ঢাকা ১০ চৈত্র ১৪৩১, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
English

ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত পবিত্র কোরআনের ছবি

সত্য অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া গবেষণা। যার সাধারণ অর্থ সত্য ও জ্ঞানের অনুসন্ধান। ড. খুরশিদ বলেন, বিজ্ঞানসম্মতভাবে নতুন জ্ঞান অন্বেষণ হলো গবেষণা। ড. ইয়াহইয়া ওয়াহাব বলেন, পাথর খণ্ডে গর্ত খনন করার মতো পরিশ্রম করে নতুন তথ্য পাওয়াটাই হলো গবেষণা। 


ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বিজ্ঞানময় কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। গবেষণার প্রতি উৎসাহিত করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আসমানগুলো ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য বহু নিদর্শন আছে। যারা আল্লাহকে দণ্ডায়মান, উপবিষ্ট এবং শায়িত অবস্থায় স্মরণ করে থাকে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টির ব্যাপারে চিন্তা করে (ও বলে), হে আমাদের প্রতিপালক, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করোনি, তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, সুতরাং আমাদের অগ্নির শাস্তি থেকে রক্ষা করো।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-১৯১)


আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘এটি একটি কল্যাণময় কিতাব তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি—যাতে তারা এর আয়াতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে।’ (সুরা সোয়াদ, আয়াত: ২৯) 

মানবজাতির বোঝার সুবিধার্থে আল্লাতায়ালা কোরআনকে সহজ করে দিয়েছেন। যারা চিন্তাভাবনা করে আর যারা করে না, তাদের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি বলে দিন, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা করো না?’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৯)। জ্ঞানী ও গবেষকদের মর্যাদা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত–আল্লাহ তাদের মর্যাদা উঁচু করে দেবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা করো।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)। আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনি (আল্লাহ) রাত-দিন ও চাঁদ-সূর্যকে তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। আর নক্ষত্ররাজিও অধীন হয়েছে তাঁরই বিধানে। অবশ্যই এতে বিবেকবান লোকদের জন্য রয়েছে নিদর্শনাবলি।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ১২)


যারা জ্ঞান ও গবেষণার কাজে ব্যস্ত থাকেন, আল্লাহ তাদের যুদ্ধ বা রোজা রাখার মতো সওয়াব দান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করা জিহাদতুল্য।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘জ্ঞান-গবেষণা রোজার সমান।’
ইসলামে গবেষণার গুরুত্ব অনেক বেশি। জ্ঞান গবেষণা মুসলিমদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। গবেষণার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করতে পারি। জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে পারি। তাই মুসলিমদের উচিত গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এবং জীবনযাত্রার অপরিহার্য অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া। 


মানুষের উচিত প্রতিদিনই নতুন নতুন পথের সন্ধান করা। একই পথ নিয়ে পড়ে না থাকা। দুটি পথ থাকলে তৃতীয় পথ কী করে তৈরি করা যায়; তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা। এই চিন্তাকে জাগানোর জন্যই বারবার আহ্বান করেছে কোরআন। 

লেখক: সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, পাংশা

জীবনে অন্তত একবার হলেও এ নামাজ পড়ুন

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০২:০৬ পিএম
জীবনে অন্তত একবার হলেও এ নামাজ পড়ুন
মুমিনের সেজদারত ছবি । সংগৃহীত

নফল নামাজের মধ্যে সালাতুত তাসবিহ একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত, যা গুনাহ মাফ এবং আত্মশুদ্ধির জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ। সালাতুত তাসবিহ নামাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এতে সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার তাসবিহ বারবার পড়া হয়। এই নামাজটি আল্লাহর প্রশংসা এবং তাঁর স্মরণে সংগতিপূর্ণভাবে গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার এক সুগম পথ।

সালাতুত তাসবিহ নামাজের গুরুত্ব 
জীবনে অন্তত একবার হলেও সালাতুত তাসবিহ পড়া। এটি নিয়মিত আমল করলে একজন মুমিন আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে এবং তার গুনাহ মাফ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এ নামাজের সুসংবাদ নবীজি (সা.) তাঁর চাচাকে দিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন নবীজি (সা.) আমার পিতা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে বললেন, চাচাজান, আমি কি আপনাকে উত্তম তাসবিহ শিক্ষা দেব না, যখন আপনি তা আদায় করবেন, আল্লাহ আপনার পূর্বাপর, নতুন-পুরোনো, ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ছোট-বড় সব ধরনের পাপ ক্ষমা করবেন। 

সালাতুত তাসবিহ নামাজের নিয়ম
সালাতুত তাসবির নামাজ মোট ৪ রাকাত। এর জন্য আপনাকে সাধারণ নিয়ত করতে হবে। আমি চার রাকাত নফল নামাজ সালাতুত তাসবিহ পড়ছি।

প্রতি রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর যেকোনো সুরা পড়তে হবে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রতি রাকাতে ৭৫ বার তাসবিহ পড়া। সুতরাং, পুরো নামাজে মোট ৩০০ বার তাসবিহ পড়া হবে। তাসবিহটি হলো- সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার

প্রথম রাকাতে, সানা পড়ার পর তাসবিহ ১৫ বার পড়তে হবে। এরপর সুরা ফাতিহা এবং অন্য একটি সুরা পড়ার পর তাসবিহ ১০ বার পড়তে হবে। রুকুতে গিয়ে তাসবিহ ১০ বার এবং রুকু থেকে উঠে রাব্বানা লাকাল হামদ বলার পর তাসবিহ ১০ বার পড়তে হবে। সিজদাতে গিয়ে সিজদার তাসবিহ পড়ার পর তাসবিহ ১০ বার, এবং প্রথম সিজদা থেকে উঠে বসে তাসবিহ ১০ বার পড়তে হবে। দ্বিতীয় সিজদাতে তাসবিহ ১০ বার পড়তে হবে। এভাবে প্রতি রাকাতে মোট ৭৫ বার তাসবিহ পড়তে হবে।

ভুলে তাসবিহ পড়লে কী করবেন?
যদি কোনো কারণে ভুলে যায় বা নির্দিষ্ট সংখ্যার কম পড়লে, পরবর্তী রোকনে এসে ভুলে যাওয়া তাসবিহের সংখ্যা আদায় করতে হবে। তবে, সাহু সেজদা করতে হলে তার মধ্যে তাসবিহ পড়া হবে না। তা ছাড়া আঙুল দিয়ে তাসবিহের সংখ্যা গণনা করা উচিত নয়।

জীবনে সালাতুত তাসবিহ নামাজের উপকারিতা
এ নামাজ পড়লে আল্লাহতায়ালা তার বান্দার দোয়া গ্রহণ করেন, বিশেষ করে জুমার রাতে এই নামাজের পরে দোয়া করলে আল্লাহতায়ালা কখনোই তা ফিরিয়ে দেন না। এটি একটি পরীক্ষিত আমল। যে জীবনের সমস্যাগুলোর সমাধান চায়, সালাতুত তাসবিহ তার জন্য এক বিশেষ উপায়। আল্লাহর কাছে চাইলে তিনি অবশ্যই খুশি হন। যে আল্লাহর কাছে চায় না, আল্লাহ তার ওপর অসন্তুষ্ট হন।

 

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

শিশু এতিমদের খাবার খাওয়ালে রোজার ফিদিয়া আদায় হবে কি না?

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
শিশু এতিমদের খাবার খাওয়ালে রোজার ফিদিয়া আদায় হবে কি না?
অসহায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুর ঘুমন্ত ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন :  আমাদের এলাকায় একটি এতিমখানা আছে। সেখানে বিভিন্ন বয়সের ত্রিশটি পথশিশু ও এতিমের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আমি আমার দাদার ত্রিশ দিনের রোজার ফিদিয়া হিসেবে তাদেরকে দুই বেলা খাওয়াতে চাচ্ছি। জানার বিষয় হলো, সেখানে চার-পাঁচ বছর বয়সী কয়েকটি বাচ্চা আছে। এই বয়সের বাচ্চারা তো খুব সামান্য পরিমাণ খাবার খায়। তাদেরকে খাওয়ালে কি ফিদিয়া আদায় হবে?

 

উত্তর :  চার-পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে আপনার দাদার রোজার ফিদিয়া আদায় হবে না। কারণ, ফিদিয়া আদায়ের জন্য শর্ত হলো এমন ব্যক্তিকে খাওয়ানো, যারা পূর্ণ পরিমাণে খাবার খেতে সক্ষম। ছোট বাচ্চারা সাধারণত পূর্ণ পরিমাণে খাবার খেতে পারে না। তাই তাদেরকে খাওয়ানোর মাধ্যমে ফিদিয়া আদায় হবে না।


তবে আপনি যদি উক্ত এতিমখানার বড় বাচ্চা বা প্রাপ্তবয়স্কদের খাওয়ান, যারা পূর্ণ খাবার গ্রহণ করতে পারে, তা হলে তা ফিদিয়া হিসেবে গণ্য হবে। আর ছোট বাচ্চাদের আপনি ফিদিয়ার নিয়ত ছাড়া সাধারণ সদকার নিয়তে খাওয়াতে পারেন। এতে আপনি সদকার সওয়াব পাবেন, যদিও তা ফিদিয়া হিসেবে গণ্য হবে না।


সুতরাং আপনার দাদার ত্রিশ দিনের রোজার ফিদিয়া আদায় করতে চাইলে এতিমখানার বড় বাচ্চা বা প্রাপ্তবয়স্কদেরকে দুই বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করুন। আর ছোট বাচ্চাদের সদকার নিয়তে খাওয়ালে আলাদা সওয়াবের অধিকারী হবেন। 

উল্লেখ্য, যে এই ইসলামি ফিকহের গ্রন্থে ফিদিয়া আদায়ের শর্তাবলি ও পদ্ধতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬২; ফাতাওয়া খানিয়া ২/২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭৮।)


লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ

রাসুলুল্লাহ (সা.) যেভাবে রমজান কাটাতেন—২৩ যেভাবে কাজা-কাফফারা ও ফিদইয়া দিতে বলেছেন

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:০০ এএম
যেভাবে কাজা-কাফফারা ও ফিদইয়া দিতে বলেছেন
রমজান কারিম লেখা ক্যালিগ্রাফি ছবি। সংগৃহীত

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে অথবা সফরে থাকবে, তার জন্য অন্য সময়ে সে রোজা পূরণ (কাজা আদায়) করে নিতে হবে। আর এটা যাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক, তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে। যে ব্যক্তি সন্তুষ্টির সঙ্গে সৎকর্ম করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। (সুরা বাকারা, ১৮৪)


কাজা হলো একটি রোজার পরিবর্তে একটি রোজা রাখা। আর কাফফারা হলো একটির পরিবর্তে বিরামহীনভাবে ৬০টি রোজা রাখা। তবে কাফফারার আরও দুইটি বিকল্প আছে। তা হলো, ৬০টি রোজার পরিবর্তে ৬০ জন গরিব মানুষকে দুইবেলা খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া গোলাম মুক্তিকরণেরও একটি মাধ্যম রয়েছে। ফকিহগণ বলেন, বর্তমানে যেহেতু দাসদাসী বা গোলামের প্রচলন নেই, সুতরাং কাফফারার এ বিকল্পটির সুযোগ আর বাকি নেই। উল্লেখ্য, রমজান মাস ছাড়া অন্য সময়ে রোজা ভঙ্গের কোনো কাফফারা নেই, শুধু কাজা আছে।


আর ফিদিয়া হলো, বার্ধক্য বা জটিল কোনো রোগের কারণে যার রোজা রাখার একেবারেই সামর্থ্য নেই এবং পরে কাজা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই— এমন ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে ফিদিয়া প্রদান করবে। ফিদিয়া হলো, প্রত্যেক রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিন দুইবেলা তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়ানো বা এর মূল্য দেওয়া। এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদিয়া ওয়াজিব হয়। (আদ-দুররুল মুখতার, ২/৪২৬)


একদা রমজানে এক লোক রাসুলাল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)!, আমি নিজেকে ধ্বংস করে ফেলেছি, আমি রোজা পালন অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। রাসুলাল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, তুমি একজন দাসকে মুক্ত করে দাও। সে বলল, এমন সক্ষমতা আমার নেই। রাসুলাল্লাহ (সা.) বললেন, তবে এর বদলে দুই মাস (৬০ দিন) রোজা রাখো। লোকটি বলল, এমন শারীরিক সক্ষমতা আমার নেই। তখন তিনি (সা.) বললেন, তবে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খাওয়াবে। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), এ রকম আর্থিক সক্ষমতাও তো আমার নেই। তখন তিনি (সা.) তাকে অপেক্ষা করতে বললেন। এর কিছুক্ষণ পর কোনো একজন সাহাবি রাসুল (সা.)কে এক ঝুড়ি খেজুর হাদিয়া দিলেন। তখন রাসুলাল্লাহ (সা.) ওই লোকটিকে ডেকে বললেন, এগুলো নিয়ে গিয়ে গরিবদের মধ্যে সদকা করে দাও। লোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ এলাকায় আমার মতো গরিব আর কে আছে? এ কথা শুনে রাসুলে কারীম (সা.) স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি হাসলেন। তিনি বললেন, আচ্ছা, তবে খেজুরগুলো তুমিই তোমার পরিবার নিয়ে খাও। (বুখারি, ১৩৩৭; মুসলিম, ১১১১)। 


যেসব কারণে রোজার কাজা আদায় করতে হয়, তা হলো— ১. স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে যদি বীর্যপাত হয়। ২. ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে। ৩. পাথরের কণা, লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেললে। ৪. ডুশ গ্রহণ করলে। ৫. নাকে বা কানে ওষুধ দিলে (যদি তা পেটে পৌঁছে)। ৬. মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পৌঁছে। ৭. যোনিপথ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে সহবাস করার ফলে বীর্য নির্গত হলে। ৮. স্ত্রী লোকের যোনিপথে ওষুধ দিলে। ৯. মুসাফির অবস্থায়। ১০. রোগব্যাধি বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে। ১১. মাতৃগর্ভে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে। ১২. এমন ক্ষুধা বা তৃষ্ণা হয়— যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে। ১৩. শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে। ১৪. কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে। ১৫. মহিলাদের মাসিক হায়েজ-নেফাসকালীন রোজা ভঙ্গ করা যায়। উল্লিখিত কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে, কিন্তু পরে তা কাজা করতে হবে। আর যেসব কারণে কাজা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করতে হয় (অর্থাৎ একটি রোজার পরিবর্তে ১+৬০= ৬১টি রোজা রাখতে হবে) তা হলো, ১. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে। ২. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করলে।

 

লেখক : আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক
 

২৪ মার্চ, ২০২৫ সোমবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
২৪ মার্চ, ২০২৫ সোমবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি
২৪ মার্চ, ২০২৫ সোমবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচির ছবি ।

আজ ২৪ মার্চ, ২৩ তম রোজা। সোমবার। এ দিনের সাহরির শেষ সময় ভোর ৪ টা ৪২ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬ টা ১১ মিনিট।


২৪ মার্চ, সোমবার, ২০২৫
সাহরির শেষ সময় : ৪.৪২ মিনিট
ইফতারের সময় : ৬.১১ মিনিট


জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ইফতারের সময় এবং প্রতি রাতে লোকদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৬৪৩)

 

সূত্র : ইসলামিক ফাউন্ডেশন

 

 

মসজিদ পরিচিতি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দৃষ্টিনন্দন ছবি। সংগৃহীত

ঢাকা মসজিদের শহর হিসেবে পরিচিত। এই শহরের প্রতিটি অলি-গলিতে ছড়িয়ে আছে নতুন ও পুরাতন অসংখ্য মসজিদ। এর মধ্যে বিশেষ এক মসজিদ হলো বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদ, যা দেশের জাতীয় মসজিদ হিসেবে খ্যাত। বায়তুল মোকাররম মসজিদ বিশ্বের দশম বৃহত্তম মসজিদ, যা নির্মাণ করা হয়েছে মক্কার কাবা ঘরের আদলে। এটা চারকোনা আকৃতির এবং মোগল স্থাপত্যশৈলীর পাশাপাশি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর মিশ্রণ এই মসজিদটিকে অন্য সব মসজিদ থেকে আলাদা করে তোলে। যা এটিকে বিশেষ মর্যাদা দান করেছে।


এ মসজিদটির নির্মাণের পেছনে রয়েছে বেশকিছু চমকপ্রদ ইতিহাস। মসজিদটি ঢাকা শহরের নতুন এবং পুরান ঢাকার মিলনস্থলে, নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের কাছেই অবস্থিত। এক সময় যেখানে মসজিদটি এখন দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে ছিল একটি বড় পুকুর, যা 'পল্টন পুকুর' নামে পরিচিত ছিল। এই পুকুর ভরাট করে ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান মসজিদটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন।

বায়তুল মোকাররম মসজিদটির আয়তন ২৬৯৪.১৯ বর্গমিটার এবং এর প্রধান গম্বুজের উচ্চতা ৩০.১৮ মিটার। মসজিদটি ১৯৬৩ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো নামাজের জন্য খোলা হয়। বর্তমানে এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

এ ছাড়া, নারীদের জন্য রয়েছে ৬ হাজার ৩৮২ বর্গফুটের নামাজের স্থান, যা মসজিদের তিনতলার উত্তর পাশে অবস্থিত। পুরুষদের জন্য ব্যবহৃত ওজুখানা ৬ হাজার ৪২৫ বর্গফুট, আর নারীদের ওজুখানার জন্য রয়েছে ৮৮০ বর্গফুট। যা মসজিদটির দক্ষিণ ও উত্তর পাশে অবস্থিত ওজু করার জন্য জায়গা রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত সুবিধাজনক।

এ ছাড়াও মসজিদটির বারান্দার ওপর দুটি ছোট গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে, যা মসজিদটির প্রধান গম্বুজের অভাব পূর্ণ করেছে এবং মসজিদটির সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করেছে।

প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে নামাজ আদায় করেন, যা এই মসজিদকে জীবন্ত ও প্রাণবন্ত করে তোলে। বায়তুল মোকাররম মসজিদটি তার স্থাপত্য, ইতিহাস এবং আধুনিক সুবিধার জন্য কেবল একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং ঢাকার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবেও পরিচিত।