প্রশ্ন: অনেক সময় সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু হয়। এমন মায়ের জন্য বিশেষ সওয়াব আছে কি?
আশরাফ হাসান, বগুড়া
উত্তর: পবিত্র কোরআনে মায়ের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করে মাকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভধারণ করেছেন এবং দুই বছর দুগ্ধপান করিয়েছেন।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ১৪)। একজন গর্ভবতীর জন্য মহান আল্লাহ পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। গর্ভকালে সে আল্লাহর পথে সর্বদা রোজা পালনকারী ও সারা রাত নফল ইবাদতকারীর মতো সওয়াব পায়। তার যখন প্রসবব্যথা শুরু হয়, তখন তার জন্য নয়ন শীতলকারী কী কী নেয়ামত লুকিয়ে রাখা হয়, তা আসমান-জমিনের কোনো অধিবাসী জানে না। সে যখন সন্তান প্রসব করে তখন তার দুধের প্রতিটি ফোঁটার পরিবর্তে একটি করে নেকি দেওয়া হয়। এই সন্তান যদি কোনো রাতে তাকে জাগিয়ে রাখে (অসুখ ইত্যাদির কারণে বিরক্ত করে মাকে ঘুমাতে না দেয়), তা হলে সে আল্লাহর পথে নিখুঁত ৭০টি দাস আজাদ করার সওয়াব পাবে। (তাবরানি, হাদিস: ৬৯০৮)
সন্তান প্রসবের সময় নারী মারা গেলে শহিদের মর্যাদা পায়। তার আমলনামায় অনেক সওয়াব লেখা হয়। সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে শহিদ। পানিতে ডুবে মরলে শহিদ। পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকরী শহিদ এবং যে স্ত্রীলোক সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মারা যায়, সেও শহিদ।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৫৩০৭)
আরও পড়ুন: হাতের কনুই দেখা গেলে নামাজ হবে?
হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, ইবনুত তিন (রহ.) বলেছেন, ‘এমন মৃত্যু অনেক কষ্টের। আল্লাহতায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদির ওপর অনুগ্রহ করে এমন মৃত্যু তাদের জন্য গুনাহ মাফ ও সওয়াব বৃদ্ধির মাধ্যম বানিয়েছেন। এর মাধ্যমেই আল্লাহতায়ালা তাদের শহিদের মর্যাদায় উন্নীত করবেন।’ (ফাতহুল বারি, ৬/৫২)
শুধু সওয়াব ও মর্যাদার দিক থেকে তারা শহিদের মতো। তবে তাদের গোসল ও কাফন সাধারণ মৃতদের মতোই হবে। (ফাতহুল কাদির, ২/১০৩; আদ-দুররুল মুখতার, ২/২৫২)
লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক