ঢাকা ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
English

হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?
নামাজ আদায় করছেন এক নারী। ছবি: ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গরমকালে মাঝেমধ্যে থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরি আমি। এর হাতা কব্জি ও কনুইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর সাথে ছোট ওড়না পরে নামাজ পড়লে রুকুর সময় ও রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায় হাতের খালি অংশ খোলা দেখা যায়। হাতের এতটুকু অংশ খোলা থাকলে নামাজে কোনো সমস্যা হবে?

খাদিজা আখতার, নারায়ণগঞ্জ

উত্তর: থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়া অবস্থায় হাতের খালি অংশ যদি এক রোকন পরিমাণ (তিন তাসবিহ পড়ার পরিমাণ) বা তার চেয়ে বেশি সময় অনাবৃত থাকে, তা হলে নামাজ বিশুদ্ধ হবে না। কেননা নামাজে নারীদের হাত কব্জি পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবশ্যক। হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত এ অংশ থেকে এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি এক তাসবিহ পরিমাণ খোলা থাকে এবং এ অবস্থায় এক রোকন পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়, তা হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ ধরনের জামা পরে ছোট ওড়না দিয়ে নামাজ আদায় করা নিরাপদ নয়। সামান্য অসতর্কতার কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ছোট হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়তে চাইলে করণীয় হলো, বড় ওড়না বা হিজাব পরে নেওয়া। যেন হাতের খোলা এ অংশ নামাজের সময় অনাবৃত না হয় এবং নামাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও না থাকে। (আলমাবসুত, সারাখসি, ১/২৯৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৯; রদ্দুল মুহতার, ১/৪০৯)

আরও পড়ুন: ডায়মন্ডের গয়নার জাকাত দিতে হবে?

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফতোওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১০৬)

ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তা হলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়- নামাজ নষ্ট হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৭৯, তাবইনুল হাকায়েক, ১/৯৭) 


লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

দোয়া কুনুত না পড়লে বিতরের নামাজ হবে?

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৯ পিএম
দোয়া কুনুত না পড়লে বিতরের নামাজ হবে?
সিজদারত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

বিতর নামাজ ওয়াজিব। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বিতর নামাজ হক ও ওয়াজিব।’ (দারা কুতনি, হাদিস: ১৬৪০)। তাউস (রহ.) তার পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন, ‘বিতর নামাজ ওয়াজিব। কাজা হয়ে গেলে তা আদায় করতে হবে।’ (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৪৫৮৭) 

অন্যান্য নামাজের মতোই বিতর নামাজ আদায় করতে হয়। তবে তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে তাকবির বলে হাত বেঁধে দোয়া কুনুত পড়তে হয়। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন। আবু বকর (রা.)ও মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন, উমর (রা.)ও মৃত্যু পর্যন্ত কুনুত পড়েছেন।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ, ১/১৩৯)

দোয়া কুনুত না পারলে করণীয়
রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া কুনুত হিসেবে বিভিন্ন দোয়া পাঠ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো দ্রুত শেখা উচিত। দোয়া কুনুত না পারলে ‘রাব্বানা আতি না ফিদ্দুন ইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়া কি না আজাবান নার’ এই আয়াত পাঠ করা যায়। কুনুতের উদ্দেশ্যে দোয়াসংবলিত এক বা একাধিক আয়াতও পড়া যায়। ‘আল্লাহুম্মাগ ফিরলি’ তিনবার পাঠ করলেও বিতর আদায় হয়ে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১৭০, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া,২/৩৪৪)

আরও পড়ুন: দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। দোয়া কুনুত ছাড়া নামাজ আদায় হয় না। পুনরায় নামাজ আদায় করতে হয়। যদি ভুলক্রমে বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়া হয়, তা হলে সিজদায়ে সাহু করতে হয়। অন্যথায় বিতর নামাজ সহিহ হবে না। হাসান (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দোয়া কুনুত ভুলে যায়, সে সিজদায়ে সাহু আদায় করবে।’ (সুনানুল কুবরা, বাইহাকি, হাদিস: ৩৯৮৩)‬‎

দোয়া কুনুত না পড়ে ভুলে রুকুতে চলে গেলে দোয়া কুনুতের জন্য রুকু থেকে ফিরে আসার প্রয়োজন নেই। বরং যথারীতি বাকি নামাজ পূর্ণ করে সাহু সিজদার মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে। অবশ্য রুকু থেকে উঠে দোয়া কুনুত পড়লে পুনরায় রুকু করবে না। কারণ রুকু থেকে উঠে দোয়া কুনুত পড়ার দ্বারা আগের রুকু বাতিল হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রেও সিজদায়ে সাহু করতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে, ১/৪১৩; ফাতাওয়া খানিয়া, ১/১২১)

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা ইনুকা, ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতা ওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়ানুস নি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু, মাই য়াফ জুরুকা, আল্লাহুম্মা ইইয়াকা নাবুদু, ওয়া লাকা নুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা, ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করছি। আপনার কাছে ক্ষমার আবেদন করছি। আপনার কাছে তওবা করছি। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। আপনার ওপর ভরসা করছি। আপনার সব কল্যাণের প্রশংসা করছি। আমরা আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করি না। আমরা পৃথক চলি এবং পরিত্যাগ করি এমন লোকদের, যারা আপনার বিরুদ্ধাচরণ করে। হে আল্লাহ, আমরা আপনারই ইবাদত করি। এবং আপনারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা নামাজ পড়ি ও সিজদা করি। আপনার প্রতিই আমরা ধাবিত হই এবং আমরা আপনার আজাব ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রকৃত আজাব কাফেরদের ওপর পতিত হবে। (শরহু মাআনিল আসার, হাদিস: ১৪৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৩০৩৩৫)  

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

টেইলার্সের দোকানের সুতা, বোতাম ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে?

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ এএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
টেইলার্সের দোকানের সুতা, বোতাম ইত্যাদির জাকাত দিতে হবে?
সুতা, বোতাম ইত্যাদির ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: আলহামদুলিল্লাহ, আমার বড় একটি টেইলার্সের দোকান আছে। আমি জানি, যে সমস্ত জিনিস ব্যবসায়িক পণ্য নয়; বরং উপার্জনের মাধ্যম, তাতে জাকাত আসে না। তাই আমার দোকানে যেসব মেশিনারি আছে তার জাকাত দেওয়া লাগবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাপড় সেলাই করার সময় যে জিনিসগুলো ব্যবহার করা হয়; যেমন- সুতা, বোতাম, চেন, বক্রম ইত্যাদি। যা সাধারণত আমার দোকানে বিপুল পরিমাণে কিনে রাখতে হয়, এগুলোর কি জাকাত দিতে হবে? 

নুর মুহাম্মাদ, নরসিংদী

উত্তর: প্রশ্নোক্ত জিনিসগুলোর মূল্য (স্বতন্ত্রভাবে কিংবা নিজের জাকাতযোগ্য অন্য সম্পদের সাথে মিলে) জাকাতের নেসাব পরিমাণ হলে সেগুলোর জাকাত দিতে হবে। কেননা, গ্রাহকদের থেকে যেহেতু এগুলোর মূল্য নেওয়া হয়, তাই এগুলো ব্যবসায়িক পণ্যের অন্তর্ভুক্ত। তাই অন্যান্য ব্যবসায়িক পণ্যের মতো এগুলোও জাকাতযোগ্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। (ফাতাওয়া খানিয়া, ১/২৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১৭২)

আরও পড়ুন: দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

জাকাত স্বাধীন, পূর্ণ বয়স্ক এমন মুসলিম নারী-পুরুষ আদায় করবে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। তবে এর জন্য শর্ত হলো—

১.  সম্পদের ওপর পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকতে হবে।
২.  সম্পদ উৎপাদনক্ষম ও বর্ধনশীল হতে হবে।
৩.  নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে।
৪.  সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকলেই শুধু জাকাত ফরজ হবে।
৫.  জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা শর্ত।
৬.  কারও কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর থাকলেই শুধু ওই সম্পদের ওপর জাকাত দিতে হবে।

সাড়ে সাত ভরি (৮৭ দশমিক ৪৫ গ্রাম) সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমাকৃত যেকোনো ধরনের টাকা, ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

 

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পিএম
দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
শিল্পীর তুলিতে আঁকা নামাজরত ব্যক্তির ছবি। ইন্টারনেট

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ওয়াজিব। এটি তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য সুরা মিলিয়ে তাকবির বলে হাত বেঁধে পড়তে হয়। রুকুর আগে পাঠ করতে হয়। আসিম আল আহওয়াল (রহ.) বলেন, ‘আমি আনাস ইবনে মালেক (রা.)-কে নামাজে (দোয়া) কুনুত পড়তে হবে কিনা এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, হ্যাঁ পড়তে হবে। আমি বললাম, রুকুর আগে নাকি পরে? তিনি বললেন, রুকুর আগে। আমি বললাম, অমুক ব্যক্তি আপনার সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন, আপনি রুকুর পর কুনুত পাঠ করার কথা বলেছেন। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) মাত্র এক মাস পর্যন্ত রুকুর পর কুনুত পাঠ করেছেন। এর কারণ ছিল, নবি (সা.) সত্তরজন কারির একটি দল মুশরিকদের কাছে কোনো এক কাজে পাঠিয়েছিলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাদের মধ্যে চুক্তি ছিল। তারা (আক্রমণ করে সাহাবিদের ওপর) বিজয়ী হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের প্রতি বদদোয়া করে নামাজে রুকুর পর এক মাস পর্যন্ত কুনুত পাঠ করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৭৯৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বিতর নামাজে সুনির্দিষ্ট কোনো দোয়া পড়তে নির্দেশ করেননি। বরং এ বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের দোয়া বর্ণিত হয়েছে। এর যেকোনো একটি পড়লেই কুনুত আদায় হয়ে যাবে। ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) বিতরের নামাজে আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা দোয়া পড়া পছন্দ করতেন এবং অন্যকে পড়তে আদেশ করতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস: ৪৯৯৭)

দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা ইনুকা, ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতা ওয়াক্কালু আলাইকা, ওয়ানুস নি আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়া নাখলাউ ওয়া নাতরুকু, মাই য়াফ জুরুকা, আল্লাহুম্মা ইইয়াকা নাবুদু, ওয়া লাকা নুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা, ইন্না আজাবাকা বিল কুফফারি মুলহিক।

আরও পড়ুন: ৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?

দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করছি। আপনার কাছে ক্ষমার আবেদন করছি। আপনার কাছে তওবা করছি। আপনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছি। আপনার ওপর ভরসা করছি। আপনার সব কল্যাণের প্রশংসা করছি। আমরা আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করি না। আমরা পৃথক চলি এবং পরিত্যাগ করি এমন লোকদের, যারা আপনার বিরুদ্ধাচরণ করে। হে আল্লাহ, আমরা আপনারই ইবাদত করি। এবং আপনারই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা নামাজ পড়ি ও সিজদা করি। আপনার প্রতিই আমরা ধাবিত হই এবং আমরা আপনার আজাব ভয় করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রকৃত আজাব কাফেরদের ওপর পতিত হবে। (শরহু মাআনিল আসার, হাদিস: ১৪৭৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৩০৩৩৫) 

হাদিসে বর্ণিত দুটি দোয়া কুনুত
এক. আবুল হাওরা (রহ.) বলেন, একবার হাসান ইবনে আলি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে কয়েকটি বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন, যা আমি বিতরের নামাজে পাঠ করি। রাবি ইবনে জাওয়াস (রহ.)-এর বর্ণনায় আছে বিতরের দোয়া কুনুতে পড়ি। তা হলো—

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাহ দিনি ফিমান হাদায়তা, ওয়া আফিনি ফিমান আফায়তা, ওয়া তা ওয়াল্লানি ফিমান তাওয়াল্লাইতা, ওয়া বারিক লি ফিমা আতিইতা, ওয়া কিনি শাররা মা কাদাইতা, ইন্নাকা তাকদি ওয়ালা জুকদা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লায়া জিল্লু মান ওয়া লাইতা ওলা য়াইজজু মান আদাইতা, তাবারাকতা রবানা ওয়া তা আলাইতা। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৪২৫, তিরমিজি, হাদিস: ৪৬৪)

দুই. ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, তিনি বিতরের কুনুতের জন্য এ দোয়া পড়তেন— 

বাংলা উচ্চারণ: লাকাল হামদু মালা আস সামাওয়াতিস সাবয়ি, ওয়া মালাআ আরজিনাস সাবয়ি, ওয়া মালাআ মা বাইনাহুমা মিন শাইয়িম বাদু, আহলাস সানায়ি ওয়াল মাজদি, আহাক্কু মাকালাল আবদু, কুলুনা লাকা আবদুন লা মানিআ লিমা আতাইতা, ওয়ালা মুতিআ লিমা মানাতা, ওয়ালা ইয়ান ফাউ জাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৬৯৬২) 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
৪০ দিনের আগে নেফাস বন্ধ হলে করণীয় কী?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: আমার প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নেফাস ছিল ১৮ দিন। দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার পর ২০ দিন রক্ত আসে। এরপর ১৬ দিন রক্ত দেখা যায়নি। পরে আবার ৬ দিন স্রাব এসেছে। জানার বিষয় হলো, এক্ষেত্রে আমি কতদিন নেফাস গণ্য করব?

উমারা হাবিব, নেত্রকোণা

উত্তর: প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনার ২০তম দিনে রক্ত বন্ধ হওয়ার পর নেফাসের সর্বোচ্চ সময়সীমা ৪০ দিনের ভেতর আবার রক্ত দেখা গেলেও তা যেহেতু ৪০ দিন অতিক্রম করে গেছে, তাই এক্ষেত্রে আপনি আপনার প্রথম সন্তান প্রসবোত্তর নেফাসের সময়সীমা অনুযায়ী ১৮ দিন নেফাস গণ্য করবেন। এর পরবর্তী দিনগুলো এক্ষেত্রে ইস্তিহাজা বা রোগ গণ্য হবে। তাই ১৮তম দিনের পর থেকে পবিত্রতা অর্জন করে নামাজ পড়া আপনার ওপর ফরজ ছিল। সুতরাং ১৮তম দিনের পর যে দিনগুলোতে রক্ত দেখা গেছে, তখন যদি নামাজ না পড়ে থাকেন, তা হলে তা কাজা করে নিতে হবে। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া, ১/২২৩; রদ্দুল মুহতার, ১/৩০০)

আরও পড়ুন: কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?

সন্তান প্রসবের পর নারীর জরায়ু থেকে যে রক্ত ঝরে, সেই অবস্থাকে নেফাস বলা হয়। এর সর্বোচ্চ সীমা ৪০ দিন। এর সর্বনিম্ন সীমা নেই, অল্প কিছুক্ষণও হতে পারে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নেফাসের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন ৪০ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তা হলে ভিন্ন কথা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৬৪৯)

উসমান ইবনে আবুল আস (রা.) বলেন, ‘নেফাসগ্রস্ত মহিলাদের সময়সীমা ৪০ দিন। তবে যদি এর আগেই পবিত্র হয়ে যায়, (তা হলে পবিত্রতার বিধান শুরু হয়ে যাবে) অন্যথায় ৪০ দিন পর নামাজ শুরু করতে বিলম্ব করবে না।’ (মুসনাদে দারেমি, বর্ণনা: ১০৩৭)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৫ পিএম
কি কারণে রোজার ফিদিয়া দিতে হয়?
প্রতীকী ছবি। ইন্টারনেট

প্রশ্ন: গত বছর রমজানের শেষদিকে আমার দাদা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থতার কারণে তার ছয়টি রোজা কাজা হয়ে যায়। ওই অসুস্থতার মধ্যেই ঈদের তিন দিন পর তিনি মারা যান। জানার বিষয় হলো, আমার দাদার ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দিতে হবে?

সাব্বির রহমান, পঞ্চগড়

উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার দাদা যেহেতু সুস্থ হয়ে রোজাগুলো কাজা করার সময় পাননি; বরং ওই অসুস্থতার মধ্যেই মারা গেছেন। তাই তার ওপর ওই রোজাগুলোর কাজা ওয়াজিব হয়নি। সুতরাং ওই রোজাগুলোর ফিদিয়া দেওয়া আবশ্যক হবে না। এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি রমজানে অসুস্থ হয় (যার কারণে রোজা রাখতে পারেনি) এবং উক্ত অসুস্থতার মাঝেই মারা যায়, তা হলে তার ওপর কোনো কিছু ওয়াজিব নয়। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক, বর্ণনা: ৭৬৩০; আননাহরুল ফায়েক, ২/২৯; আদ্দুররুল মুখতার, ২/৪২৪)

আরও পড়ুন: মসজিদের ভেতর জানাজার নামাজ পড়া যাবে?

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। নির্দিষ্ট কয়েক দিন, তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, কিংবা সফরে থাকবে, তা হলে সে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর রোজা পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩-১৮৪)

ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, ‘এ আয়াতটি মানসুখ (রহিত) হয়নি, বরং আয়াতটি ওইসব অতিশয় বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা রোজা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাওয়াবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৪৫০৫) 

প্রত্যেক রোজার জন্য ফিদিয়ার ন্যূনতম পরিমাণ হলো, সদকায়ে ফিতরের সমান তথা অর্ধ ‘সা’ বা ১.৫ কিলোগ্রাম খাবার। কোনো ব্যক্তি রোজা রাখতে একান্ত অপারগ হলে সে প্রতিদিন একজন দরিদ্রকে পেট ভরে দুই বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে। কেউ চাইলে নগদ টাকাও দিয়ে দিতে পারবে। (আল ইনায়াহ, ২/২৭৩)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });