প্রশ্ন: আমার আম্মু থেকে আমার ছোট খালা দুধ পান করেছে। পরবর্তী সময়ে আমার ছোট খালা থেকে আমার মেজো খালার এক মেয়ে দুধ পান করে। মেজো খালার ওই মেয়ের সঙ্গে কি আমি দেখা করতে পারব?
আলিফ রহমান, বরিশাল
উত্তর: তার সঙ্গে দেখা করতে কোনো অসুবিধা নেই। তার সঙ্গে আপনার পর্দা ফরজ নয়। আপনার ছোট খালা আপনার মায়ের দুধ পান করার কারণে সে আপনার দুধ বোন হয়ে গেছে। আর আপনার মেজো খালার মেয়ে ছোট খালার (যিনি আপনার দুধ বোন) দুধ পান করার কারণে আপনার ওই খালাতো বোন আপনার দুধ ভাগনি হয়ে গেছে। আর আপন ভাগনির মতো দুধ ভাগনিও মাহরামের অন্তর্ভুক্ত, তার সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। (বাদায়েউস সানায়ে, ৩/৩৯৮; আলমুহিতুর রাজাবি, ২/৪৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/৩৪৩)
১৪ শ্রেণির নারীকে বিয়ে করা হারাম। তাদের সঙ্গে দেখা করা যাবে। তারা হলো—
১. মা।
২. দাদি, নানি ও তাদের ওপরের সবাই।
৩. নিজের মেয়ে, ছেলের মেয়ে, মেয়ের মেয়ে ও তাদের গর্ভজাত কন্যাসন্তান।
৪. সহোদর, বৈমাত্রেয় (সৎমায়ের মেয়ে) ও বৈপিত্রেয় (সৎবাবার মেয়ে) বোন।
৫. বাবার সহোদর বোন এবং বাবার বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন।
৬. যে স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মিলন হয়েছে, তার পূর্ববর্তী বা পরবর্তী স্বামীর ঔরসজাত কন্যাসন্তান, স্ত্রীর আপন মা, নানি শাশুড়ি ও দাদি শাশুড়ি।
৭. মায়ের সহোদর বোন এবং মায়ের বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোন।
৮. ভাতিজি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় ভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানরা।
৯. ভাগনি অর্থাৎ সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কন্যাসন্তানরা।
১০. দুধমেয়ে (স্ত্রীর দুধ পান করেছে এমন), সেই মেয়ের মেয়ে, দুধছেলের মেয়ে ও তাদের পরের প্রজন্মের কোনো কন্যাসন্তান এবং দুধছেলের স্ত্রী।
১১. দুধ মা এবং তার দিকের খালা, ফুফু, নানি, দাদি ও তাদের ঊর্ধ্বতন নারীরা।
১২. দুধ বোন, দুধ বোনের মেয়ে, দুধ ভাইয়ের মেয়ে এবং তাদের গর্ভজাত যেকোনো কন্যাসন্তান। অর্থাৎ দুধ সম্পর্ককে রক্তসম্পর্কের মতোই গণ্য করতে হবে।
১৩. ছেলের স্ত্রী।
১৪. এমন দুই নারীকে একসঙ্গে স্ত্রী হিসেবে রাখা যাবে না, যাদের একজন পুরুষ হলে তাদের মধ্যে বিয়ে বৈধ হতো না। যেমন— স্ত্রীর বোন, খালা, ফুফু।
আরও পড়ুন: সুদি কারবারে জড়িত ব্যক্তি ইমাম হতে পারবে?
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগনি, দুধ মা, দুধ বোন, শাশুড়ি, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সঙ্গে সঙ্গম হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত মেয়ে যারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে, কিন্তু যদি তাদের সঙ্গে তোমরা সহবাস না করে থাক, তবে (তাদের বদলে তাদের মেয়েদের বিয়ে করলে) তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই এবং (তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং এক সঙ্গে দুই বোনকে (বিবাহবন্ধনে) রাখা, পূর্বে যা হয়ে গেছে, হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ২৩)
লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক