ঢাকা ৩০ পৌষ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

মহাবিশ্ব নিয়ে কোরআনের বিস্ময়কর তথ্য

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ এএম
আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
মহাবিশ্ব নিয়ে কোরআনের বিস্ময়কর তথ্য
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত মহাকাশের বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্রের ছবি

বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অভাবনীয় গতি, সভ্যতার অগ্রযাত্রা করেছে দ্রুততর ও বহুমাত্রিক। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের জাদুকরী স্পর্শে মানবজীবনের সর্বত্রই এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিজ্ঞানের কল্যাণে বিশ্ব আজ আমাদের ঘরের কোণায়, হাতের মুঠোয়। কোরআন শ্রেষ্ঠতম মহাবিজ্ঞান। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘শপথ বিজ্ঞানময় কোরআনের।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত: ২)

তখন ৬১০ খ্রিষ্টাব্দ। সবকিছুই ছিল নাজুক অবস্থায়। তথ্যপ্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ তখন কুসংস্কার ও প্রাচীন রূপকথায় বিশ্বাসী ছিল। সে সময় অবতীর্ণ হয় মহাগ্রন্থ আল কোরআন। যাতে রয়েছে ছয় হাজারেরও বেশি নিদর্শন বা আয়াত। যেগুলোর মধ্যে এক হাজারেরও বেশি আয়াতে বিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে। কেউ তো কোরআন বিশ্বাস করেন কোরআনের একটা আয়াত পড়েই। কেউ হয়তো কোরআনের দশটা নিদর্শন দেখে বিশ্বাস করেন। কারও হয়তো লাগে একশটা। আবার কেউ হয়তো হাজারটা নিদর্শন দেখেও কোরআন বিশ্বাস করেন না।

কোরআনের অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্য আছে, যেগুলো বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত সত্য। বিশ্বজগৎ সৃষ্টি সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞান যে তথ্য দেয় তা হলো, ‘কোটি কোটি বছর আগে প্রথমে এই বিশ্বজগতের সব উপাদান ছিল একটি বিন্দুতে। তারপর সেখানে একটি বিস্ফোরণ হয়। এর থেকেই তৈরি হয় ছায়াপথ। যেটা আবারও খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে তৈরি হয় বিভিন্ন সৌরজগৎ। সেখানে তৈরি হয় বিভিন্ন গ্রহ, সূর্য আর আমরা যে গ্রহে বাস করি—পৃথিবী। অথচ আল কোরআন বহু আগেই আমাদেরকে এ তথ্য প্রদান করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। অতঃপর আমিই এদের উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। আর আমি প্রাণবন্ত সবকিছুই সৃষ্টি করেছি পানি থেকে। তবুও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৩০)। পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে বিগ ব্যাংয়ের থিওরির কথা বলা হয়েছে খুব সংক্ষেপে। 

পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যাহা ছিল ধূম্রবিশেষ। অনন্তর তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে এসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা এলাম অনুগত হয়ে।’ (সুরা হামিম সাজদা, আয়াত: ১১) এই আয়াতের আরবি ‘দুখান’ শব্দের অর্থ হলো ধোঁয়া বা বায়বীয়। বিশ শতকের অন্যতম বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন উইলিয়াম হকিং বলেছেন, ‘বিশ্বজগৎ তৈরির আগে মহাবিশ্বের বিভিন্ন উপাদান ছিল বায়বীয় অবস্থায়। আর মহাশূন্যের যে বিভিন্ন পদার্থের উপাদান— যা আবিষ্কার করা গেছে, সেটাই গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।’ আর এগুলোর ওপর ভিত্তি করে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয় যে, বিগ ব্যাং থিওরির সত্যতা আর বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হওয়ার রহস্য।
আগেকার দিনে মানুষ মনে করত, আমরা যে পৃথিবীতে বাস করি সেটা সমতল। আর নিচে পড়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষ খুব বেশি দূরে যেতে ভয় পেত। এরপর ১৫৫৭ খ্রিষ্টাব্দে স্যার ফ্রান্সিস ড্রেক জাহাজে করে পুরো পৃথিবী ঘুরে আসেন। আর প্রমাণ করলেন পৃথিবী আসলে বর্তুল আকার। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা রাতের ভেতর দিবসকে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং রাতকে দিবসের ভেতর অন্তর্ভুক্ত করেন।’ (সুরা লুকমান, আয়াত: ২৯)

মূলত অন্তর্ভুক্ত করা একটি ধীরগতির চলমান প্রক্রিয়া। রাত ধীরে ধীরে চলমান প্রক্রিয়ায় দিনে পরিণত হয়, আর দিন ধীরে ধীরে চলমান প্রক্রিয়ায় রাতে পরিণত হয়। এটা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে, যখন পৃথিবী বর্তুল আকার হয়। অর্থাৎ সমতল হলে এটি সম্ভব হবে না। কারণ পৃথিবী সমতল হলে দিন-রাত হঠাৎ করে বদলে যেত। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এবং এটার পর তিনি (আল্লাহ) পৃথিবীকে করেছেন ডিম্বাকৃতির।’ (সুরা নাজিয়াত, আয়াত: ৩০)। এখানে আয়াতের আরবি শব্দ ‘দাহাহা’-এর অর্থ হলো ডিম্বাকৃতি। আর এই শব্দটা দিয়ে কোনো সাধারণ ডিমকে বোঝানো হয় না। শব্দটা দ্বারা বোঝানো হয় উট পাখির ডিমকে। আর এখন বিজ্ঞান বলে আমাদের পৃথিবী পুরোপুরি ফুটবলের মতো গোল নয়; বরং এটা বর্তুল আকার। এটার ওপরে আর নিচে চাপা, আর দুই পাশে কিছুটা ফোলানো। যা সম্পূর্ণ উটপাখির ডিমের মতো। একটা সময় ইউরোপিয়নরা মনে করত যে, পৃথিবী বিশ্বজগতের কেন্দ্রে একেবারে স্থির হয়ে বসে আছে। আর সূর্যসহ অন্য সব গ্রহ-নক্ষত্র পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। এই মতবাদকে বলা হতো ‘থিওরি অব জিওসেনট্রিজম’। এই মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লডিয়াস টলেমি। অবশ্য এই মতবাদ টিকে ছিল  ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ১৬০৯ খ্রিষ্টাব্দে জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইয়োহানেস কেপলার তিনি তার বই আস্ত্রোনমিয়া নোভাতে লিখেছেন, ‘এই সৌরজগতের পৃথিবী আর অন্যান্য গ্রহ শুধু সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে না; বরং তারা নিজ অক্ষের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে।’ মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহতায়ালাই সৃষ্টি করেছেন রাত এবং দিবস। আর সূর্য এবং চন্দ্র। প্রত্যেকেই নিজের কক্ষপথে বিচরণ করছে তাদের নিজস্ব গতিতে।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৩৩)

মহাগ্রন্থ আল কোরআন অপরিবর্তনীয়। সময় এবং গবেষণার ভিন্নতার কারণে যুগে যুগে বিজ্ঞানের অনেক থিওরির পরিবর্তন হয়েছে। যে কারণে বিজ্ঞানের অনেক তত্ত্ব, আবিষ্কারের প্রথম দিকে আল কোরআনের তত্ত্বের সঙ্গে পরস্পর বিরোধী হলেও পরবর্তীতে আরও বেশি গবেষণা করার কারণে তা কোরআনের তত্ত্বের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। আবার কোরআনের অনেক বিষয় আছে, যেগুলো আধুনিক বিজ্ঞান এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি। তাই কোরআনকে বিজ্ঞান দিয়ে নয়; বরং বিজ্ঞানকে কোরআন দিয়ে উপলব্ধি করা যুক্তিযুক্ত। 
 

লেখক: শিক্ষক, যশোর ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ (জেইএসসি), যশোর সেনানিবাস

 

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নেভাতে আজান দেওয়া সম্পর্কে যা জানা গেল

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:০৯ পিএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নেভাতে আজান দেওয়া সম্পর্কে যা জানা গেল
রিউমার স্ক্যানার থেকে নেওয়া ছবি।

ভয়াবহ দাবানলে পুড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) শুরু হওয়া দাবানল ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা স্থানীয় সময় গতকাল রোববার পর্যন্ত ২৪–এ পৌঁছেছে। দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  এখন পর্যন্ত প্যালেসেইডস দাবানল মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে বলে জানিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস। 

এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আগুন নেভাতে আজান দেওয়া হয়েছে- এরকম একটি ভিডিও ভাইরাল করা হয়। খালেদ আহমেদ শাহিন নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও প্রচার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লজ এঞ্জেলস শহরে আগুন নিভাতে যখন সকল প্রযুক্তি ব্যর্থ! তখনই হুজুরদের দিয়ে আযানের মাধ্যমে আল্লাহর গজব থেকে বাঁচার জন্য মিনতি করছে।’ মুহূর্তে ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। কয়েক লাখ মানুষ ভিডিওটি দেখেন। অনেকে শেয়ার করেন। কেউ কেউ মন্তব্য করেন।

প্রচারিত ভিডিওটিতে দাবি করা হচ্ছে, ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলসের আগুন নেভাতে আজান দেওয়া হয়েছে। তবে রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। এটি অন্তত প্রায় ২ বছরের পুরোনো। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলসের আগুন নেভাতে আজান দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। 

ভিডিওটি মূলত পাকিস্তানের। ২০২২ সালের ১ জুন করাচির একটি সুপারমার্কেটে আগুন লাগে।  আগুন নেভাতে ওই সুপারমার্কেটের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের উদ্যোগে কিছু লোক আজান দেন। 

আরও পড়ুন: মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও অর্থ

আজানের গুরুত্ব ও ফজিলত
আজান একটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আজান দেওয়ার কথা কোরআনে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তোমরা নামাজের জন্যে আহ্বান করো, তখন তারা (কাফের-মুশরিকরা) একে উপহাস ও খেলা বলে মনে করে।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত:  ৫৮)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন নামাজের জন্য আজান দেওয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পালায়, যাতে সে আজানের শব্দ না শোনে। যখন আজান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন নামাজের জন্য একামত বলা হয়, তখন আবার সে দূরে সরে যায়। একামত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দিয়ে বলে, এটা স্মরণ করো, ওটা স্মরণ করো। এভাবে বিস্মৃত বিষয়গুলো সে স্মরণ করিয়ে দেয়। তাতে লোকটি এমন অবস্থায় গিয়ে পৌঁছায় যে, সে কয় রাকাত নামাজ আদায় করেছে তা আর মনে করতে পারে না।’ (মুসলিম, হাদিস: ৭৪৫)

নামাজ ছাড়া আর কখন আজান দিতে হয়?
মূলত নামাজের জন্য আহ্বান জানানোর জন্যই আজানের বিধান চালু করা হয়েছে। তবে হাদিসে নামাজ ছাড়া আরও দুটি সময়ে আজান দেওয়ার বিধানের কথা পাওয়া যায়। সেগুলো হলো—

ক. নবজাতকের ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেওয়া: আবু রাফে (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যখন হাসান ইবনে আলি (রা.)-এর জন্ম হয় তখন আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে তার কানে আজান দিতে দেখেছি।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১৫১৪)

খ. কারও ওপর যদি জিনের বদ-আছর পড়ে তখন আজান দেওয়া: আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমাদের ওপর জিনের প্রভাব পড়ে বা বদ-আছর পড়ে, তা সহলে তোমরা আজান দাও। কারণ শয়তান আজান শুনলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।’ (তাবরানি, হাদিস: ৪৩৬)

রায়হান/

মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও অর্থ

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫ এএম
আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৭ এএম
মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও অর্থ
আরবিতে ‘আল্লাহ’ লেখা ছবি। ইন্টারনেট

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর জন্য রয়েছে সর্বোত্তম নামসমূহ। কাজেই তোমরা সেই নামসমূহ দিয়ে তাঁকে ডাকো।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১৮০)
কোরআনে আছে, ‘তোমরা আল্লাহ বলে ডাকো কিংবা রহমান বলে, যে নামেই ডাকো না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১১০)
আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম রয়েছে। নামগুলো আসমাউল হুসনা বা সর্বোত্তম নামসমূহ নামে পরিচিত। এ নামগুলো উচ্চারণ করলে মনে প্রশান্তি আসে। জীবনে নেমে আসে রহমতের ফল্গুধারা। আল্লাহর ৯৯ গুণবাচক নাম ফজিলতপূর্ণ। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত, এই নামগুলোর অর্থ জানা। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর ৯৯টি নাম রয়েছে, একশ থেকে একটি কম। যে ব্যক্তি এগুলো গণনা করবে (অর্থাৎ মুখস্থ করবে ও এর অর্থ বুঝবে), সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২৭৩৬, মুসলিম, হাদসি: ২৬৭৭)

আল্লাহর ৯৯টি নাম ও অর্থ
১. আল্লাহ অর্থ একমাত্র সত্য উপাস্য, ২. আর-রহমান অর্থ পরম করুণাময়, ৩. রহিম অর্থ অসীম দয়ালু, ৪. আল-মালিক অর্থ সর্বময় কর্তৃত্বের মালিক, ৫. আল-কুদ্দুস অর্থ পরম পবিত্র, ৬. আস-সালাম অর্থ শান্তি প্রদানকারী, ৭. আল-মুমিন অর্থ নিরাপত্তাদাতা, ৮. আল-মুহাইমিন অর্থ রক্ষক, ৯. আল-আজিজ অর্থ পরাক্রমশালী, ১০. আল-জাব্বার অর্থ প্রতাপশালী, ১১. আল-মুতাকাব্বির অর্থ গৌরবময়, ১২. আল-খালিক অর্থ সৃষ্টিকর্তা, ১৩. আল-বারি অর্থ উদ্ভাবনকারী, ১৪. আল-মুসাউইর অর্থ রূপদানকারী, ১৫. আল-গাফফার অর্থ ক্ষমাশীল, ১৬. আল-কাহহার অর্থ দমনকারী, ১৭. আল-ওয়াহহাব অর্থ মহাদাতা, ১৮. আর-রাজজাক অর্থ রিজিকদাতা, ১৯. আল-ফাত্তাহ অর্থ বিজয়দাতা, ২০. আল-আলিম অর্থ সর্বজ্ঞানী, ২১. আল-কাবিদ অর্থ সংকুচিতকারী, ২২. আল-বাসিত অর্থ প্রসারণকারী, ২৩. আল-খাফিদ অর্থ অবনতকারী, ২৪. আর-রাফি অর্থ উন্নতকারী, ২৫. আল-মুয়িজ অর্থ সম্মানদাতা, ২৬. আল-মুজিল অর্থ অপমানকারী, ২৭. আস-সামি অর্থ সর্বশ্রোতা, ২৮. আল-বাসির অর্থ সর্বদ্রষ্টা, ২৯. আল-হাকাম অর্থ মহাবিচারক, ৩০. আল-আদল অর্থ ন্যায়বিচারক, ৩১. আল-লাতিফ অর্থ সূক্ষ্মদর্শী, ৩২. আল-খাবির অর্থ সর্বজ্ঞ, ৩৩. আল-হালিম অর্থ ধৈর্যশীল, ৩৪. আল-আজিম অর্থ মহামহিম, ৩৫. আল-গাফুর অর্থ ক্ষমাকারী, ৩৬. আশ-শাকুর অর্থ কৃতজ্ঞতা স্বীকারকারী, ৩৭. আল-আলি অর্থ সর্বোচ্চ, ৩৮. আল-কাবির অর্থ মহান, ৩৯. আল-হাফিজ অর্থ সংরক্ষক, ৪০. আল-মুকিত অর্থ আহার্যদাতা, ৪১. আল-হাসিব অর্থ হিসাব গ্রহণকারী, ৪২. আল-জালিল অর্থ মহিমাময়, ৪৩. আল-কারিম অর্থ মহানুভব, ৪৪. আর-রাকিব অর্থ পর্যবেক্ষক, ৪৫. আল-মুজিব অর্থ প্রার্থনা কবুলকারী, ৪৬. আল-ওয়াসি অর্থ সর্বব্যাপী, ৪৭. আল-হাকিম অর্থ প্রজ্ঞাময়, ৪৮. আল-ওয়াদুদ অর্থ প্রেমময়, ৪৯. আল-মাজিদ অর্থ গৌরবান্বিত, ৫০. আল-বায়িস অর্থ পুনরুত্থানকারী, ৫১. আশ-শাহিদ অর্থ প্রত্যক্ষদর্শী, ৫২. আল-হাক অর্থ সত্য, ৫৩. আল-ওয়াকিল অর্থ কর্মবিধায়ক, ৫৪. আল-কাওয়ি অর্থ শক্তিধর, ৫৫. আল-মাতিন অর্থ দৃঢ়, ৫৬. আল-ওয়ালি অর্থ অভিভাবক, ৫৭. আল-হামিদ অর্থ প্রশংসিত, ৫৮. আল-মুহসি অর্থ গণনাকারী, ৫৯. আল-মুবদি অর্থ আরম্ভকারী, ৬০. আল-মুয়িদ অর্থ পুনরাবর্তনকারী, ৬১. আল-মুহয়ি অর্থ জীবনদাতা, ৬২. আল-মুমিত অর্থ মৃত্যুদাতা, ৬৩. আল-হাইয়ু অর্থ চিরজীবী, ৬৪. আল-কাইয়ুম অর্থ স্বয়ংস্থিত, ৬৫. আল-ওয়াজিদ অর্থ অভীষ্ট লাভকারী, ৬৬. আল-মাজিদ অর্থ মহিমান্বিত, ৬৭. আল-ওয়াহিদ অর্থ এক, ৬৮. আল-আহাদ অর্থ একক, ৬৯. আস-সামাদ অর্থ অমুখাপেক্ষী, ৭০. আল-কাদির অর্থ সর্বশক্তিমান, ৭১. আল-মুকতাদির অর্থ ক্ষমতাবান, ৭২. আল-মুকাদ্দিম অর্থ অগ্রবর্তী, ৭৩. আল-মুয়াখখির অর্থ পশ্চাদবর্তী, ৭৪. আল-আউয়াল অর্থ আদি, ৭৫. আল-আখির অর্থ অন্ত, ৭৬. আজ-জাহির অর্থ প্রকাশ্য, ৭৭. আল-বাতিন অর্থ গোপন, ৭৮. আল-ওয়ালি অর্থ অভিভাবক, ৭৯. আল-মুতাআলি অর্থ সর্বোচ্চ, ৮০. আল-বারর অর্থ পুণ্যময়, ৮১. আত-তাওয়াব অর্থ তাওবা কবুলকারী, ৮২. আল-মুনতাকিম অর্থ প্রতিশোধ গ্রহণকারী, ৮৩. আল-আফুউ অর্থ ক্ষমাশীল, ৮৪. আর-রাউফ অর্থ স্নেহশীল, ৮৫. মালিকুল মুলক অর্থ রাজাধিরাজ, ৮৬. জুল জালালি ওয়াল ইকরাম অর্থ মহিমা ও সম্মানের অধিকারী, ৮৭. আল-মুকসিত অর্থ ন্যায়পরায়ণ, ৮৮. আল-জামি অর্থ একত্রকারী, ৮৯. আল-গানি অর্থ অমুখাপেক্ষী, ৯০. আল-মুগনি অর্থ সমৃদ্ধিদাতা, ৯১. আল-মানি অর্থ প্রতিরোধক, ৯২. আদ-দার অর্থ ক্ষতিকারক, ৯৩. আন-নাফি অর্থ উপকারক, ৯৪. আন-নুর অর্থ জ্যোতি, ৯৫. আল-হাদি অর্থ পথপ্রদর্শক, ৯৬. আল-বাদি অর্থ অভিনব, ৯৭. আল-বাকি অর্থ চিরস্থায়ী, ৯৮. আল-ওয়ারিস অর্থ উত্তরাধিকারী, ৯৯. আর-রাশিদ অর্থ সঠিক পথপ্রদর্শক।

আরও পড়ুন: আল্লাহর নামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

প্রতিটি নাম আল্লাহর এক একটি গুণ ও বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ। একজন মুসলিমের জীবনে এই নামগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। এই নামগুলো জানা, বোঝা এবং স্মরণ করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এই নামগুলোর অর্থ অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা উচিত।

লেখক: খতিব, বাগবাড়ি জামে মসজিদ, গাবতলী

আল্লাহর নামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
আল্লাহর নামের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
আরবিতে ‘আল্লাহ’ লেখা ছবি। ইন্টারনেট

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর জন্যই রয়েছে সকল উত্তম নাম। সুতরাং তোমরা তাঁকে সেই নামসমূহের মাধ্যমেই ডাক।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১৮০)। আল্লাহর নামসমূহ জানা ও স্মরণ করার অনেক ফজিলত রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর রয়েছে ৯৯টি নাম, যে ব্যক্তি এগুলো গণনা করবে (অর্থাৎ শিখবে, বুঝবে ও আমল করবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি, হাদিস: ২৭৩৬, মুসলিম, হাদিস: ২৬৭৭)

জীবনে আল্লাহর নামের প্রভাব 
আল্লাহর নামগুলো হৃদয়ঙ্গম করতে পারলে তা আমাদের জীবনপথের পাথেয় হবে। এই নামগুলো ধারণ করতে পারলে জীবন হবে সুখের ও জান্নাতের। আল্লাহর নামের প্রভাব আমাদের জীবনকে কীভাবে জান্নাতের পথ দেখায়, এখানে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো—

আর-রাজজাক বা রিজিকদাতা
ধরুন, আপনি একজন চাকরিজীবী। মাস শেষে বেতন পেয়ে দেখলেন, টাকার চেয়ে খরচের খাত বেশি। এ টাকায় মাস পেরোবে না। চিন্তায় পড়ে গেলেন। এমন সময় আর-রাজজাক নামটি স্মরণ করলে বুঝতে পারবেন, আল্লাহই আপনার রিজিকের মালিক। তিনি অনেক সময় অপ্রত্যাশিত জায়গা থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। সেটি নানা মাধ্যমে হতে পারে।

আরও পড়ুন: মৃতের মোচ, চুল ও নখ কাটা যাবে?

আল-হাফিজ বা রক্ষাকারী
মনে করুন, আপনার ছোট বাচ্চা স্কুলে যায়। প্রতিদিন তাকে স্কুলে পাঠানোর সময় যখন আল-হাফিজ নামে দোয়া করেন, তখন আপনার মন শান্ত থাকে। কারণ আপনি জানেন, আল্লাহই সর্বোত্তম রক্ষাকারী। একদিন হয়তো দেখলেন, আপনার বাচ্চা রাস্তা পার হতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছিল, কিন্তু পাশের একজন ভাই ধরে ফেলায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এটি আল্লাহর রহমতেই হয়েছে।
 
আশ-শাফি বা আরোগ্যদাতা
ধরুন, আপনার মা অসুস্থ। ডাক্তার দেখাচ্ছেন, ওষুধ খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু রোগ সারতে চায় না। এমন সময় আশ-শাফি নামে দোয়া করতে থাকেন। আস্তে আস্তে দেখলেন, মায়ের অবস্থা ভালো হতে শুরু করেছে। কারণ আসল আরোগ্যদাতা তো আল্লাহই। 

এভাবে আল্লাহর প্রতিটি নামই আমাদের জীবনের নানা সময় সাহায্য করে। আমরা যদি এই নামগুলো মনে রেখে চলি, তা হলে জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই নামগুলো আমাদের বোঝায় যে, আল্লাহ সব সময় আমাদের সঙ্গে আছেন। তিনি আমাদের সব দরকার জানেন, সব সমস্যার সমাধান জানেন। তাই আমাদের উচিত, এই নামগুলো ভালোভাবে শেখা। প্রতিটি নামের অর্থ বোঝার চেষ্টা করা। যেকোনো সমস্যায় পড়লে উপযুক্ত নাম দিয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। 

লেখক: খতিব, বাগবাড়ি জামে মসজিদ, গাবতলী  

মৃতের মোচ, চুল ও নখ কাটা যাবে?

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৮ এএম
আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫০ এএম
মৃতের মোচ, চুল ও নখ কাটা যাবে?
প্রতীকী ছবি

প্রশ্ন: আমাদের এলাকায় সাধারণত মৃত ব্যক্তির গোসল আমি দিই। কোনো কোনো মৃত ব্যক্তির মোচ, নখ লম্বা ও অস্বাভাবিক থাকে। জানার বিষয় হলো, গোসল দেওয়ার সময় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এগুলো কেটে দেওয়া যাবে?

মনোয়ার হোসেন, হবিগঞ্জ

উত্তর: মৃত ব্যক্তির মোচ, নখ ইত্যাদি লম্বা থাকলেও তা কাটা ঠিক নয়; বরং মাকরুহ। মোচ, নখ এবং অবাঞ্ছিত লোম অস্বাভাবিক লম্বা থাকলে পরিবারের লোকদের উচিত মৃত্যুর আগেই তা কেটে দেওয়া। হাসান বসরি (রহ.) ও ইবনে সিরিন (রহ.) বলেন, ‘মৃতের মোচ, চুল ও নখ কাটা যাবে না।’ (আসসুনানুল কুবরা, বাইহাকি, ৩/৩৯০, বর্ণনা ৬৬৩৬)

আইয়ুব সাখতিয়ানি (রহ.) বলেন, ‘মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (রহ.) মৃত ব্যক্তির নাভির নিচের পশম ও নখ ইত্যাদি কাটা অপছন্দ করতেন এবং তিনি বলতেন, তার পরিবারের উচিত (তার মৃত্যুর আগে) অসুস্থ অবস্থায়ই এগুলো কেটে দেওয়া।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ১১০৫৪; আলবাহরুর রায়েক, ২/১৭৩; রদ্দুল মুহতার, ২/১৯৮)

মৃত ব্যক্তিকে গোসলের নিয়ম হলো, প্রথমে মৃতকে চৌকি বা গোসলের খাটিয়ার ওপর শোয়াতে হয়। তারপর পরনের কাপড় সরিয়ে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশে একটা কাপড় রাখতে হয়। হাতে কাপড় পেঁচিয়ে পেশাব-পায়খানার জায়গা পরিষ্কার করতে হয়। অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির পেশাব বা পায়খানাজাতীয় কিছু বের হলে গোসলদানকারী হাতে একটি নেকড়া বেঁধে নিয়ে মৃত ব্যক্তির পায়খানা ও পেশাবের জায়গা ধুয়ে পরিষ্কার করবে। নাভি ও হাঁটুর মাঝখানের জায়গা ঢেকে নিয়ে পানি ঢালবে। এরপর অজু করাতে হয়। নাকে ও মুখে পানি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তুলা ভিজিয়ে দাঁতের মাড়ি ও নাকের ভেতর মুছে দেওয়া জায়েজ।

আরও পড়ুন: যে সুরা পড়লে শরীর ভালো থাকে

গোসল ফরজ বা হায়েজ-নেফাস অবস্থায় মারা গেলে মুখে ও নাকে পানি পৌঁছানো জরুরি। পানি যেন ভেতরে না যায় সে জন্য নাক, মুখ ও কানে তুলা দিতে হয়, এরপর ধুতে হয়। মৃতকে বাঁ দিকে কাত করে শুইয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত এমনভাবে তিনবার পানি ঢালতে হয়, যেন বাঁ কাত পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অনুরূপভাবে ডান কাত করে শুইয়ে তিনবার পানি ঢালতে হয়। এরপর মৃতকে কোনো কিছুর ওপর ঠেস দিয়ে বসিয়ে আস্তে আস্তে পেটে চাপ দিতে হয়। কোনো মল বেরোলে পরিষ্কার করে ধুয়ে দিতে হয়। এর জন্য পুনরায় অজু ও গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। অতঃপর বাঁ কাত করে শুইয়ে কর্পূর মেশানো পানি ঢালতে হয় তিনবার। সব শেষে একটি কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি, ১/২১৮)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

যে সুরা পড়লে শরীর ভালো থাকে

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৭ এএম
যে সুরা পড়লে শরীর ভালো থাকে
সুরা নাসের ক্যালিগ্রাফি। ছবি: ইন্টারনেট

পবিত্র কোরআনের সর্বশেষ সুরা—সুরা নাস। এই সুরাটির অনেক ফজিলতের কথা হাদিসে এসেছে। বিশেষ করে কোরআনের সর্বশেষ তিন সুরা—ইখলাস, ফালাক ও নাসকে একত্রে ‘তিন কুল’ বলা হয়। এই তিন সুরার শুরুতে আরবি ‘কুল’ শব্দ থাকার কারণে এই নামে ডাকা হয়। এ তিনটি সুরা আসমানি রক্ষাকবচ। এই তিনটি সুরা পাঠ করলে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকার কথা বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।

শরীর সুরক্ষার আমল
রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় তিন কুলের আমল করতেন। সাহাবিদের আমল করার তাগিদ দিতেন। এক সাহাবি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে তিনবার সুরা ইখলাস, সুরা নাস ও ফালাক পড়বে। এতে তুমি যাবতীয় অনিষ্ট হতে রক্ষা পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫০৮২)

আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘নবি (সা.) প্রতিরাতে যখন বিছানায় যেতেন; তখন (মোনাজাতে হাত তোলার মতো করে) দুই হাত মেলাতেন। এর পর হাতের ওপর তিন কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস) পাঠ করতেন। এর পর হাতে ফুঁ দিতেন। এর পর দুই হাত দিয়ে শরীরের যতটুকু অংশে সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। মাথা, চেহারা এবং শরীরের ওপরের ভাগ থেকে শুরু করতেন। এভাবে (পূর্ণ কাজটি) তিনি তিনবার করতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)

আরও পড়ুন: জীবন বদলে দেবে যে পাঁচ সুন্নত

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন অসুস্থ হতেন, তখন তিন কুল পড়ে (হাতে) ফুঁ দিতেন এবং (নিজের শরীরে) হাত বুলাতেন। যখন তিনি অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমি তিন কুল পড়ে ফুঁ দিতাম এবং তার হাতে হাত বুলাতাম।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৭৫৭)

উপরোক্ত হাদিসগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই, সারা দিনের নিরাপত্তায় তিন সময়ে ‘তিন কুল’ পড়ার কথা হাদিসে এসেছে। তিন কুল হলো—

  • সুরা ইখলাস।
  • সুরা ফালাক।
  • সুরা নাস। 

আর তিন সময় হলো—

  • ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার করে।
  • জোহর, আসর ও ইশার পর একবার করে।
  • রাতে শোয়ার আগে বিছানায় তিন কুল তিনবার করে পাঠ করে হাতে ফুঁক দিয়ে হাত সারা শরীরে মুছবে। 

এ ছাড়াও অসুস্থ অবস্থায় বা বিপদের সময়ও এর আমল করা যেতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫২৩, তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৭৫) 

লেখক: খতিব, বাগবাড়ি জামে মসজিদ, গাবতলী