উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পাঠের নামাজে উচ্চৈঃস্বরে এবং নিম্নস্বরে কিরাত পাঠের নামাজে নিম্নস্বরে সুরা ফাতিহা পাঠ করা ফরজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার নামাজ হলো না।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৬৫; মুসলিম, হাদিস: ৭৬০)। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম তিরমিজি, ইমাম আহমদ, ইমাম আবু দাউদ (রহ.) প্রমুখ বলেছেন, এখানে একাকী নামাজের কথা বলা হয়ছে। জামাতের নামাজে ইমামের কিরাত মুসল্লির কিরাত হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘যখন কোরআন পড়া হয় তখন তা মনোযোগ দিয়ে শোনো এবং চুপ থাকো। যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ২০৪)
সুতরাং জামাতের নামাজে ইমাম যখন সুরা ফাতিহাসহ কোরআন থেকে কিরাত পড়বেন, মুসল্লিরা তখন তা মনোযোগসহ শুনবেন।
জামাতে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা পাঠের পর কোনো মুসল্লি অন্য কোনো সুরা পাঠ করবেন না। উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) বলেন, ‘একবার আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে নামাজ আদায় করছিলাম। নামাজে কিরাত পাঠে তাঁর কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল। নামাজ শেষে তিনি বললেন, তোমরা সম্ভবত তোমাদের ইমামের পেছনে কিরাত পাঠ করছিলে? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন, এমনটি আর করো না। তবে তোমাদের সুরা ফাতিহা পাঠের বিষয়টি স্বতন্ত্র। কারণ যে ব্যক্তি নামাজে সুরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার নামাজই হলো না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩১১; আবু দাউদ, হাদিস: ৮২৩)
আরও পড়ুন: নামাজে আউজুবিল্লাহি ও বিসমিল্লাহি পড়া
যদি কারও সুরা ফাতিহা না জানা থাকে, তাহলে তিনি দ্রুত সুরা ফাতিহা শিখবেন। শেখার আগ পর্যন্ত সুরা ফাতিহা পাঠের জায়গায় পবিত্র কোরআনের যেকোনো আয়াত বা আয়াতাংশ পাঠ করবেন। আর যদি পবিত্র কোরআনের কোনো অংশই তার জানা না থাকে, তাহলে সুরা ফাতিহা পাঠের জায়গায় তিনি কী পড়বেন সে বিষয়টি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহ রাসুল, আমি কোরআন মুখস্থ করতে পারি না। অতএব আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন, যা আমি কোরআনের পরিবর্তে পাঠ করতে পারি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তুমি বলো—
বাংলা উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৮৩২)
লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক