রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানদের প্রত্যেকই গুনাহগার। আর গুনাহগারদের মধ্যে তওবাকারীরা উত্তম।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৪৯৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) অপরাধীদের খারাপ মনে করে গ্রেপ্তার বা ধরপাকড় জাতীয় কোনো উদ্যোগ নিতেন না; বরং তাদের তিনি মনে করতেন অসুস্থ, যাদের দরকার সুচিকিৎসার প্রয়োজন। এ জন্য তিনি তাদের অভিশাপ করা বা মুমিনদের আওতা থেকে তাদের বহিষ্কার করা থেকে নিষেধ করতেন।
উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ছিল। তার উপাধি ছিল হিমার (গাধা)। লোকটি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে হাসাত। মদ পান করার অপরাধে নবিজি তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। একদিন তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আনা হলো। তিনি তাকে বেত্রাঘাতের আদেশ দিলেন। তাকে বেত্রাঘাত করা হলো। তখন উপস্থিত এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ, তার ওপর অভিশাপ বর্ষণ করুন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে কতবার আনা হলো। তখন নবিজি (সা.) বললেন, তোমরা তাকে অভিশম্পাত করো না। আল্লাহর শপথ। আমি তাকে জানি সে অবশ্যই আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে ভালোবাসে।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৩৯৮)
আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে একটি মাতাল লোককে আনা হলো। তিনি তাকে প্রহার করার নির্দেশ দিলেন। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে এবং কেউ কাপড় দিয়ে প্রহার করছিল। লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যক্তি বলল, এর কী হলো; আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৩৯৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) অপরাধীর শাস্তি বিধানে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতেন না; অপরদিকে মুমিনদের সীমা থেকে তাকে বেরও করে দিতেন না। কারণ, তাকে অভিশাপ করলে, তাড়িয়ে দিলে সে শত্রুদের সংস্রবে গিয়ে তাদের দল ভারী করবে। আর তাকে মুসলিমদের কাতারে রাখলে সে তওবার সুযোগ পাবে। ফিরে আসার প্রেরণা পাবে। এ কারণেই পাপী, অপরাধী, আসামিদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা থেকে সাবধান থাকতে হবে।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক