পুরুষের জন্য সর্বদা টাখনুর ওপর কাপড় পরা আবশ্যক। তদুপরি নামাজের সময় টাখনুর ওপর কাপড় তোলার বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি নামাজের মধ্যে টাখনুর নিচে কাপড় পরে, সে নামাজের মধ্যে আছে নাকি হারামের মধ্যে আছে—তাতে আল্লাহর কিছু আসে-যায় না।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৬৩৭)
নামাজে টাখনুর নিচে কাপড় পরা গুনাহের কাজ। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি এক বেদুঈনকে দেখলেন যে, সে তার লুঙ্গি (টাখনু গিরার নিচে) ঝুলিয়ে নামাজ আদায় করছে। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি নামাজে লুঙ্গি (কাপড় টাখনু গিরার নিচে) ঝুলিয়ে রাখে, সে যেন আল্লাহর হালাল-হারামের সীমারেখার কোনো তোয়াক্কা করল না। (মুজামুল কাবির, তাবরানি হাদিস, ৯৩৬৮)
নামাজে টাখনুর নিচে কাপড় পরা অন্যায় হলেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে। এ কারণে নামাজ নষ্ট হবে না। (আরিজাতুল আহওয়াজি, ৭/২৩৭; ফয়জুল বারি, ৪/৩৭৩)
আরও পড়ুন: নামাজে মাথা ঢেকে রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন প্রকার লোকের সঙ্গে আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। তারা হলো—টাখনুর নিচে কাপড় (অন্য বর্ণনায় লুঙ্গি) পরিধানকারী, খোঁটাদানকারী (অন্য বর্ণনায় এসেছে, যে খোঁটা না দিয়ে কোনো কিছু দান করে না) ও মিথ্যা কসমের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয়কারী।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন,‘যে ব্যক্তি অহংকার বশে তার লুঙ্গি মাটির সঙ্গে টেনে নিয়ে বেড়াবে, কেয়ামত দিবসে আল্লাহতায়ালা তার প্রতি দৃষ্টি দেবেন না।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৬৬৫)
টাখনুর নিচে কাপড়ের যে অংশ থাকবে, সে অংশ জাহান্নামে যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘টাখনুর নিচে কাপড়ের যেটুকু থাকবে তা জাহান্নামে যাবে।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৫৩৩০)
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক