
প্রশ্ন: শীতকালে রাতের শেষ প্রহরে প্রচণ্ড শীতের কারণে আমি কানটুপি ব্যবহার করি। সাধারণত এটি পরেই ফজরের নামাজ আদায় করি। কখনো এমন হয় যে, কানটুপি পরার কারণে কপাল ঢেকে যায় এবং ওই অবস্থাতেই সিজদা আদায় করা হয়। জানার বিষয় হলো, কানটুপি দিয়ে কপাল আবৃত অবস্থায় সিজদা করলে আমার সিজদা আদায় হবে কি?
সাজিদ মাহমুদ, কুমিল্লা
উত্তর: নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভের একটি। নামাজ ইমান ও কুফরির মাঝে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমাদের এবং কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো নামাজ। যে নামাজ ছেড়ে দিল সে কুফরি করল।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৪৬৩)।
অন্য হাদিসে জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কুফর ও ইমানের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২৬১৮)
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এবং তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত আদায় করো এবং রুকূকারীদের সঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪৩)
আল্লাহ বলেন, ‘এবং তোমরা আল্লাহর পথে সাধনা করো, যেমন সাধনা করা উচিত। তিনি তোমাদের মনোনীত করেছেন এবং দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কোনো সংকীর্ণতা আরোপ করেননি। তোমাদের পিতা ইবরাহিমের দ্বীন (আঁকড়ে ধরো)। তিনিই তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম, পূর্বেও এবং এ কিতাবেও, যাতে রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী হয় আর তোমরা (অন্যান্য) মানুষের জন্য সাক্ষী হও। সুতরাং তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত আদায় করো এবং আল্লাহকে মজবুতভাবে ধরো। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। তিনি কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী।’ (সুরা হজ, আয়াত: ৭৮)
আরও পড়ুন: আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ
নামাজের মধ্যে রুকু-সিজদা গুরুত্বপূর্ণ আমল। নামাজে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করা আবশ্যক। রাসুলুল্লাহ (সা.) একদিকে নামাজের বিধানগুলো ধীরস্থিরভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন, অন্যদিকে ধীরস্থিরতা অবলম্বন না করলে নামাজ শুদ্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যে পর্যন্ত না রুকু-সিজদায় তার পৃষ্ঠদেশ সোজা করবে, সে পর্যন্ত তার সালাত যথার্থ হবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস ৮৫৫)
সিজদার সময় কানটুপি দ্বারা কপাল ঢাকা থাকলেও সিজদা আদায় হয়ে যাবে। নামাজও শুদ্ধ হবে। তবে বিনা প্রয়োজনে কপাল ঢেকে সিজদা করা উচিত নয়। (আলবাহরুর রায়েক, ১/৩১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া, ১/১০৮)
লেখক: আলেম, মুফতি ও সাংবাদিক