প্রশ্ন: গরমকালে মাঝেমধ্যে থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরি আমি। এর হাতা কব্জি ও কনুইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর সাথে ছোট ওড়না পরে নামাজ পড়লে রুকুর সময় ও রুকু থেকে উঠে দাঁড়ানো অবস্থায় হাতের খালি অংশ খোলা দেখা যায়। হাতের এতটুকু অংশ খোলা থাকলে নামাজে কোনো সমস্যা হবে?
খাদিজা আখতার, নারায়ণগঞ্জ
উত্তর: থ্রি-কোয়ার্টার হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়া অবস্থায় হাতের খালি অংশ যদি এক রোকন পরিমাণ (তিন তাসবিহ পড়ার পরিমাণ) বা তার চেয়ে বেশি সময় অনাবৃত থাকে, তা হলে নামাজ বিশুদ্ধ হবে না। কেননা নামাজে নারীদের হাত কব্জি পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবশ্যক। হাতের কব্জি থেকে কনুই পর্যন্ত এ অংশ থেকে এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি যদি এক তাসবিহ পরিমাণ খোলা থাকে এবং এ অবস্থায় এক রোকন পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়, তা হলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এ ধরনের জামা পরে ছোট ওড়না দিয়ে নামাজ আদায় করা নিরাপদ নয়। সামান্য অসতর্কতার কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ছোট হাতাবিশিষ্ট জামা পরে নামাজ পড়তে চাইলে করণীয় হলো, বড় ওড়না বা হিজাব পরে নেওয়া। যেন হাতের খোলা এ অংশ নামাজের সময় অনাবৃত না হয় এবং নামাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও না থাকে। (আলমাবসুত, সারাখসি, ১/২৯৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৯; রদ্দুল মুহতার, ১/৪০৯)
আরও পড়ুন: ডায়মন্ডের গয়নার জাকাত দিতে হবে?
নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সতর ঢেকে রাখা। নামাজে পুরুষের নাভির নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখা ফরজ। নারীদের মুখমণ্ডল, দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ও টাখনুর নিচে পায়ের পাতা ছাড়া সব অঙ্গ ঢেকে রাখা ফরজ। তবে বিনা ওজরে পুরুষের মাথা, পেট-পিঠ, হাতের কনুই খোলা রেখে নামাজ পড়লে তা আদায় হয়ে গেলেও মাকরুহ হবে। (ফতোওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১০৬)
ঢেকে রাখা অঙ্গগুলোর কোনো একটির এক-চতুর্থাংশ বা এর অধিক ইচ্ছাকৃত এক মুহূর্তের জন্য খুললেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। আর যদি অনিচ্ছাকৃত এক-চতুর্থাংশ বা ততোধিক খুলে যায়, তা হলে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। এক-চতুর্থাংশের কম হলে চাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায়- নামাজ নষ্ট হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৭৯, তাবইনুল হাকায়েক, ১/৯৭)
লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক