ঢাকা ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
English
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বইমেলায় ইসলামি লেখক ফোরামের আয়োজন

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পিএম
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ পিএম
বইমেলায় ইসলামি লেখক ফোরামের আয়োজন
ইসলামি বইমেলার মূল মঞ্চে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

ইসলামি বইমেলায় তারকা আলেম লেখকদের গল্প শুনে মুগ্ধ হয়েছেন শ্রোতারা। নবীনরা পেয়েছেন লেখক হওয়ার অনুপ্রেরণা ও পাথেয়। পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল এক অন্যরকম ভালোলাগা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের আয়োজনে বায়তুল মোকাররমের পূর্ব চত্বরে ইসলামি বইমেলার মূল মঞ্চে এ মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান হয়। ‘লেখক হওয়ার গল্প শুনি’ ছিল অনুষ্ঠানের মূল বিষয়। এতে দেশের বিশিষ্ট আলেম লেখকরা তাদের লেখক হওয়ার গল্প বলেছেন।

লেখকদের গল্পে উঠে এসেছে কেন তারা লেখক হলেন, কীভাবে হলেন, কাদের লেখা পড়েছেন, লেখালেখির কৌশল কী ইত্যাদি। শ্রোতারা বেশ প্রেরণা ও খোরাক পেলেন তাদের কথায়। শ্রোতাদের কেউ কেউ প্রশ্নও করলেন। লেখকরা সাধুবাদ জানিয়ে চমৎকার করে উত্তর দিলেন। প্রাণবন্ত এক আড্ডায় রূপ নিয়েছিল সে আয়োজন। যেন লেখকদের সাহিত্যসভা চলছে। 

বিকেল ৪টার আগেই মূল মঞ্চে দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ে। বেলা গড়াবার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীর কলকাকলি বাড়তে থাকে। তাদের চোখে-মুখে নতুন কিছু জানবার আগ্রহ। পাথেয় সংগ্রহের তৃষ্ণা। অনেকের হাতে বই। কারও হাতে খাতা-কলম। অতিথিরাও যথাসময়ে শুনিয়ে গেলেন জীবনের গল্প। তন্ময় হয়ে শুনলেন অনেকে। কেউ নোট করলেন পছন্দের কথা। মনে গাঁথলেন ভালো লাগার অমৃত বাণী। কেউ কেউ প্রশ্নও ছুঁড়লেন লেখককে। 

ফোরামের সভাপতি মুনীরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমিন ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে লেখক হওয়ার গল্প শোনান বিশিষ্ট লেখক ও মুহাদ্দিস মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন, মাসিক আদর্শ নারীর সম্পাদক মুফতি আবুল হাসান শামসাবাদী, মাসিক মদিনার সম্পাদক আহমদ বদরুদ্দীন খান, লেখক ও শিক্ষক জুবাইর আহমদ আশরাফ, ঢাকামেইলের বার্তা সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর, লেখক ও সাংবাদিক মাসউদুল কাদির, লেখক ও শিক্ষাবিদ মাওলানা মুসলেহুদ্দীন গহরপুরী, লেখক ও আলোচক হাবিবুর রহমান মিছবাহ, লেখক ও শিক্ষক আমীর ইবনে আহমদ, লেখক ও প্রকাশক মাহমুদুল ইসলাম, লেখক ও প্রকাশক মুফতি আমিমুল এহসান, লেখক আব্দুল মুমিন প্রমুখ। এ ছাড়া ইসলামি লেখক ফোরামের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। 

গল্প শোনার ফাঁকে ফাঁকে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়। উপস্থিত সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগতাও হয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০ জনের হাতে তুলে দেওয়া হয় চমৎকার চমৎকার গ্রন্থ। 

লেখক ফোরামের এ আয়োজনটি যেন শেষ হতে চাইছিল না। সময় ফুরিয়ে যায়, গল্প ফুরোয় না। কিন্তু রাত গভীর হওয়ার আগেই যে ভাঙতে হবে গল্পের আসর। পথ ধরতে হয় গন্তব্যের। এক সময় মজমা ভাঙলেও শ্রোতাদের মন পড়ে থাকে লেখকদের গল্পে। এ গল্পের ফিতা দীর্ঘ হলে বেশ হয়। কুড়ানো যাবে আরও মণিমুক্তা, জীবন চলার পাথেয়। মুগ্ধতার আবহ ছড়িয়ে থাকে লেখক ও শ্রোতাদের দেহ ও প্রাণে। মুগ্ধতা ও পাথেয় নিয়ে ফিরেন তারা।

রায়হান/সালমান/

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
শিল্পীর তুলিতে আঁকা নামাজরত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। এটি তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে তাকবির বলে হাত বেঁধে পড়তে হয়। রুকুর আগে পাঠ করতে হয়। আসিম আল আহওয়াল (রহ.) বলেন, ‘আমি আনাস ইবনে মালেক (রা.)-কে নামাজে (দোয়া) কুনুত পড়তে হবে কিনা এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তে হবে। আমি বললাম, রুকুর আগে নাকি পরে? তিনি বললেন, রুকুর আগে। আমি বললাম, অমুক ব্যক্তি আপনার সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, আপনি রুকুর পর কুনুত পাঠ করার কথা বলেছেন। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) মাত্র এক মাস পর্যন্ত রুকুর পর কুনুত পাঠ করেছেন। এর কারণ ছিল, নবি (সা.) সত্তরজন কারির একটি দল মুশরিকদের কাছে কোনো এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাদের মধ্যে চুক্তি ছিল। তারা (আক্রমণ করে সাহাবিদের ওপর) বিজয়ী হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের প্রতি বদদোয়া করে নামাজে রুকুর পর এক মাস পর্যন্ত কুনুত পাঠ করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৭৯৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিতর নামাজে সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া পড়তে নির্দেশ করেননি। বরং এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর যেকোনো একটি পড়লেই কুনুত আদায় হয়ে যাবে। ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) বিতরের নামাজে আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা দোয়া পড়া পছন্দ করতেন এবং অন্যকে পড়তে আদেশ করতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৪৯৯৭)

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা ইনুকা, ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতা ওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়ানুস নি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু, মাই য়াফ জুরুকা, আল্লাহুম্মা ইইয়াকা নাবুদু, ওয়া লাকা নুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা, ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করছি। আপনার কাছে ক্ষমার আবেদন করছি। আপনার কাছে তওবা করছি। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। আপনার ওপর ভরসা করছি। আপনার সব কল্যাণের প্রশংসা করছি। আমরা আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করি না। আমরা পৃথক চলি এবং পরিত্যাগ করি এমন লোকদের, যারা আপনার বিরুদ্ধাচরণ করে। হে আল্লাহ, আমরা আপনারই ইবাদত করি। এবং আপনারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা নামাজ পড়ি ও সিজদা করি। আপনার প্রতিই আমরা ধাবিত হই এবং আমরা আপনার আজাব ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রকৃত আজাব কাফেরদের ওপর পতিত হবে। (শরহু মাআনিল আসার, হাদিস: ১৪৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৩০৩৩৫) 

হাদিসে বর্ণিত দুটি দোয়া কুনুত
এক. আবুল হাওরা (রহ.) বলেন, একবার হাসান ইবনে আলি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন, যা আমি বিতরের নামাজে পাঠ করি। রাবি ইবনে জাওয়াস (রহ.)-এর বর্ণনায় আছে বিতরের দোয়া কুনুতে পড়ি। তা হলো—

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাহ দিনি ফিমান হাদায়তা, ওয়া আফিনি ফিমান আফায়তা, ওয়া তা ওয়াল্লানি ফিমান তাওয়াল্লাইতা, ওয়া বারিক লি ফিমা আতিইতা, ওয়া কিনি শাররা মা কাদাইতা, ইন্নাকা তাকদি ওয়ালা জুকদা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লায়া জিল্লু মান ওয়া লাইতা ওলা য়াইজজু মান আদাইতা, তাবারাকতা রবানা ওয়া তা আলাইতা। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২৫, তিরমিজি, হাদিস: ৪৬৪)

দুই. ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তিনি বিতরের কুনুতের জন্য এ দোয়া পড়তেন— 

বাংলা উচ্চারণ: লাকাল হামদু মালা আস সামাওয়াতিস সাবয়ি, ওয়া মালাআ আরজিনাস সাবয়ি, ওয়া মালাআ মা বাইনাহুমা মিন শাইয়িম বাদু, আহলাস সানায়ি ওয়াল মাজদি, আহাক্কু মাকালাল আবদু, কুলুনা লাকা আবদুন লা মানিআ লিমা আতাইতা, ওয়ালা মুতিআ লিমা মানাতা, ওয়ালা ইয়ান ফাউ জাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৬৯৬২) 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: আমার প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নেফাস ছিল ১৮ দিন। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর ২০ দিন রক্ত আসে। এরপর ১৬ দিন রক্ত দেখা যায়নি। পরে আবার ৬ দিন স্রাব এসেছে। জানার বিষয় হলো, এক্ষেত্রে আমি কতদিন নেফাস গণ্য করব?

উমারা হাবিব, নেত্রকোণা

উত্তর: প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার ২০তম দিনে রক্ত বন্ধ হওয়ার পর নেফাসের সর্বোচ্চ সময়সীমা ৪০ দিনের ভেতর আবার রক্ত দেখা গেলেও তা যেহেতু ৪০ দিন অতিক্রম করে গেছে, তাই এক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রথম সন্তান প্রসবোত্তর নেফাসের সময়সীমা অনুযায়ী ১৮ দিন নেফাস গণ্য করবেন। এর পরবর্তী দিনগুলো এক্ষেত্রে ইস্তিহাজা বা রোগ গণ্য হবে। তাই ১৮তম দিনের পর থেকে পবিত্রতা অর্জন করে নামাজ পড়া আপনার ওপর ফরজ ছিল। সুতরাং ১৮তম দিনের পর যে দিনগুলোতে রক্ত দেখা গেছে, তখন যদি নামাজ না পড়ে থাকেন, তা হলে তা কাজা করে নিতে হবে। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া, ১/২২৩; রদ্দুল মুহতার, ১/৩০০)

আরও পড়ুন: কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?

সন্তান প্রসবের পর নারীর জরায়ু থেকে যে রক্ত ঝরে, সেই অবস্থাকে নেফাস বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। এর সর্বনিম্ন সীমা নেই, অল্প কিছুক্ষণও হতে পারে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নেফাসের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন ৪০ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তা হলে ভিন্ন কথা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৬৪৯)

উসমান ইবনে আবুল আস (রা.) বলেন, ‘নেফাসগ্রস্ত মহিলাদের সময়সীমা ৪০ দিন। তবে যদি এর আগেই পবিত্র হয়ে যায়, (তা হলে পবিত্রতার বিধান শুরু হয়ে যাবে) অন্যথায় ৪০ দিন পর নামাজ শুরু করতে বিলম্ব করবে না।’ (মুসনাদে দারেমি, বর্ণনা: ১০৩৭)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গত বছর রমজানের শেষদিকে আমার দাদা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণে তার ছয়টি রোজা কাজা হয়ে যায়। ওই অসুস্থতার মধ্যেই ঈদের তিন দিন পর তিনি মারা যান। জানার বিষয় হলো, আমার দাদার ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দিতে হবে?

সাব্বির রহমান, পঞ্চগড়

উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার দাদা যেহেতু সুস্থ হয়ে রোজাগুলো কাজা করার সময় পাননি; বরং ওই অসুস্থতার মধ্যেই মারা গেছেন। তাই তার ওপর ওই রোজাগুলোর কাজা ওয়াজিব হয়নি। সুতরাং ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দেওয়া আবশ্যক হবে না। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি রমজানে অসুস্থ হয় (যার কারণে রোজা রাখতে পারেনি) এবং উক্ত অসুস্থতার মাঝেই মারা যায়, তা হলে তার ওপর কোনো কিছু ওয়াজিব নয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক, বর্ণনা: ৭৬৩০; আননাহরুল ফায়েক, ২/২৯; আদ্দুররুল মুখতার, ২/৪২৪)

আরও পড়ুন: মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। নির্দিষ্ট কয়েক দিন, তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, কিংবা সফরে থাকবে, তা হলে সে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর রোজা পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩-১৮৪)

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, ‘এ আয়াতটি মানসুখ (রহিত) হয়নি, বরং আয়াতটি ওইসব অতিশয় বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা রোজা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাওয়াবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৪৫০৫) 

প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো, সদকায়ে ফিতরের সমান তথা অর্ধ ‘সা’ বা ১.৫ কিলোগ্রাম খাবার। কোনো ব্যক্তি রোজা রাখতে একান্ত অপারগ হলে সে প্রতিদিন একজন দরিদ্রকে পেট ভরে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারবে। (আল ইনায়াহ, ২/২৭৩)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

দোয়া কুনুত কি, কখন পড়তে হয়?

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ এএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪০ এএম
দোয়া কুনুত কি, কখন পড়তে হয়?
নামাজ আদায়রত মুসল্লির ছবি। ইন্টারনেট

দোয়া কুনুত একটি বিশেষ দোয়া। এর মাধ্যমে একজন মুমিন তার অন্তরের প্রশান্তি লাভ করেন এবং আল্লাহর প্রতি আরও বেশি আত্মসমর্পণ করেন। জীবনের কঠিন সময়ে আল্লাহর সাহায্য পান। তাই এ দোয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক।

দোয়া কুনুত কখন পড়বেন
সাধারণত দোয়া কুনুত বলতে বিতরের নামাজের দোয়াকে বোঝায়। আর এটা বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে কিরাতের পর তাকবির বলে পড়তে হয়। আসওয়াদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) (বিতরের নামাজে) যখন কিরাত পড়া শেষ করতেন তখন তাকবির বলতেন। এরপর যখন দোয়া কুনুত পড়া শেষ করতেন তখন তাকবির বলে রুকু করতেন। (মুজামে কাবির, তাবরানি, হাদিস: ৯১৯২)

তাকবির বলার পর রুকুর আগে কুনুত পড়তে হয়। যদিও এ নিয়ে দ্বিমত পাওয়া যায়। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিন রাকাত বিতর পড়তেন। প্রথম রাকাতে সুরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন ও তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়তেন এবং রুকুর আগে কুনুত পড়তেন।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১৬৯৯, ইবনে মাজা, হাদিস: ১১৮২)

আরও পড়ুন: নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?

দোয়া কুনুতের সময় হাত বাঁধা
বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে কিরাতের পর তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা-না বাঁধার ক্ষেত্রে তিনটি পদ্ধতির কথা জানা যায়।

১. দোয়ার মতো হাত উঠিয়ে রাখা। 
২. তাকবির বলে হাত ছেড়ে দেওয়া। 
৩. কিয়ামের মতো দুই হাত বেঁধে নেওয়া। 

প্রথম পদ্ধতিটি হানাফি ইমামদের কাছে পছন্দনীয় নয়। কেননা নামাজের যত জায়গায় দোয়া আছে, কোথাও হাত উঠানোর নিয়ম নেই। সুতরাং দোয়ায়ে কুনুতের সময়ও এর ব্যতিক্রম হবে না।  ইবনে উমর (রা.) এই পদ্ধতি বেদআত বলেছেন। তিনি বলেন, দেখ, তোমরা যে ফজরের নামাজেও ইমামের কিরাত শেষে কুনুতের জন্য দাঁড়াও, আল্লাহর কসম, এটা বেদআত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তা শুধু এক মাস করেছেন। দেখ, তোমরা যে নামাজের হাত তুলে কুনুত পড়ো, আল্লাহর কসম, এটিও বেদআত। রাসুলুল্লাহ (সা.) তো শুধু কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলতেন। (মাজমাউজ জাওয়াইদ, ২/১৩৭)। উল্লিখিত পদ্ধতিগুলোর মধ্যে তৃতীয় পদ্ধতিটিই সুন্নাহ সম্মত। কেননা দাঁড়ানো অবস্থায় হাত বাঁধা সুন্নত। 

কুনুতে নাজেলা কখন পড়বেন
মুসলমানদের ওপর যদি ব্যাপক বিপদাপদ আসে, তা হলে সেক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালার কাছে সাহায্য পাওয়ার উদ্দেশ্যে কুনুতে নাজেলা পড়া মুস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বিপদ আপতিত হলে ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সময় কুনুতে নাজেলা পড়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের নামাজের সময় সর্বদা কুনুত (নাজেলা) পড়তেন না। শুধু পড়তেন কোনো জাতির জন্য দোয়া করতে বা বদদোয়া করার প্রয়োজন হলে। তিনি কুনুত পড়তেন যখন ফজরের নামাজের দ্বিতীয় রাকাতের রুকু থেকে মাথা উঠাতেন।’ (ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১০৯৭)

কুনুতে নাজেলা পড়ার পদ্ধতি হলো ফজরের নামাজের ফরজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে দোয়া পড়বেন, আর মুসল্লিরা আস্তে আস্তে আমিন বলবেন। দোয়া শেষে নিয়ম মোতাবেক সিজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন। (ইলাউস সুনান, ৬/৮১)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক
 

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?

প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ এএম
নামাজের পর আয়াতুল কুরসি কেন পড়বেন?
শিল্পীর তুলিতে আঁকা ইবাদতরত নারীর ছবি। ইন্টারনেট

পবিত্র কোরআনে ফজিলতপূর্ণ বিশেষ কিছু আয়াত ও সুরা আছে। এসবের মধ্যে আয়াতুল কুরসি অন্যতম। একাধিক হাদিসে আয়াতুল কুরসি পড়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কেননা এর সঙ্গে রয়েছে আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং দৈনন্দিন জীবনে কল্যাণকর প্রভাব। এ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো।

নামাজের পর আয়াতুল কুরসি
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত এই আমল করতেন। অন্যদের পড়তে উৎসাহিত করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে শুধু মৃত্যুই বাধা হয়ে থাকবে। অর্থাৎ মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১০০, তাবারানি, কাবির, হাদিস: ৭৪০৮)

আরও পড়ুন: মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

আয়াতুল কুরসির বরকত
প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ শুধুমাত্র জান্নাতের পথে সহজতা সৃষ্টি করে না; বরং দৈনন্দিন জীবনের অশান্তি, মানসিক অস্থিরতা এবং শয়তানের প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে রমজানের জাকাত (সাদকাতুল ফিতরের) হেফাজতের দায়িত্ব দেন। এরপর আমার কাছে এক আগন্তুক আসল। সে তার দুহাতের কোষ ভরে খাদ্যশস্য গ্রহণ করতে লাগল। আমি তাকে ধরে বললাম, আমি অবশ্যই তোমাকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। তখন সে একটি হাদিস উল্লেখ করল এবং বলল, যখন তুমি বিছানায় শুতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে সর্বদা আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন হেফাজতকারী থাকবে এবং ভোর হওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে শয়তান আসতে পারবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ ঘটনা শুনালে তিনি বললেন, ‘সে তোমাকে সত্য বলেছে, অথচ সে মিথ্যাবাদী এবং শয়তান ছিল।’ (বুখারি, হাদিস: ৩০৪৫)

আয়াতুল কুরসিতে ইসমে আজম
আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, এ আয়াতে ১০টি বাক্য রয়েছে। প্রতিটি বাক্যের সঙ্গেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিক্ষা রয়েছে। তাছাড়া আয়াতুল কুরসির মধ্যে ইসমে আজম আছে। কাসিম (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর ইসমে আজম যা দিয়ে দোয়া করলে তা কবুল করা হয়, তা তিনটি সুরায় রয়েছে। সুরা বাকারা, সুরা আলে ইমরান ও সুরা তোহা।’ (ইবনে মাজা, হাদিস: ৩৮৫৬) 

ইসমে আজমের প্রথম বাক্য, আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। দ্বিতীয়টি হলো, ওয়া ইলা হুকুম ইলাহুন ওয়াহিদ, লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রহিম। তৃতীয়টি হলো, আলিফ-লাম-মিম। আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৭৮) 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });