ঢাকা ২১ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪

নামাজে শরীরের কতটুকু অংশ ঢেকে রাখতে হয়?

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪০ এএম
আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪২ এএম
নামাজে শরীরের কতটুকু অংশ ঢেকে রাখতে হয়?
নামাজ শেষে জায়নামাজে বসে তাসবিহ জপছেন এক নারী। ছবি: পিন্টারেস্ট

নামাজের জন্য পুরুষের নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং নারীর মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি ও পায়ের গোড়ালি ছাড়া পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখতে হবে। নামাজে কিংবা নামাজের বাইরে শরীরের যে অংশ ঢেকে রাখা ফরজ, সেই অংশকে শরিয়তের পরিভাষায় সতর বলা হয়। পুরুষের সতর হলো নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। মাহরামের (যার সঙ্গে পর্দা ফরজ নয়) সামনে নারী মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গর্দানসংশ্লিষ্ট সিনার ওপরের অংশ ছাড়া বাকি শরীর ঢেকে রাখতে হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ৫/৩২)

বিনা কারণে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১০৬)

ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততধিক খুলে যায়, তাহলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৭৯, তাবইনুল হাকায়েক, ১/৯৭)

যার সঙ্গে পর্দা ফরজ, তাদের সামনে পূর্ণ শরীর ঢেকে রাখতে হবে। তবে বেশি প্রয়োজনে চেহারা, পা ও হাত খুলতে পারবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আদমসন্তান, আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, যা তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দূষণীয় তা আবৃত করে এবং যা শোভাস্বরূপ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক, সেটাই সর্বোত্তম। এসব মহান আল্লাহর নিদর্শনাবলির অন্যতম, যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২৬)

আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা ফরজ

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘উরু (পুরুষের) সতরের অন্তর্ভুক্ত।’ (বুখারি, ১/৫৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো পুরুষ অন্য পুরুষের সতরের দিকে তাকাবে না। পুরুষের সতর হলো নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত।’ (আবু দাউদ)

জাবের (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কাপড় যদি বড় হয় তাহলে গোটা শরীর আবৃত করো। আর কাপড় যদি ছোট হয়, তাহলে লুঙ্গির মতো পরিধান করো।’ (বুখারি, ১/৫২)

শরয়ি প্রয়োজন ছাড়া কারও সামনে সতরের কোনো অংশ খোলা হারাম। অপারেশন কিংবা রোগ নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে প্রয়োজন পরিমাণে ডাক্তারের সামনে সতর খোলার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডাক্তারের জন্য শুধু নির্ধারিত জায়গাটি দেখার অনুমতি রয়েছে।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলা কমিটি গঠন

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৯ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলা কমিটি গঠন
প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। ছবি : সংগৃহীত

মাওলানা আব্দুর রহিম খান পীর সাহেব গালুয়াকে সভাপতি ও মুফতি নুরুল্লাহ আশ্রাফী পীর সাহেব তালগাছিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

বুধবার (৬ নভেম্বর) গালুয়া এমদাদুল উলুম আশ্রাফিয়া মাদ্রাসা মিলনায়তনে জেলা কমিটির উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুস সাত্তার খানের (শাহ সাহেব হুজুর) সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলনে এ কমিটি গঠন করা হয়। 

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল হালিম। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি বশিরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শেখ সানাউল্লাহ মাহমুদী, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতা মুফতি সানাউল্লাহ খান, মুফতি আবুল হাসান কাসেমী, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ ফয়েজী ও মাওলানা আল আমিন দোহারী প্রমুখ। 

১৫১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটিতে সিনিয়র সহ সভাপতি করা হয়েছে মাওলানা  আইয়ুব খান, সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুল গাফফার খান ও সহ সভাপতি মুফতী আবুল হাসান কাসেমীকে। সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন মুফতি হানজালা। মাওলানা আব্দুল মাতিনকে করা হয়েছে অর্থ সম্পাদক। প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে মাওলানা জাকারিয়া খানকে। 

রায়হান/মিরাজ রহমান 

 

রুকুতে যাওয়ার আগে সামান্য বিরতি নিতে হয় কেন?

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪২ পিএম
রুকুতে যাওয়ার আগে সামান্য বিরতি নিতে হয় কেন?
কিরাত পাঠ শেষ করে সামান্য বিরতি নিয়ে রুকু করতে হয়। ছবি: ইন্টারনেট

নামাজে দাঁড়িয়ে কিরাত পাঠ শেষ করার পর সঙ্গে সঙ্গে রুকুতে না গিয়ে সামান্য বিরতি নিয়ে রুকু করতে হবে। সামুরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছ থেকে (নামাজে) দুটি বিরতির জায়গা মুখস্থ করেছি। আর ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন, আমি (নামাজে) একটি বিরতির জায়গা মুখস্থ করেছি। সামুরা (রা.) বলেন, আমরা এর মীমাংসার জন্য মদিনায় উবাই ইবনে কাব (রা.)-এর কাছে চিঠি লিখলাম। তিনি উত্তরে জানালেন, সামুরা (রা.) সঠিক মুখস্থ রেখেছ। সাইদ (রহ.) বলেন, আমরা কাতাদাকে (রা.) জিজ্ঞাসা করলাম, (নামাজে) বিরতি দুটি কোন কোন জায়গায়? তিনি বললেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে প্রবেশ করতেন মানে তাকবিরে তাহরিমা বলার পর এবং যখন তিনি কিরাত শেষ করতেন মানে রুকুতে যাওয়ার আগে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৫১)

জামাতের নামাজে ইমাম তাকবির বলে পুরোপুরি রুকুতে যাওয়ার পর মুক্তাদিদের রুকু করতে হবে। ইমামের আগে, বহু পরে ও সমানতালে কোনো রুকন আদায় করা যাবে না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ওই ব্যক্তি কি ভয় পাচ্ছে না, যে ইমামের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে নেয়, আল্লাহতায়ালা তার মাথাকে গাধার মাথায় রূপান্তরিত করবেন বা তার গঠনকে গাধার গঠনে পরিণত করবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৯১) 

আরও পড়ুন: স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়

আবু মুসা আশআরি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম তোমাদের আগেই রুকু করবেন এবং তোমাদের আগেই রুকু থেকে মাথা উঠাবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪০৪)

ইমামের আগে কখনো কোনো রুকন আদায় করা যাবে না। ইমাম রুকু করার পর রুকু, সিজদা করার পর সিজদা, ওঠা-বসার পর ওঠা-বসা ও সালাম আদায়ের পর মুক্তাদি সালাম আদায় করবে। আনাস (সা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আমার আগে রুকু, সিজদা, ওঠা-বসা ও সালাম আদায় করো না।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪২৬) 

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে সওয়াব পাবে?

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ এএম
আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ এএম
সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে সওয়াব পাবে?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: অনেক সময় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু হয়। এমন মায়ের জন্য বিশেষ সওয়াব আছে কি?

আশরাফ হাসান, বগুড়া

উত্তর: পবিত্র কোরআনে মায়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে মাকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভধারণ করেছেন এবং দুই বছর দুগ্ধপান করিয়েছেন।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ১৪)। একজন গর্ভবতীর জন্য মহান আল্লাহ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। গর্ভকালে সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পায়। তার যখন প্রসবব্যথা শুরু হয়, তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসী জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এই সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমাতে না দেয়), তা হলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত ৭০টি দাস আজাদ করার সওয়াব পাবে। (তাবরানি, হাদিস: ৬৯০৮)

সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে শহিদের মর্যাদা পায়। তার আমলনামায় অনেক সওয়াব লেখা হয়। সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে শহিদ। পানিতে ডুবে মরলে শহিদ। পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকরী শহিদ এবং যে স্ত্রীলোক সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যায়, সেও শহিদ।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৫৩০৭)

আরও পড়ুন: হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?

হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, ইবনুত তিন (রহ.) বলেছেন, ‘এমন মৃত্যু অনেক কষ্টের। আল্লাহতায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদির ওপর অনুগ্রহ করে এমন মৃত্যু তাদের জন্য গুনাহ মাফ ও সওয়াব বৃদ্ধির মাধ্যম বানিয়েছেন। এর মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালা তাদের শহিদের মর্যাদায় উন্নীত করবেন।’ (ফাতহুল বারি, ৬/৫২)

শুধু সওয়াব ও মর্যাদার দিক থেকে তারা শহিদের মতো। তবে তাদের গোসল ও কাফন সাধারণ মৃতদের মতোই হবে। (ফাতহুল কাদির, ২/১০৩; আদ-দুররুল মুখতার, ২/২৫২)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম
স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে কোরআন তেলাওয়াত করতে হয়
পবিত্র কোরআনের ছবি। ইন্টারনেট

নামাজে তারতিলের (স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে) সঙ্গে পরিষ্কারভাবে কিরাত পাঠ করা বা কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘আর কোরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত: ৪)

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআনকে তোমাদের সুর দিয়ে সৌন্দর্যমণ্ডিত করো।’ (ইবনে মাজহ, হাদিস : ১৩৪২)

নামাজে লাহনে জলি বা মারাত্মক ভুল পড়ার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায় এবং লাহনে খফি বা অসুন্দর পড়ার দ্বারা নামাজ মাকরুহ হয়ে যায়। মারাত্মক ভুল যেমন—ভিন্ন মাখরাজের ভুল উচ্চারণ। যদিও শুনতে কাছাকাছি মনে হয়। হরকত বা জের, জবর ও পেশের পরিবর্তন। যার দ্বারা অর্থের সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়, এমনকি কুফরিও হয়ে যায়। মদের হরফকে টেনে না পড়া। 

আরও পড়ুন: জোহর-আসর নামাজে অনুচ্চস্বরে কিরাত পড়তে হয় কেন?

অসুন্দর পড়া যেমন—গুন্নাহ, ঈদগাম, ইজহার, ইখফা ও কলকলা ইত্যাদি যথাযথ নিয়মে আদায় না করা। এর দ্বারা অর্থ ঠিক থাকে, কিন্তু তেলাওয়াত অসুন্দর হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কোরআনকে সুন্দর স্বরে পড়ে না, সে আমার দলভুক্ত নয়।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৫২৭)

নামাজে কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে মধ্যপন্থায়। আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও, তোমরা আল্লাহ বা রহমান যে নামেই ডাকো না কেন, সব সুন্দর নাম তো তাঁরই। নামাজে তোমাদের স্বর খুব উচ্চ বা অতিশয় ক্ষীণ করো না, বরং এ দুইয়ের মধ্যপন্থা অবলম্বন করো।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১১০) 

নামাজে যে পরিমাণ কেরাত যথেষ্ট, তার সর্বনিম্ন পরিমাণ ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে এক আয়াত। আর ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ (রহ.)-এর মতে, ছোট তিন আয়াত অথবা দীর্ঘ এক আয়াত।

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?
নামাজ আদায় করছেন এক নারী। ছবি: ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গরমকালে মাঝেমধ্যে থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরি আমি। এর হাতা কব্জি ও কনুইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর সাথে ছোট ওড়না পরে নামাজ পড়লে রুকুর সময় ও রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায় হাতের খালি অংশ খোলা দেখা যায়। হাতের এতটুকু অংশ খোলা থাকলে নামাজে কোনো সমস্যা হবে?

খাদিজা আখতার, নারায়ণগঞ্জ

উত্তর: থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়া অবস্থায় হাতের খালি অংশ যদি এক রোকন পরিমাণ (তিন তাসবিহ পড়ার পরিমাণ) বা তার চেয়ে বেশি সময় অনাবৃত থাকে, তা হলে নামাজ বিশুদ্ধ হবে না। কেননা নামাজে নারীদের হাত কব্জি পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবশ্যক। হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত এ অংশ থেকে এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি এক তাসবিহ পরিমাণ খোলা থাকে এবং এ অবস্থায় এক রোকন পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়, তা হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ ধরনের জামা পরে ছোট ওড়না দিয়ে নামাজ আদায় করা নিরাপদ নয়। সামান্য অসতর্কতার কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ছোট হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়তে চাইলে করণীয় হলো, বড় ওড়না বা হিজাব পরে নেওয়া। যেন হাতের খোলা এ অংশ নামাজের সময় অনাবৃত না হয় এবং নামাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও না থাকে। (আলমাবসুত, সারাখসি, ১/২৯৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৯; রদ্দুল মুহতার, ১/৪০৯)

আরও পড়ুন: ডায়মন্ডের গয়নার জাকাত দিতে হবে?

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফতোওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১০৬)

ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তা হলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়- নামাজ নষ্ট হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৭৯, তাবইনুল হাকায়েক, ১/৯৭) 


লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক