প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের জন্য সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ পড়া ফরজ। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের জন্য আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। আজান অর্থ ডাকা, আহ্বান করা বা জানানো। নামাজের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগে আজান দেওয়া যাবে না। কখনো দিয়ে ফেললে ওয়াক্ত হলে আবার আজান দিতে হবে। নারীদের আজান ও ইকামাত দেওয়া জায়েজ নয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মোট চারজন মুয়াজ্জিন ছিলেন। মদিনায় ছিলেন দুইজন। এক. বেলাল ইবনে রাবাহ (রা.)। দুই. আমর ইবনে উম্মে মাকতুম কুরাশি (রা.)। আর কুবায় ছিলেন সাদ আলকুরজা (রা.)। এ ছাড়া মক্কায় ছিলেন আবু মাহজুরা আওস ইবনে বিন মুগিরা জুমাহি (রা.)। (জাদুল মাআদ, ১/১২৪)
আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, বেলাল (রা.)-এর আজানের শব্দাবলি এমন—
আল্লাহু আকবার—৪ বার। অর্থ—আল্লাহ মহান বা বড়।
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—২ বার। অর্থ—আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাসক নেই।
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ—২ বার। অর্থ—আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।
হাইয়া আলাস সালাহ—২ বার। অর্থ—নামাজের জন্য আসো।
হাইয়া আলাল ফালাহ—২ বার। অর্থ—কল্যাণের দিকে আসো।
আল্লাহু আকবার— ২ বার। অর্থ—আল্লাহ মহান বা বড়।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—১ বার। অর্থ—আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাসক নেই। (আবু দাউদ, ১/৭১-৭২)
আবু মাহজুরা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.) যেভাবে আজান শিখিয়েছিলেন, তা এমন—
আল্লাহু আকবার—৪ বার। অর্থ—আল্লাহ মহান বা বড়।
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—২ বার। চুপে চুপে বা নিম্নস্বরে। অর্থ—আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাসক নেই।
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ—২ বার। চুপে চুপে বা নিম্নস্বরে। অর্থ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।
আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—২ বার। উঁচু আওয়াজে বা উচ্চৈঃস্বরে। অর্থ—আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই।
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ—২ বার। উঁচু আওয়াজে বা উচ্চৈঃস্বরে অর্থ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।
হাইয়া আলাস সালাহ—২ বার। অর্থ—নামাজের জন্য আসো।
হাইয়া আলাল ফালাহ—২ বার। অর্থ—কল্যাণের দিকে আসো।
আল্লাহু আকবার—২ বার। অর্থ—আল্লাহ মহান বা বড়।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ—১ বার। অর্থ—আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ বা ইলাহ নেই। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯)
উভয় পদ্ধতিতে ফজরের আজানে হাইয়া আলাল ফালাহ— ২ বার বলার পর আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম— ২ বার বলতে হবে। অর্থ— ঘুম অপেক্ষা নামাজ উত্তম। (বাইহাকি, ১/৪২৩)
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক