আবু বাকরাহ বলেন, কেউ যদি স্বপ্নে তাকে আগুনে জ্বালানো হচ্ছে দেখে, সে জাহান্নামে যাবে। ফেরেশতা স্বপ্নদ্রষ্টার কপালের চুল ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করেছে দেখলে ওই স্বপ্ন তার জন্য অপমান ও লাঞ্ছনার কারণ হবে। কাছ থেকে জাহান্নামের আগুন দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা পরিশ্রম ও কষ্টে ভুগবে। তা থেকে সে মুক্তি পাবে না। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘অপরাধীরা আগুন দেখে বুঝে নেবে যে, তাদের তাতে পতিত হতে হবে এবং তারা তা থেকে রাস্তা পরিবর্তন করতে পারবে না।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৫৩)
স্বপ্নদ্রষ্টা অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই জাহান্নামের শাস্তি অত্যন্ত নিশ্চিত বিনাশকারী।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৬৫)
ওই স্বপ্ন স্বপ্নদ্রষ্টার জন্য সতর্ককারী; সে যেন ওইসব পাপ থেকে তওবা করে, যা সে করে যাচ্ছে।
জাহান্নামে প্রবেশ করতে দেখার ব্যাখ্যা হলো, সে অশ্লীল বা কবিরা গুনাহে লিপ্ত হবে। ফলে স্বপ্নদ্রষ্টা শাস্তির যোগ্য হবে। কারও মতে, সে বিচারক নিযুক্ত হবে। যদি দেখে, তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হয়েছে, তাহলে যে ব্যক্তি তাকে প্রবেশ করিয়েছে, সে তাকে পথভ্রষ্ট করবে এবং অশ্লীল কাজে প্ররোচনা জোগাবে। যদি দেখে, জাহান্নাম থেকে বিনা কষ্টে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া ছাড়াই বের হয়েছে, তাহলে সে জাগতিক দুশ্চিন্তায় পড়বে।
জাহান্নামের উত্তপ্ত পানি পান করতে বা জাককুম গাছ থেকে খেতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা এমন ধরনের ইলম শিক্ষায় লিপ্ত হবে, যা তার জন্য হবে ধ্বংস ও বিপদের কারণ। কারও মতে, তার কাজগুলো কঠিন হবে এবং ওই স্বপ্ন তার হত্যাযজ্ঞ চালানোর লক্ষণ। যদি দেখে, জাহান্নামে স্বপ্নদ্রষ্টা চেহারা কালো হয়ে গেছে, তাহলে এর ব্যাখ্যা হলো, সে এমন লোকের সঙ্গে ওঠাবসা করবে যারা আল্লাহতায়ালার শত্রু এবং যারা তার খারাপ কাজের প্রতি সন্তুষ্ট। ফলে মানুষের সামনে সে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হবে এবং তার চেহারা কালো হবে আর তার শেষ পরিণাম শুভ হবে না।
যদি দেখে স্বপ্নদ্রষ্টা সবসময় জাহান্নামে বন্দি রয়েছে এবং বুঝতে পারছে না কখন সেখানে প্রবেশ করেছে, তবে সে দুনিয়াতে সবসময় দুস্থ, চিন্তিত ও বঞ্চিত থাকবে। নামাজ, রোজা ও সব ইবাদত ছেড়ে দেবে।
কয়লা বা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে দেখলে, স্বপ্নদ্রষ্টা ইচ্ছাকৃতভাবে মজলিস-মাহফিলে মানুষের ঘাড় মেড়ে চলবে। স্বপ্নে জাহান্নামের আগুন দেখা, স্বপ্নদ্রষ্টা তাড়াতাড়ি ফেতনা-ফাসাদে পতিত হওয়ার প্রতীক। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের ফেতনার স্বাদ গ্রহণ করো, এটা সেটাই যার সম্পর্কে তোমরা তাড়াহুড়া করছিলে।’ (সুরা জারিয়াত, আয়াত: ১৪)
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক