরকারি কলেজ, ময়মনসিংহ

ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত পবিত্র কোরআনের ছবি

সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া গবেষণা। যার সাধারণ অর্থ সত্য ও জ্ঞানের অনুসন্ধান। ড. খুরশিদ বলেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে নতুন জ্ঞান অন্বেষণ হলো গবেষণা। ড. ইয়াহইয়া ওয়াহাব বলেন, পাথর খণ্ডে গর্ত খনন করার মতো পরিশ্রম করে নতুন তথ্য পাওয়াটাই হলো গবেষণা। 


ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিজ্ঞানময় কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানগুলো ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য বহু নিদর্শন আছে। যারা আল্লাহকে দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট এবং শায়িত অবস্থায় স্মরণ করে থাকে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টির ব্যাপারে চিন্তা করে (ও বলে), হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করোনি, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, সুতরাং আমাদের অগ্নির শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-১৯১)


আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘এটি একটি কল্যাণময় কিতাব তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি—যাতে তারা এর আয়াতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯) 

মানবজাতির বোঝার সুবিধার্থে আল্লাতায়ালা কোরআনকে সহজ করে দিয়েছেন। যারা চিন্তাভাবনা করে আর যারা করে না, তাদের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি বলে দিন, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা করো না?’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৯)। জ্ঞানী ও গবেষকদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত–আল্লাহ তাদের মর্যাদা উঁচু করে দেবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা করো।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)। আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি (আল্লাহ) রাত-দিন ও চাঁদ-সূর্যকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই বিধানে। অবশ্যই এতে বিবেকবান লোকদের জন্য রয়েছে নিদর্শনাবলি।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২)


যারা জ্ঞান ও গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকেন, আল্লাহ তাদের যুদ্ধ বা রোজা রাখার মতো সওয়াব দান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করা জিহাদতুল্য।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘জ্ঞান-গবেষণা রোজার সমান।’
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব অনেক বেশি। জ্ঞান গবেষণা মুসলিমদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। গবেষণার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করতে পারি। জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারি। তাই মুসলিমদের উচিত গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এবং জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া। 


মানুষের উচিত প্রতিদিনই নতুন নতুন পথের সন্ধান করা। একই পথ নিয়ে পড়ে না থাকা। দুটি পথ থাকলে তৃতীয় পথ কী করে তৈরি করা যায়; তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। এই চিন্তাকে জাগানোর জন্যই বারবার আহ্বান করেছে কোরআন। 

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, পাংশা

রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সঠিকভাবে জানা ছাড়া পরিপূর্ণরূপে ইসলাম অনুসরণ সম্ভব নয়

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ এএম
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ এএম
রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সঠিকভাবে জানা ছাড়া পরিপূর্ণরূপে ইসলাম অনুসরণ সম্ভব নয়
বহু গ্রন্থ প্রণেতা সাব্যসাচী লেখক মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন

মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন—সুপ্রসিদ্ধ আলেম, গবেষক, লেখক ও কথাসাহিত্যিক। আশিটির বেশি মৌলিক ও অনূদিত বইয়ের কারিগর তিনি। যুক্ত রয়েছেন মাদরাসার পরিচালক ও মসজিদের খতিব হিসেবেও। রবিউল আউয়াল মাস উপলক্ষে সিরাতে রাসুল (সা.) পাঠ করার প্রয়োজনীয়তা, কোন কোন গ্রন্থ পাঠ করার মাধ্যমে সঠিকভাবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জানা যাবে এবং পাঠের ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা বা নিয়ম অনুসরণ করা উচিত ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা হয়েছে তার সঙ্গে। আলোচনার চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো। 

প্রশ্ন: মুসলমানের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনী পাঠ করা জরুরি কেন?
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন: ইসলামকে পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের সঙ্গে তুলনা করে বুঝতে চাইলে, একটি প্রতিষ্ঠিত ও সুরক্ষিত সৌন্দর্য সামনে চলে আসবে, তা হলো—ইসলাম বলতে আমরা যে জীবনদর্শনকে বলি বা বুঝি, তার একটা বাস্তব আদর্শ রয়েছে এবং সেটি হলেন আমাদের প্রিয়নবি মুহাম্মাদ (সা.)। কোনো দর্শন যতক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবে চিত্রিত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য সেটা অনুসরণযোগ্য হয়ে ওঠে না। 
কোনো জীবনদর্শন বা চিন্তা মানুষের জীবনে সফলতা বয়ে আনার জন্য সেখানে যেমন সহজ বিষয় থাকবে, কঠিন বিষয় থাকবে এবং দৃশ্যত এমন কিছু বিষয় সামনে আসবে—মনে হবে যেন এ কাজগুলো করা ঠিক সম্ভব নয়। একাধারে ত্রিশ দিন রোজা রাখা—নির্দিষ্ট ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় নিয়ম মেনে ইফতার করাকে যে কেউ অসম্ভব মনে করতে পারেন। কিন্তু ইসলামের পক্ষ থেকে যিনি এ দাওয়াতটা দিচ্ছেন, তিনি রমজানসহ সারা বছর এভাবে রোজা রেখে, ইফতার করে যখন দেখিয়েছেন—তখন আর কারও এ প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় না, ভাবতে হয় না বা শয়তান তাকে প্ররোচিত করতে পারে না যে, এটা অসম্ভব। 
এটা সম্ভব, তার কারণ যিনি এ দাওয়াতটা দিয়েছেন, তিনি আমাদের কাছে যা চেয়েছেন, এর চেয়ে বেশি কিছু করে দেখিয়েছেন। ইসলাম ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব এটি।
মুসলমানদের জাকাত দিতে বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। আর দান করার ক্ষেত্রে তিনি নিজেকে এমন এক উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন—তাঁর ওপর জীবনে কখনো জাকাত ফরজ হওয়ার সুযোগই হয়নি। রাসুলুল্লাহ (সা.) সবটা বিলিয়ে দিয়ে অন্যদের বলেছেন, তোমরা ৪০ ভাগের এক ভাগ দাও। ফলে সবার কাছে সহজ মনে হয়েছে। 
মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনী জানা, তাঁর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চোখের সামনে রাখা প্রত্যেক মুমিনের জন্য জরুরি। কারণ এটাকে বাদ দিয়ে ইসলামকে যথাযথভাবে বোঝা এবং সেটাকে জীবনে প্রয়োগ করা, চর্চা করা, অনুসরণ করা কোনো ব্যক্তির পক্ষে যথাযথভাবে সম্ভব নয়। মুহাম্মাদ (সা.)-কে পাঠ করা ছাড়া এবং তাঁকে সঠিকভাবে জানা ছাড়া পরিপূর্ণরূপে ইসলাম অনুসরণ করা সম্ভব নয়। 

প্রশ্ন: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনী পাঠ করার ক্ষেত্রে কোন কোন বইগুলো পড়া যেতে পারে? 
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন: কোনো শিক্ষিত মুসলিম পরিবার এমন হওয়া উচিত নয়, যে ঘরে পবিত্র কোরআন, কোরআনের সরল অনুবাদ এবং সহজ কোনো ব্যাখ্যাগ্রন্থ থাকবে না এবং যেখানে প্রিয়তম নবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর কোনো জীবনীগ্রন্থ থাকবে না। মুহাম্মাদ (সা.)-কে জানার মাধ্যম দুটি—এক. শুনে জানা। দুই. পড়ে জানা। দুই জানার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। পড়ে জানার মাধ্যমটি তুলনামূলক নিরাপদ ও উত্তম। 
প্রত্যেক মানুষের অবশ্যই রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে লিখিত গ্রন্থাবলি পাঠ করা কর্তব্য। মুসলমান হিসেবে আমাদের জন্য এটা অনেক বড় আনন্দের বিষয়, মুহাম্মাদ (সা.) যেহেতু ইসলামের সচিত্র রূপ, তাই ইসলামের সূচনাকাল থেকে মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবনচিত্রকে সনদসহকারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাঁকে জানার ক্ষেত্রে সমাজে একটা অসম্পূর্ণ ধারণা প্রচলিত রয়েছে। মনে করা হয়—জীবনীমূলক গ্রন্থ থেকেই তাঁকে জানতে হবে। অথচ তাঁকে জানার প্রথম এবং সবচেয়ে শক্তিমান মাধ্যম হলো পবিত্র কোরআন। দ্বিতীয় মাধ্যম হাদিস। তৃতীয় মাধ্যম হলো তাঁকে নিয়ে লিখিত জীবনীগ্রন্থ। 
এই জায়গাতেও আমাদের জন্য একটা সম্মানের অবস্থা হলো, বাংলা ভাষাটা চর্চার দিক থেকে যতটা পুরোনো, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সিরাত চর্চা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ততটাই পুরোনো। পুঁথি সাহিত্য যখন থেকে শুরু, তখন থেকে রাসুলুল্লাহ (সা.) পুঁথি সাহিত্যে আলোচিত। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়—আমরা আমাদের বিশ্বাসটাকে চর্চায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। 
বাংলা ভাষায় মুসলমানদের মধ্যে প্রথম শেখ আব্দুর রহিম (রহ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে লিখেছেন। এর আগে অন্য ধর্মের তিনজন লিখেছেন তাঁকে নিয়ে। সম্ভবত ১৮৮৬ বা ৮৭ সালে শেখ আব্দুর রহিমের বই প্রকাশিত হয়েছে। 
সিরাত বিষয়ে খুব আলোচিত গ্রন্থ কবি গোলাম মোস্তফার ‘বিশ্বনবী’। তিনি ছিলেন মাদরাসাপড়ুয়া মানুষ। মৌলবি কবি গোলাম মোস্তফা। আরও একটি সিরাতগ্রন্থ খুব বেশি আলোচিত হয়েছে, সেটা হলো মওলানা আকরম খাঁর মোস্তফাচরিত। তবে আকরম খাঁ তার বইয়ে বিজ্ঞানকে মাপকাঠি নির্ধারণ করেছেন। ফলে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মুজেঝার মতো গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয় ছেড়ে দিয়েছেন। যা একজন ধর্মপরায়ণ পাঠক আশা করে না। সে জায়গায় কবি গোলাম মোস্তফা এমন একটা গ্রন্থ রচনা করলেন—বিশেষ করে সাহিত্য ও ভক্তিপূর্ণ উপস্থাপনায়, সেটা কালোত্তীর্ণ। পরবর্তী সময়ে ঢাকার বড় কাটারা মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা তফাজ্জুল হোসাইনের ‘হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সমকালীন পরিবেশ ও জীবন’; মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের ‘স্বপ্নযোগে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ ও ‘রওজা শরীফের ইতিহাস’—এগুলো অনন্য কাজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। 
এ ছাড়া আরবি ও উর্দু ভাষা থেকে বাংলায় অনূদিত সিরাতগ্রন্থের মধ্যে সামগ্রিক বিবেচনায় যে কাজগুলো অনন্য সেগুলো হলো—ইবনে হিশাম (রহ.) রচিত ‘সিরাতে ইবনে হিশাম’; ইবনে কাসির (রহ.) রচিত ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’; হাফেজ জাহাবি (রহ.) রচিত সিয়ারের প্রথম তিন খণ্ড; ইবনে কাসির (রহ.) রচিত ‘আলফুসুল ফি ইখতিসারি সিরাতে রাসুল’; সাইয়েদ আবুল হাসান আলি নদভি (রহ.) রচিত ‘আস-সিরাতুন নববিইয়া’ ও ‘রহমতে আলম’; মাওলানা ইদ্রিস কান্ধলভি (রহ.) রচিত ‘সিরাতুল মোস্তফা’; সাইয়েদ সুলায়মান নদভি (রহ.) রচিত ‘খুতুবাতে মাদরাজ’; মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানি (রহ.) রচিত ‘পয়গাম্বরে ইনসানিইয়াত’ এবং জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রহ.) রচিত ‘খাসায়েসে কুবরা’ উল্লেখযোগ্য। 

প্রশ্ন: সিরাত পাঠের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সতর্কতা বা নিয়ম মানা আবশ্যকীয় কি না?
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন: রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে প্রথমে সতর্কতার সঙ্গে বুঝতে হয়, কাদের লেখা পড়ব? কারণ, তাঁর জীবনী পড়া মানে ইসলাম পড়া। তিনিই ইসলাম। এ জায়গায় এসে আমাদের মানতেই হয়— যেহেতু বিষয়টি ইসলাম, এ চর্চার জায়গায় মূলধারাটা হলো আলেমসমাজ। তারাই শেকড় থেকে ইসলাম পড়েন, শেকড় থেকে জানেন, বোঝেন, সত্যিকার বুঝটা বিচার করার ক্ষমতা রাখেন এবং সত্যিকারের বুঝটার প্রচার করেন। এ জন্য আলেমদের লেখা সিরাতগ্রন্থগেুলো বেছে বেছে পাঠ করতে হবে। যার লেখা পড়ছি, তার সম্পর্কেও জানতে হবে—তিনি কতটা নির্ভরযোগ্য। 
আর অনুবাদগ্রন্থ পড়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা জরুরি। কারণ অনুবাদে সামান্য ভুল করার কারণে ইতিহাস পাল্টে যায়! অনেক সময় বড় রকমের বিতর্কের জন্ম হয়। সর্বোপরি কথা হলো, ইসলাম সম্পর্কে যিনি বিশেষজ্ঞ অর্থাৎ যিনি কোরআনকে উৎস থেকে বোঝেন, হাদিসকে উৎস থেকে বোঝেন এবং ফিকাহ বোঝেন—এমন তিনটি গুণ বা শক্তি যার মধ্যে রয়েছে; এমন ব্যক্তি যদি নবিজীবনী লেখেন, তার বই যে কেউ চোখ বন্ধ করে পড়লে, তার হাত ধরে মুহাম্মাদ (সা.) পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব। অন্যথা বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা প্রকট।

 

বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম
বানভাসিদের নতুন ঘর দেবে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। ছবি: সংগৃহীত

ভারত থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বর্ষণে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখল বাংলাদেশ। বিশেষত ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লাসহ ১৩টি জেলার মানুষ এই বন্যায় অবর্ণনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। 

বন্যার শুরু থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধার, তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, শুকনো খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা খাবার, আলেম ও মধ্যবিত্ত পরিবারে নগদ অর্থ ও কাপড় দিয়েছে সংস্থাটি। 

জানা যায়, ২২ আগস্ট থেকে বন্যার্তদের সহযোগিতায় কাজ শুরু করে আন-নূর। শুরু থেকেই সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের নিয়ে কাজ করতে থাকেন। পরে আমেনা ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয়দের নিয়ে টিম করে সেবা দেন। প্রতিদিনই দুটি টিমে ১০ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবী কাজ করত। এ পর্যন্ত ৩ হাজার বন্যার্ত পরিবারকে বহুমুখী সহযোগিতা করেছে সংস্থাটি। 

বন্যা-পরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে আন-নূর। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চূড়ান্ত করে ১০০ নতুন ঘর করে দেবে সংস্থাটি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর মেরামতও করছেন তারা। যেসব পরিবারের আয়-রোজগারের পথ একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে, সেসব পরিবারের ছয় মাসের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছে তারা। স্বাবলম্বী করার প্রজেক্ট আছে সংস্থাটির। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাওলানা আনসারুল হক ইমরান বলেন, ‘মাদরাসার শিক্ষকতার পাশাপাশি সেবামূলক কাজ করছি। আমৃত্যু দেশের অসহায় মানুষের সেবা করতে চাই। আমরা সবাই মিলে যদি মানুষের জন্য কাজ করতে পারি, তাহলে এ দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর হবে। এ দেশ হবে প্রকৃতার্থে সোনার বাংলাদেশ।’ 

উল্লেখ্য, করোনাকালে প্রতিষ্ঠা করা হয় আন-নূর হেল্পিং হ্যান্ড বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটি মানুষের সেবায় নানামুখী কাজ করছে। বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন, অসহায়দের চিকিৎসা, এতিম ও বিধবাদের সহায়তা, বিবাহ সহায়তাসহ বহুমুখী সেবামূলক কাজ করে আন-নূর। এ ছাড়া দেশের দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে কাজ করে সংস্থাটি।

রায়হান/মিরাজ রহমান