ঢাকা ৩০ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

সিজদার আয়াত লিখলে সিজদা দিতে হয়?

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ এএম
আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:০৫ এএম
সিজদার আয়াত লিখলে সিজদা দিতে হয়?
সিজদা করছেন মুসল্লি। ছবি: পিন্টারেস্ট

প্রশ্ন: কিছু দিন আগে খাতায় একটি প্রবন্ধ লিখছিলাম। ওই  প্রবন্ধে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াত উল্লেখ করি। সেখানে সিজদার আয়াতও ছিল। জানার বিষয় হলো, সিজদার আয়াত লেখার কারণে আমার ওপর কি সিজদা ওয়াজিব হয়েছে?

আহনাফ মাসরুর, কিশোরগঞ্জ

উত্তর: না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ওপর সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয়নি। কেননা সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয় সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করা বা শোনার দ্বারা। মুখে উচ্চারণ না করে শুধু লেখার দ্বারা সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয় না। (আল-বাহরুর রায়েক, ২/১১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১৩৩; রদ্দুল মুহতার, ২/১০৯)

কোরআনে কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলোর তেলাওয়াত করলে বা শুনলে মুমিন পাঠক ও শ্রোতাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করতে হয়। এই সিজদাকে সিজদায়ে তেলাওয়াত বলা হয়। এই সিজদা ফরজ নয়, ওয়াজিব। না করলে গুনাহ হবে। পবিত্র কোরআনের যেসব আয়াতে সিজদার বিধান রয়েছে, সেসব আয়াতের ওপরে লম্বা দাগ টেনে চিহ্ন দেওয়া আছে। এ রকম সিজদার আয়াত চৌদ্দটি।

আরও পড়ুন: ইসতেখারার দোয়া

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তান যখন সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করে সিজদায় যায়, তখন শয়তান কেঁদে কেঁদে দূরে সরে যায়। আর বলতে থাকে, দুর্ভাগ্য আমার! আদম সন্তানকে সিজদার জন্য আদেশ করলে সে সিজদা করে জান্নাত লাভ করল। আর আমাকে সিজদার জন্য আদেশ করা হলেও আমি সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানালাম। ফলে আমি জাহান্নামি হলাম।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৩৩)

লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক

ইসলামে উত্তরাধিকার আইনের আদ্যোপান্ত জানার অনন্য যে বই

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৯ পিএম
ইসলামে উত্তরাধিকার আইনের আদ্যোপান্ত জানার অনন্য যে বই
ইসলামে উত্তরাধিকার আইন ও সমাজের অসঙ্গতি বইয়ের প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত

মিরাস বা মৃতের ত্যাজ্যসম্পদ কোন খাতে কীভাবে ব্যয়িত হবে এবং এর সঙ্গে কার কী অধিকার সম্পৃক্ত—এ বিষয়টিও মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসঙ্গ। এখানেও রয়েছে ইসলামের অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ ও কল্যাণকর নীতিমালা, যা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে মিরাস নিয়ে সমাজে কোনো ধরনের বিবাদ ও বিরোধ দেখা দিত না। প্রত্যেক হকদার তার ন্যায়সঙ্গত অধিকার লাভ করত অনায়াসে। কিন্তু ইসলামের নীতিমালা কাঙ্ক্ষিতরূপে অনুসৃত না হওয়ার কারণে এ বিষয়ে আমাদের সমাজে নিত্যদিন অনেক রকম কলহ লেগে আছে। আপনজনদের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়ে পড়ছে। সামান্য অর্থের লোভে পারস্পরিক রক্তের সম্পর্ককে ছিন্ন করতেও দ্বিধা করছে না মানুষ। সামাজিক এ ক্ষতের একমাত্র চিকিৎসা ইসলামের অনুশাসন পুরোপুরি মেনে চলা। তাই আমাদের জানতে হবে, মিরাস বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী এবং কী নির্দেশনা আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন। মিরাস বিষয়ে বিস্তারিত জানার অনন্য এক বই ইসলামে উত্তরাধিকার আইন ও সমাজের অসঙ্গতি। 
কোরআনুল কারিমে উত্তরাধিকারের বিধিবিধান সবচেয়ে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু উত্তরাধিকারসংক্রান্ত দরকারি জ্ঞানটুকু আমাদের অনেকেরই নেই। উত্তরাধিকার বিষয়ে আমাদের অঞ্চলে অনেক অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। ফলে মৃতের সম্পদ বণ্টনের সময় কাউকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করি, অনেককে তো আমরা সম্পদের হকদারই মনে করি না। এতে করে আল্লাহর অকাট্য বিধান লঙ্ঘনের পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক জীবনেও নেমে আসে চরম অশান্তি। মিরাস-সংক্রান্ত প্রচলিত অজ্ঞতা এবং কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এ বইয়ে। সেই সঙ্গে বাতলে দেওয়া হয়েছে উত্তরণের পন্থাও। মিরাস বিষয়ে জানতে আগ্রহী পাঠকের জন্য বইটি অবশ্য পাঠ্য।

বইটিতে মোট তিনটি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে মিরাসের পরিচয়, বৈশিষ্ট্য, গুরুত্ব ও বিবিধ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রাসঙ্গিক আলোচনা। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে মিরাস বণ্টনে প্রচলিত ভুল ও তার নিরসন। শেষ অধ্যায়ে সংক্ষেপে বিবৃত হয়েছে মিরাসের শরয়ি নীতিমালা। 

বইটি লিখেছেন মুফতি মাহবুবুর রহমান। বইটি প্রকাশ করেছে সমকালীন প্রকাশন। ১১৪ পৃষ্ঠার বইটির মুদ্রিত মূল্য ২২০ টাকা। দেশের অভিজাত সব লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে বইটি পাওয়া যায়। সরাসরি সমকালীন প্রকাশন থেকে বইটি কিনতে ভিজিট করুন ফেসবুক পেজে

বই: ইসলামে উত্তরাধিকার আইন ও সমাজের অসঙ্গতি
লেখক: মুফতি মাহবুবুর রহমান 
প্রকাশক: সমকালীন প্রকাশন 
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১৪
মুদ্রিত মূল্য: ২২০ টাকা
মোবাইল: ০১৪০৯-৮০০৯০০

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছেন ৫৬ জন

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০০ পিএম
চরপাথালিয়া মাদরাসায় এক বছরে হাফেজ হয়েছেন ৫৬ জন
হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি পরিয়ে দিচ্ছেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উস্তাজুল হুফফাজ হাফেজ আবদুল হক। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার থানার চরপাথালিয়া সালমান ফারসি (রা.) মাদরাসা থেকে এক বছরে ৫৬ জন শিক্ষার্থী কোরআনের হেফজ সম্পন্ন করেছে। গত বুধবার মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজিত মাহফিলে হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি এবং তাদের  পিতাকে ‘গর্বিত বাবা’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
মাদরাসার মুতাওয়াল্লি মো. শিকদার শিহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে পাগড়ি প্রদান মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান উস্তাজুল হুফফাজ হাফেজ আবদুল হক, প্রধান মেহমান ছিলেন জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সাঈদ এবং প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাওলানা যাইনুল আবেদীন। এ ছাড়াও গজারিয়ার স্থানীয় মাদরাসার পরিচালক ও আলেম-উলামা এবং হাফেজ ছাত্রদের অভিভাকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে মো. শিকদার শিহাবুদ্দিন বলেন, ‘হাফেজরা আল্লার কাছে সবচেয়ে দামি মানুষ। তাদের কদর বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আজকে যারা হাফেজ হলেন, তারা হয়তো বড় হয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মিশে যাবেন। কিন্তু সবার সঙ্গে থাকার পরও তাদের আলাদা একটা পরিচয় থাকবে, তারা হাফেজে কোরআন। তারা কোরআনের মতো দামি গ্রন্থ সিনায় ধারণ করেছেন। তাই হাফেজের মর্যাদা আমাদের বুঝতে হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তেব্যে হাফেজ আবদুল হক বলেন, ‘হাফেজদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান আসলে একটা ছায়া অনুষ্ঠান মাত্র। এসব হাফেজদের সম্মানীত করা হবে জান্নাতে। এখানে মাদরাসা পরিচালকরা হাফেজ ছাত্রদের বাবাকে গর্বিত পিতা অ্যাওয়ার্ড দিয়েছেন, এটাও একটা নমুনা। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা হাফেজ ছাত্রদে বাবামাকে নুরের টুপি পরাবেন। হাফেজদের সম্মান দুনিয়া-আখেরাতে সব জায়গাতেই সবার ওপরে।’
মাদরাসার পরিচালক হাফেজ আল আমিন সরকার বলেন, ‘এক বছরে ৫৬ জন ছাত্র  হাফেজ  হওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় অর্জন; কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মুমিনের আসল সফলতা হলো আল্লাহকে রাজি-খুশি করা। আল্লাহ যদি আমাদের ইখলাস ও খেদমতে খুশি হন, তাহলে হাফেজ বেশি হলো না কম হলো; সেটা বড় কথা নয়। আমাদের মাদরাসার বয়সও বেশি না। আমরা ২০১৬ সালে শুরু করেছি। আমরা শুরু থেকেই শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের বিষটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও শারীরিক সুস্থতা ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও জোর দিয়েছি। বর্তমান-সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাক যারাই মাদরাসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং আছেন, সবাই আমাদের জন্য দেয়া করবেন। আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় চরপাথালিয়া সালামান ফারসি (রা.) মাদরাসা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’

আরআর/এমআর

গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনায় একটি বিপ্লব সাধিত হয়েছে

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনায় একটি বিপ্লব সাধিত হয়েছে
সুলতানসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেদোয়ান ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রেদোয়ান ইসলাম সুলতানস প্রকাশনীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বরিশাল সদরে জন্ম। ঢাকা উত্তরার মাদরাসাতুল হিকমা থেকে হেফজ শেষ করেছেন। কম্পিউটার সায়েন্সের ওপর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটি থেকে। তার প্রকাশক হওয়ার গল্প, ইসলামি বইয়ের চাহিদা ও পাঠক বৃদ্ধি, সুলতানস কোন ধরনের বই প্রকাশে আগ্রহী, মানসম্মত বই প্রকাশে তাদের ভূমিকা কেমন ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেছেন খবরের কাগজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রায়হান রাশেদ

খবরের কাগজ: আপনি প্রকাশক হলেন কেন?
রেদোয়ান ইসলাম: জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াকে আমি জীবনের এক মহৎ উদ্দেশ্য হিসেবে দেখেছি। বিশেষ করে ইসলামি জ্ঞান এবং নৈতিকতার পাঠ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমার দায়িত্ব মনে করি। এই মহৎ উদ্দেশ্য ও দায়িত্বের জায়গা থেকে আমি প্রকাশক হয়েছি। এক্ষেত্রে আমার ছোট কাকু (চাচা) বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ লেখক মিরাজ রহমান এবং আমার পিতার অবদানের কাছে আমি ঋণী। 

খবরের কাগজ: ইসলামি বইয়ের পাঠক দিন দিন বাড়ছে বলে কী আপনি মনে করেন?
রেদোয়ান ইসলাম: হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে। বর্তমান সময়ে মানুষ ইসলাম সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে আগ্রহী হচ্ছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম কোরআন, হাদিস এবং ইসলামি জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে বেশ আগ্রহী এবং এটি অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন বেশি। গত পাঁচ-সাত বছরে ইসলামি বইয়ের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এক্ষেত্রে গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনা সেক্টরে একটি বিপ্লব হয়েছে বলে আমি মনে করি এবং সুলতানস সে বিপ্লবের অন্যতম অংশীদার, আলহামদুলিল্লাহ। আর এটি আমাদের জন্য একটি বড় প্রেরণা।

খবরের কাগজ: আপনার প্রকাশনী সম্পর্কে কিছু বলুন। কী ধরনের বই প্রকাশে আপনারা আগ্রহী? 
রেদোয়ান ইসলাম: আমাদের ‘সুলতানস’ প্রকাশনী মানসম্পন্ন বই প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা প্রতিটি বইয়ের বিষয়বস্তু, সম্পাদনা এবং মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ মান বজায় রাখি। বিশ্বস্ত লেখক ও গবেষকদের সঙ্গে কাজ করে তথ্যবহুল ও প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপিত বই প্রকাশ করি। বইয়ের নকশা ও বাঁধাইয়ের ক্ষেত্রেও আমরা উৎকৃষ্ট মান নিশ্চিত করি, যাতে পাঠকরা একটি সন্তোষজনক পাঠ অভিজ্ঞতা লাভ করেন। আমাদের প্রকাশিত বইগুলো যেমন- মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিষ্কার, দ্য গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর মুহাম্মাদ (সা.) এবং হিলিং দ্য এম্পটিনেস, পাঠকদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। এই বইগুলোর মান নিয়ে পাঠকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। আমরা কোরআন হাদিসের আলোকে জীবনঘনিষ্ঠ বই প্রকাশ করি। সিরাত বিষয়ে আমাদের কয়েকটি বই বেস্ট সেলার হয়েছে। প্রতিটি বইয়ের কনটেন্ট আমরা যুগোপযোগী বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে করি। সর্বপরি আমরা সব সময় মানসম্মত কনটেন্ট এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের ওপর গুরুত্ব দিই। আমাদের প্রতিটি বই গবেষণালব্ধ তথ্য এবং প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপিত হয়, যাতে তা পাঠকের জন্য সহজপাঠ্য ও উপকারী হয়। 

খবরের কাগজ: এবারের মেলাতে নতুন কি বই প্রকাশ করেছে সুলতানস?
রেদোয়ান ইসলাম: ২০২৫ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত উসওয়াতুন হাসানা প্রোডাক্টিভ মুহাম্মাদ (সা.) বইটি মহানবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবন থেকে প্রোডাক্টিভিটির শিক্ষা নিয়ে রচিত। লেখক মিরাজ রহমান এই গ্রন্থে নবিজির (সা.) কর্মপদ্ধতি, সময় ব্যবস্থাপনা এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর প্রোডাক্টিভ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। বইটি পাঠকদেরকে নবিজির (সা.) জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে প্রোডাক্টিভ হতে সহায়তা করবে। যারা ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে সফল ও প্রোডাক্টিভ জীবন গড়তে চান, তাদের জন্য এটি একটি মূল্যবান বই।

নবিজির (সা.) প্রোডাক্টিভ রুটিন ও সুন্নাহ লাইফস্টাইল নিয়ে বাংলায় প্রথম বই

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৬ পিএম
নবিজির (সা.) প্রোডাক্টিভ রুটিন ও সুন্নাহ লাইফস্টাইল নিয়ে বাংলায় প্রথম বই
উসওয়াতুন হাসানা প্রোডাক্টিভ মুহাম্মাদ (সা.) বইয়ের প্রচ্ছদ। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শই সবার জন্য অনুকরণীয় আদর্শ অভিহিত করে বলেন, ‘আল্লাহর রাসুলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ২১)। মানুষের জীবনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সব বিষয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশনা কী, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে তা দেখিয়ে দিয়েছেন। মানুষ কীভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং কীভাবে ২৪ ঘণ্টা সময় কাটাবে—মানুষের দিন-রাত কেমন করে কাটানো উচিত, কোন সময় কি করবে, কখন ঘুমাবে, কখন হাঁটবে, কখন খাবে, কোন সময় স্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সময় যাপন করবে, এর সবকিছু স্পষ্টভাবে বলেছেন নবিজি (সা.)। তাঁর রুটিনমাফিক জীবনজুড়ে রয়েছে সেসব কাজকর্ম। তিনি দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন নিয়মের ভেতর দিয়ে। মুসলিম মাত্রই জানতে চান, মুহাম্মাদ (সা.)-এর দিন-রাত কীভাবে কেটেছে? তিনি ২৪ ঘণ্টায় কি কি কাজ করতেন? তাঁর জীবনের রুটিন কেমন ছিল? তার লাইফস্টাইল কোন ধরনের ছিল। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ২৪ ঘণ্টার রুটিন ও তাঁর সুন্নাহ লাইফস্টাইল জানার এক হীরকখণ্ড উসওয়াতুন হাসানা প্রোডাক্টিভ মুহাম্মাদ (সা.)। 

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্য করা এবং তাঁর দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক ও মাসিক রুটিন (সুন্নত, দোয়া ও আমল), অভ্যাস ও জীবনধারা অনুসরণ করার মধ্যেই দুনিয়ার সফলতা ও পরকালের মুক্তি রয়েছে। তাঁর জীবনধারা উম্মতের জন্য অনুকরণীয়-অনুসরণীয় সুন্দরতম আদর্শ। একমাত্র রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নতি আমলগুলো অনুসরণে প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের যাবতীয় কল্যাণ নিহিত। তাঁর প্রতিদিনের সুন্নত, দোয়া, আমল ও জীবনযাপনের রুটিন জানার অনন্য এ বই। 

কীভাবে শুরু হতো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সকাল? কখন ঘুম থেকে উঠতেন তিনি? নাশতায় কি খেতেন? নাকি আমাদের মতো নাশতা না করেই চলে যেতেন কর্মস্থলে? দুপুরের সময়টা কীভাবে কাটত তাঁর? বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে এলে কী করতেন? কখন এবং কীভাবে ঘুমাতেন তিনি? ঘুমানোর ঠিক কতক্ষণ আগে রাতের খাবার খেতেন? স্বামী হিসেবে কতটা উত্তম ছিলেন তিনি? সপ্তাহের কোন কোন দিন রোজা রাখতেন এবং বছরের কোন মাসে কখন, কীভাবে, কী কী আমল করতেন রাসুলুল্লাহ (সা.)? প্রোডাক্টিভিটির কোনো ছোঁয়া ছিল কি তাঁর দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক ও মাসিক রুটিন এবং জীবনধারায়? এমন অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর মিলবে এ বইটির পাতায় পাতায়।

এ বইটিতে বিশেষ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যথা-

  • রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রোডাক্টিভ রুটিন এবং সুন্নাহ লাইফস্টাইলকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। যাতে করে বুঝতে ও আমল করতে সহজ হয়।
  • প্রোডাক্টিভ লাইফস্টাইল মেইনটেন করে জীবনে সফল হওয়ার জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রুটিন ও লাইফস্টাইলই যে সর্বোত্তম অনুকরণীয় আদর্শ এবং তিনিই যে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রোডাক্টিভ মানুষ— তা প্রমাণ করা হয়েছে।
  • দৈনন্দিন, সাপ্তাহিক ও মাসিক প্রোডাক্টিভ রুটিন এবং সুন্নাহ লাইফস্টাইল তুলে ধরার পাশাপাশি এগুলোর আদায়পদ্ধতি এবং বিধান তুলে ধরা হয়েছে।
  • গ্রাফ, ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন ও ছক আকারে বিভিন্ন বিষয়াবলি উপস্থাপন করা হয়েছে।
  • সুপ্রসিদ্ধ ছয়টি হাদিস গ্রন্থসহ বিশুদ্ধ বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ থেকে প্রায় দেড় হাজার বিশুদ্ধ বর্ণনা বা রেওয়ায়েতের আলোকে বইটি রচিত হয়েছে।

বইটি লিখেছেন মিরাজ রহমান। প্রকাশ করেছে সুলতানস। ৩৮২ পৃষ্ঠার বইটির মুদ্রিত মূল্য ৭০০ টাকা। দেশের অভিজাত সব লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে বইটি পাওয়া যায়। সরাসরি সুলতানস থেকে বইটি কিনতে ভিজিট করুন ফেসবুক পেজে

বই: উসওয়াতুন হাসানা প্রোডাক্টিভ মুহাম্মাদ 
লেখক: মিরাজ রহমান 
প্রকাশক: সুলতানস 
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৩৮৪
মুদ্রিত মূল্য: ৭০০ টাকা
মোবাইল: ০১৮১০০১১১২৫

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

উম্মাহর প্রয়োজনে যুগোপযোগী বুদ্ধিভিত্তিক কাজ করে যেতে চাই

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৬ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০১ পিএম
উম্মাহর প্রয়োজনে যুগোপযোগী বুদ্ধিভিত্তিক কাজ করে যেতে চাই
মাকতাবাতুল খিদমাহর পরিচালক মাওলানা আবদুল মান্নান। ছবি: সংগৃহীত

মাওলানা আবদুল মান্নান মাকতাবাতুল খিদমাহর প্রকাশক। ভোলার লালমোহনে জন্ম। গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার হাতেখড়ি। চট্টগ্রামের এক মাদরাসা থেকে হাফেজ হয়েছেন। দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) করেছেন। তাখাসসুল ফিল হাদিস পড়েছেন। তার প্রকাশক হওয়ার গল্প, ইসলামি বইয়ের পাঠকের চাহিদা, কোন ধরনের বই প্রকাশে তিনি আগ্রহী, ইসলামি বইয়ের জাগরণের ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেছেন খবরের কাগজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রায়হান রাশেদ


খবরের কাগজ: আপনি প্রকাশক হলেন কেন? 
মাওলানা আবদুল মান্নান: প্রকাশক হওয়ার বিষয়টা এক রকম কাকতালীয় ব্যাপার বলেই আমার কাছে মনে হয়। আমি প্রথমে মাদরাসাকেন্দ্রিক দ্বীনি খেদমতের জন্যই মনস্থ করেছিলাম। পড়াশোনা শেষে মাদরাসায় খেদমত শুরু করি। পাশাপাশি প্রকাশনা সেক্টরের সঙ্গেও কিছুটা যুক্ত ছিলাম। পরে আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রকাশনা জগৎও দ্বীনি খেদমতের স্বতন্ত্র একটি প্ল্যাটফর্ম। জনমানুষের মাঝে ইসলাম ও ধর্মীয় বিশুদ্ধ জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়া এবং মানুষকে বিশুদ্ধ ইলমের পথে নিয়ে আসা এটা আলেমদের একটি নৈতিক দায়িত্ব। কারণ দ্বীনি ইলম হলো নবিদের তুরাস আর আলেমরা হলেন সেই তুরাসের উত্তরাধিকার। কাজেই বাতিলদের অপব্যাখ্যা এবং মূর্খ লোকদের বিভ্রান্তি থেকে ইলমকে হেফাজতের যে ঐশী দায়িত্ব আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে, সেই দায়িত্ব-কর্তব্য থেকেই এই সেক্টরে যোগদান করা। 

খবরের কাগজ: ইসলামি বইয়ের পাঠক দিন দিন বাড়ছে বলে কী আপনি মনে করেন?
মাওলানা আবদুল মান্নান: চারপাশে ইসলামের যে নবজাগরণ বাংলাদেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং যুবসমাজের মনে ইসলামকে জানার যে বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে; এটা অবশ্যই ধর্মীয় বইয়ের পাঠক বৃদ্ধি পাওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করে। ধর্মীয় বইয়ের জগতে সৃজনশীলতা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাঠক মহল ততই বাড়ছে এবং সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, পাঠক বাড়ার এ ধারাবাহিকতা ইনশাআল্লাহ অব্যাহত থাকবে। 

খবরের কাগজ: আপনার প্রকাশনী সম্পর্কে কিছু বলুন। কী ধরনের বই প্রকাশে আপনারা আগ্রহী? 
মাওলানা আবদুল মান্নান: আমার প্রকাশনী আমার স্বপ্নের জায়গা। আমি আমার স্বপ্নটিকে সুন্দর করে পরিচর্যা করে বাস্তবায়ন করতে চাই। প্রথমত ধর্মীয় বিশুদ্ধ জ্ঞান এবং ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা ছাত্রসমাজসহ মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমরা দরসি বইগুলো যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন করে প্রকাশ করছি। দ্বিতীয়ত সৃজনশীল বইয়ের ক্ষেত্রে আমরা আমাদের আকাবিরদের কারনামাগুলো বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। উম্মাহর প্রয়োজনকে সামনে রেখে আমরা যুগোপযোগী বুদ্ধিভিত্তিক কাজ করে যেতে চাই, যে কাজগুলো আমাদেরকে শতাব্দীর পর শতাব্দী স্মরণ রাখবে। 

খবরের কাগজ: মানসম্মত বই প্রকাশে আপনাদের ভূমিকা কেমন?
মাওলানা আবদুল মান্নান: মানসম্মত বই প্রকাশের জন্য আমাদের রয়েছে বিজ্ঞ লেখক, অনুবাদক ও সম্পাদক চৌকস টিম। টিমটি মানসম্মত বই প্রকাশের জন্য এবং লেখার মান সমৃদ্ধ করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা সবে মাত্র এ সেক্টরে এসেছি। মাত্র বছর তিনেক হয়েছে। আমরা আমাদের লেখক, অনুবাদক এবং সম্পাদক প্যানেলকে আরও সমৃদ্ধ করতে চাই। আর বই বাহ্যিকভাবে সুন্দর করতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে আমরা কোনো আপস করি না। কারণ খিদমাহর একটি মূলনীতি হলো সৃজনশীলতা। কাজেই আমরা বইয়ের ভেতরগত দিক ও বাহ্যিক দিক উভয়টি সুন্দর করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

খবরের কাগজ: ইসলামি বইয়ের জাগরণের ক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
মাওলানা আবদুল মান্নান: এর জন্য গণমুখী দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। উম্মাহর প্রয়োজনকে সামনে রেখে বই প্রকাশ করতে হবে। এর পর সোশ্যাল মিডিয়া এবং গণমাধ্যমগুলোতে সেসব বইয়ের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করে সব ধরনের পাঠকদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।