সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। নিঃস্ব হাজারো পরিবার। বন্যার পানি কমে গেলেও মানুষের জীবন ও জনপদে দেখা দিচ্ছে নিত্যনতুন ক্ষত। পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে সব জায়গায়। পুনর্বাসনের প্রয়োজন পড়ছে বহু মানুষের। জীবন বাঁচানোর উপকরণের পাশাপাশি স্বাবলম্বী করার প্রয়োজনও দেখা দিয়েছে হাজারো মানুষের। এসব দুর্গত মানুষের আর্থিক সাহায্যে এগিয়ে এসেছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী।
শুরু থেকেই বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী। শুরুর দিনগুলোয় দুর্গত মানুষকে শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ দিয়েছেন। সেসময় একদল স্বেচ্ছাসেবী টাকা সংগ্রহ করেছেন মোমেনশাহীর স্থানীয় এলাকায়, আরেকদল কাজ করেছেন ফেনীর দাগনভূঞা ও মহিপালের বিভিন্ন এলাকায়। আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করেছেন। মানুষের কাছে গিয়ে সহায়তা দিয়ে এসেছেন। এ পর্যন্ত সংস্থাটি প্রায় ২ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছেন।
জানা যায়, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। ১৮টি টিমে প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবী কাজ করেছেন বন্যাদুর্গত এলাকায়। তারা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি রান্না করা খাবার দিয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়েছেন। পানি কমতে শুরু করলে বন্যার্তদের জন্য আয়োজন করেছেন বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার। ফুলগাজীতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। দিয়েছেন বিনা মূল্যে দরকারি ওষুধ। অসহায়দের নগদ অর্থও দিয়েছেন সেসময়। কারও জন্য করেছেন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। মাদরাসাছাত্রদের শিক্ষা উপকরণ দিয়েছেন।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আমীর ইবনে আহমাদ বলেন, ‘বন্যার শুরুর দিকে আমরা আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করি। শুরুতে শুকনো খাবার দিই। পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বা চাল, ডাল ইত্যাদি দিই। আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়েছি। পুনর্বাসনে কাজ করেছি। প্রায় ২ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে মোমেনশাহী আলেমদের নেতৃত্বাধীন এ সংগঠন। আমাদের বেশির ভাগ সহায়তা ও ত্রাণ কাজগুলো দুর্গম এলাকায় করা হয়েছে। অসহায় মাদরাসাছাত্রদের সহযোগিতা, মানুষের জন্য পুনর্বাসন করব ও বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী ১৯৯৩ সালের ১২ আগস্টে প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই সংগঠনটি প্রাথমিক দ্বীনি শিক্ষার প্রচার-প্রসার, সিরাত মাহফিল, অসহায় বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অনৈসলামিক কাজের মোকাবিলা করে আসছে। মোমেনশাহীর সব আলেম ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। দেশব্যাপী কাজ করছে সংগঠনটি। দুর্যোগ-দুর্বিপাকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক