ফজর ও জুমার নামাজের উভয় রাকাতে এবং জোহর, আসর, মাগরিব ও এশার প্রথম দুই রাকাতে আর সুন্নত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহা পাঠ করার পর অন্য সুরা বা সুরাংশ পাঠ করতে হয়। আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে আরও দুটি সুরা পাঠ করতেন। প্রথম রাকাত দীর্ঘ করতেন আর দ্বিতীয় রাকাত করতেন সংক্ষিপ্ত। কখনো কোনো আয়াত শুনিয়েও পড়তেন। আসরের নামাজেও তিনি সুরা ফাতিহার সঙ্গে দুটি সুরা পাঠ করতেন এবং প্রথম রাকাত দীর্ঘ করতেন। ফজরের প্রথম রাকাত দীর্ঘ করতেন এবং দ্বিতীয় রাকাত করতেন সংক্ষিপ্ত।’ (বুখারি, হাদিস: ৭৫৯)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘মদিনার ইমাম ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিকে আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে এতটা সাদৃশ্যপূর্ণ নামাজ আর আদায় করতে দেখিনি। সুলাইমান ইবনে ইয়াসার (রহ.) বলেন, এ কথা শোনাার পর আমি মদিনার ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করলাম। আমি দেখলাম, তিনি জোহরের প্রথম দুই রাকাত নামাজ লম্বা করতেন আর শেষের দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত করতেন। আসরের নামাজও সংক্ষিপ্ত করতেন। মাগরিবের দুই রাকাতে তিনি কিসারুল মুফাসসাল (সুরা দুহা থেকে সুরা নাস পর্যন্ত সুরাগুলোকে কিসারুল মুফাসসাল বলা হয়) থেকে সুরা পড়তেন। এশার দুই রাকাতে তিনি আওসাতুল মুফাসসাল (সুরা নাবা থেকে সুরা দুহা পর্যন্ত সুরাগুলোকে আওসাতুল মুফাসসাল বলা হয়) থেকে এবং ফজরের দুই রাকাতে তিনি তিওয়ালুল মুফাসসাল (সুরা কফ থেকে নাবা পর্যন্ত সুরাগুলোকে তিওয়ালুল মুফাসসাল বলা হয়) থেকে সুরা পাঠ করতেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৮৩৬৬)
আরও পড়ুন: মুহতামিম ও শিক্ষকের জন্য বোর্ডগুলোর সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা দরকার
একাকী নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে দীর্ঘ কিরাত পাঠ করা এবং জামাতে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কিরাত পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। তিনি বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ ইমামতি করবে, তখন সে যেন (কিরাত) সংক্ষিপ্ত করে। কারণ মুসল্লিদের মধ্যে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ ব্যক্তি থাকে। আর যখন সে একাকী নামাজ আদায় করবে, তখন যে পরিমাণ দীর্ঘ করতে চায় করবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৭০৩)
ইমামের কিরাত মুসল্লি বা মুক্তাদির জন্য যথেষ্ট বিবেচিত হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমরা নামাজে দাঁড়াও তখন কাতার সোজা করে নাও। তারপর তোমাদের একজন ইমাম হও। যখন সে (ইমাম) তাকবির বলবে, তখন তোমরা তাকবির বলো। আর যখন সে (ইমাম) কিরাত পড়বে, তখন তোমরা চুপ থাকো। এরপর যখন সে (ইমাম) গাইরিল মাগজুবি আলাইহিম ওয়ালাজজল্লিন বলবে, তখন তোমরা বলো আমিন। আল্লাহতায়ালা তোমাদের দোয়া কবুল করবেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪০৪)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক