ঢাকা ৫ চৈত্র ১৪৩১, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
English

গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনায় একটি বিপ্লব সাধিত হয়েছে

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৯ এএম
গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনায় একটি বিপ্লব সাধিত হয়েছে
সুলতানসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেদোয়ান ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রেদোয়ান ইসলাম সুলতানস প্রকাশনীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বরিশাল সদরে জন্ম। ঢাকা উত্তরার মাদরাসাতুল হিকমা থেকে হেফজ শেষ করেছেন। কম্পিউটার সায়েন্সের ওপর বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটি থেকে। তার প্রকাশক হওয়ার গল্প, ইসলামি বইয়ের চাহিদা ও পাঠক বৃদ্ধি, সুলতানস কোন ধরনের বই প্রকাশে আগ্রহী, মানসম্মত বই প্রকাশে তাদের ভূমিকা কেমন ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেছেন খবরের কাগজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রায়হান রাশেদ

খবরের কাগজ: আপনি প্রকাশক হলেন কেন?
রেদোয়ান ইসলাম: জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়াকে আমি জীবনের এক মহৎ উদ্দেশ্য হিসেবে দেখেছি। বিশেষ করে ইসলামি জ্ঞান এবং নৈতিকতার পাঠ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমার দায়িত্ব মনে করি। এই মহৎ উদ্দেশ্য ও দায়িত্বের জায়গা থেকে আমি প্রকাশক হয়েছি। এক্ষেত্রে আমার ছোট কাকু (চাচা) বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ লেখক মিরাজ রহমান এবং আমার পিতার অবদানের কাছে আমি ঋণী। 

খবরের কাগজ: ইসলামি বইয়ের পাঠক দিন দিন বাড়ছে বলে কী আপনি মনে করেন?
রেদোয়ান ইসলাম: হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে। বর্তমান সময়ে মানুষ ইসলাম সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে আগ্রহী হচ্ছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম কোরআন, হাদিস এবং ইসলামি জীবনব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে বেশ আগ্রহী এবং এটি অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন বেশি। গত পাঁচ-সাত বছরে ইসলামি বইয়ের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এক্ষেত্রে গত এক যুগে ইসলামি প্রকাশনা সেক্টরে একটি বিপ্লব হয়েছে বলে আমি মনে করি এবং সুলতানস সে বিপ্লবের অন্যতম অংশীদার, আলহামদুলিল্লাহ। আর এটি আমাদের জন্য একটি বড় প্রেরণা।

খবরের কাগজ: আপনার প্রকাশনী সম্পর্কে কিছু বলুন। কী ধরনের বই প্রকাশে আপনারা আগ্রহী? 
রেদোয়ান ইসলাম: আমাদের ‘সুলতানস’ প্রকাশনী মানসম্পন্ন বই প্রকাশে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা প্রতিটি বইয়ের বিষয়বস্তু, সম্পাদনা এবং মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ মান বজায় রাখি। বিশ্বস্ত লেখক ও গবেষকদের সঙ্গে কাজ করে তথ্যবহুল ও প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপিত বই প্রকাশ করি। বইয়ের নকশা ও বাঁধাইয়ের ক্ষেত্রেও আমরা উৎকৃষ্ট মান নিশ্চিত করি, যাতে পাঠকরা একটি সন্তোষজনক পাঠ অভিজ্ঞতা লাভ করেন। আমাদের প্রকাশিত বইগুলো যেমন- মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিষ্কার, দ্য গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর মুহাম্মাদ (সা.) এবং হিলিং দ্য এম্পটিনেস, পাঠকদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। এই বইগুলোর মান নিয়ে পাঠকরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। আমরা কোরআন হাদিসের আলোকে জীবনঘনিষ্ঠ বই প্রকাশ করি। সিরাত বিষয়ে আমাদের কয়েকটি বই বেস্ট সেলার হয়েছে। প্রতিটি বইয়ের কনটেন্ট আমরা যুগোপযোগী বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে করি। সর্বপরি আমরা সব সময় মানসম্মত কনটেন্ট এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের ওপর গুরুত্ব দিই। আমাদের প্রতিটি বই গবেষণালব্ধ তথ্য এবং প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপিত হয়, যাতে তা পাঠকের জন্য সহজপাঠ্য ও উপকারী হয়। 

খবরের কাগজ: এবারের মেলাতে নতুন কি বই প্রকাশ করেছে সুলতানস?
রেদোয়ান ইসলাম: ২০২৫ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত উসওয়াতুন হাসানা প্রোডাক্টিভ মুহাম্মাদ (সা.) বইটি মহানবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর জীবন থেকে প্রোডাক্টিভিটির শিক্ষা নিয়ে রচিত। লেখক মিরাজ রহমান এই গ্রন্থে নবিজির (সা.) কর্মপদ্ধতি, সময় ব্যবস্থাপনা এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর প্রোডাক্টিভ দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। বইটি পাঠকদেরকে নবিজির (সা.) জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে প্রোডাক্টিভ হতে সহায়তা করবে। যারা ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে সফল ও প্রোডাক্টিভ জীবন গড়তে চান, তাদের জন্য এটি একটি মূল্যবান বই।

জেলে যাওয়ার কারণে মান্নতের রোজা ছুটে গেলে করণীয় কি?

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
জেলে যাওয়ার কারণে মান্নতের রোজা ছুটে গেলে করণীয় কি?
জেলে আবদ্ধ হওয়ার ছবি । সংগৃহীত

প্রশ্ন: গত বছর আমার ছেলে একটি মিথ্যা মামলায় আটক হয় এবং সাত বছরের জেল দেওয়া হয় পরে আমি উচ্চ আদালতে আপিল করি আপিলের চূড়ান্ত রায়ের দিন ছিল ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর আমি তখন মান্নত করি যে, যদি ওই দিন আমার ছেলের মুক্তির রায় হয়, তা হলে আমি ২৩ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটানা এক মাস রোজা রাখব

আলহামদুলিল্লাহ, ২২ নভেম্বর আমার ছেলের মুক্তির রায় হয় এবং আমি ২৩ নভেম্বর থেকে রোজা রাখা শুরু করি কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে মাঝে তিন দিন রোজা রাখতে পারিনি এখন জানতে চাই, আমাকে কি পুনরায় পুরো এক মাস রোজা রাখতে হবে, নাকি শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করলেই চলবে?

 

উত্তর: কেউ যদি আল্লাহর নামে রোজা রাখার মান্নত করে, তা হলে সে রোজা রাখা ওয়াজিব হয়ে যায় তবে কোনো শর্তের ভিত্তিতে মান্নত মানলে সেই শর্ত পূরণ হওয়ার আগে ওয়াজিব হয় না, শর্ত পূরণ হলেই ওয়াজিব হয়

প্রশ্নোক্ত পরিস্থিতিতে আপনাকে শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করতে হবে পুনরায় পুরো এক মাস রোজা রাখার প্রয়োজন নেই কারণ, মান্নতের রোজা রাখার সময় যদি কোনো কারণে কিছু রোজা ছুটে যায়, তা হলে শুধু ছুটে যাওয়া রোজাগুলো কাজা করাই যথেষ্ট

অতএব, আপনি শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করবেন এতেই আপনার মান্নত পূর্ণ হয়ে যাবে (বাদায়েউস সানায়ে /২৬৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া /২৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া / ২১০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর /৩৪০)

 

লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) যেভাবে রমজান কাটাতেন—১৮ যেসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৯:০০ এএম
যেসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন
কোরআন তেলওয়াতের ছবি । সংগৃহীত

রমজান মাস শিক্ষার মাস। দীক্ষা গ্রহণের মাস। এ মাসকে বলা হয় প্রশিক্ষণের মাস। এক মাস থেকে যে শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা হয়, বাকি ১১ মাসে সে অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হয়। ইবাদতের মৌসুম রমজানকে গনিমত হিসেবে গ্রহণ করে শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণে মনোযোগী হওয়া আবশ্যক। আর এক্ষেত্রে নিজ পরিবার-পরিজনকে ভুলে গেলে চলবে না। তাদেরকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি আপনার নিকটবর্তী পরিবার-পরিজনকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা, ২১৪)।


রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে নানাভাবে তার পরিবারের সদস্যসহ স্ত্রীদের শিক্ষা দান করতেন। জ্ঞান বিতরণের মজলিস বসত তার তত্ত্বাবধানে। হাদিসের পাঠক মাত্রই জানেন, রমজানবিষয়ক অধিকাংশ হাদিস তার স্ত্রীদের থেকে বর্ণিত। স্ত্রীদের শিক্ষার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বারোপের উত্তম প্রমাণ এসব হাদিস। 


আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার কি মত, আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জ্ঞাত হই বা বুঝতে পারি যে আজকে লাইলাতুল কদর; তা হলে আমি কী দোয়া পাঠ করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘তুমি দোয়া করবে, বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি। বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল সম্মানিত, আপনি ক্ষমা পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।’ (তিরমিজি, ৩৪৩৫)।


নারীদের ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে পুরুষকে, বিশেষ করে স্বামীকে অবশ্যই যত্নবান হতে হবে এবং তার জন্য রমজানই সুন্দর ও উপযুক্ত সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ব্যক্তির জন্য পাপ হিসেবে এ-ই যথেষ্ট যে, যার ভরণ-পোষণ তার দায়িত্ব তাকে সে বিনষ্ট করে দেয়।’ (মুসনাদে আহমদ, ৬৪৯৫)। সুতরাং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের নারীসমাজকে ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে রমজান মাসকে আমরা সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।


এ ছাড়া রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরের নারীদের বিভিন্নভাবে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন রাখার ব্যবস্থা করতেন। আলী (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তার পরিবারকে রমজানের শেষ দশ দিনে রাতে জাগিয়ে দিতেন। (তিরমিজি, ৭৯৫)। 
আবু জর (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, মাসের তিন দিন অবশিষ্ট অবধি তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন না। তৃতীয় দিনে তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন, তার পরিবার ও স্ত্রীদের আহ্বান করলেন, এতটা দীর্ঘসময় তিনি জাগরণ করলেন যে, আমরা সাহরি পরিত্যাগের আশঙ্কা করলাম। (তিরমিজি, ৮০৬)।


অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে, চার দিন অবশিষ্ট থাকা পর্যন্তও তিনি আমাদের নিয়ে রাত্রি যাপন করলেন না। অতঃপর যখন অবশিষ্ট ছিল মাত্র তিন দিন, তখন তিনি তার কন্যা ও স্ত্রীদের নিকট সংবাদ পাঠালেন এবং লোকেরা জমায়েত হলো। তিনি আমাদের নিয়ে এতটা সময় জাগরণ করলেন যে, সাহরি ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলো। (নাসায়ি, ১৩৬৪)।


জয়নব বিনতে উম্মে সালামা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন মাসের মাত্র দশ দিন অবশিষ্ট থাকত, তখন পরিবারের সক্ষম সবাইকে রাসুল রাত্রি জাগরণ করাতেন। (মারওয়াজি, কিয়ামু রমাজান, পৃষ্ঠা ৩১)।

লেখক : আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ পিএম
১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি
১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচির ছবি

আজ ১৯ মার্চ, ১৮ তম রোজা। বুধবার । এ দিনের সাহরির শেষ সময় ভোর ৪ টা ৪৭ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬ টা ১০ মিনিট।


১৯ মার্চ, বুধবার, ২০২৫
সাহরির শেষ সময় : ৪.৪৭ মিনিট
ইফতারের সময় : ৬.১০ মিনিট

 

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ইফতারের সময় এবং প্রতি রাতে লোকদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৩)

সূত্র : ইসলামিক ফাউন্ডেশন

 

রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যাবে কি ?

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যাবে কি ?
রক্ত সংগ্রহের ছবি। সংগৃহীত

রমজান মাসে রোজা রাখা প্রতিটি সক্ষম মুসলিমের জন্য ফরজ। এই পবিত্র মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আমরা ইবাদত ও আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করি। তবে রোজা রাখা অবস্থায় অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, রক্তদান করা যাবে কি না? ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রোজা রেখে রক্তদান করা সম্পূর্ণ জায়েজ এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।


রোজা ভঙ্গের মূল কারণ হলো পাকস্থলী বা মস্তিষ্কে সরাসরি কোনো খাদ্য বা পানীয় প্রবেশ করা। রক্তদানের ক্ষেত্রে এমন কোনো কিছু ঘটে না। রক্তদানের সময় কোনো বস্তু শরীরে প্রবেশ করে না বা কোনো খাদ্যও গ্রহণ করা হয় না। তাই রোজা রেখে রক্তদান করলে রোজা নষ্ট হবে না।
নবি করিম (সা.) রোজা রেখে শিঙ্গা লাগিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে। শিঙ্গার মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়। এ বিষয় থেকে বোঝা যায়, রক্ত বের করলে বা রক্তদান করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। ইসলামি ফিকহবিদগণও একমত যে, রোজা রেখে রক্তদান করা জায়েজ এবং এতে রোজা ভাঙার কোনো আশঙ্কা নেই।

 

এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা। যদিও রোজা রেখে রক্তদান করা জায়েজ, তবে অতিরিক্ত রক্তদান করা মাকরুহ (অপছন্দনীয়); যদি তা শরীরে দুর্বলতা সৃষ্টি করে। রোজা রাখা অবস্থায় শরীরের শক্তি বজায় রাখা জরুরি। তাই রক্তদানের পর যথেষ্ট বিশ্রাম ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
রমজান মাসে ইবাদতের পাশাপাশি মানবসেবার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার বড় সুযোগ। কেননা তার দ্বারা মানুষের জীবন রক্ষা পায়। আর রক্তদান একটি মহৎ কাজ, যা প্রয়োজনে রোজা রেখেও করা যেতে পারে। এতে রোজার কোনো সমস্যা হবে না।

 

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

 

কাফফারার রোজা কি ধারাবাহিকভাবেই রাখতে হবে?

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৪ পিএম
কাফফারার রোজা কি ধারাবাহিকভাবেই রাখতে হবে?
আলোক উজ্জল চাঁদের প্রতিচ্ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন : আমি গত রমজানে কোনো কারণ ছাড়া  রোজা ভেঙে ফেলেছিলাম এবং শাওয়ালের আঠারো তারিখ থেকে কাফফারার  রোজা রাখা শুরু করি। কোরবানির ঈদ যখন কাছাকাছি আসছিল, তখন কিছু রোজা বাকি ছিল। আমি জানতাম যে কাফফারার রোজাগুলো লাগাতার রাখতে হয়, যদি মাঝে বিরতি দেওয়া হয় তবে নতুন করে শুরু করতে হয়। এ জন্য আমি জিলহজের ১০, ১১, ১২, ১৩ তারিখেও রোজা রাখি এবং মোট ষাটটি রোজা পূর্ণ করি। এখন জানার বিষয় হলো, আমার কাফফারার  রোজাগুলো সঠিকভাবে আদায় হয়েছে কি না?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কাফফারার  রোজাগুলো সঠিকভাবে আদায় হয়নি। কারণ, জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখ (ঈদের দিন ও আইয়ামে তাশরিক) রোজা রাখা নাজায়েজ। এই দিনগুলোতে কোনো ধরনের রোজা রাখা জায়েজ নয়, তা কাফফারার রোজা হোক বা অন্য কোনো রোজা। আপনি এই দিনগুলোতে রোজা রেখে থাকলে তা নাজায়েজ হয়েছে এবং এর দ্বারা কাফফারার ধারাবাহিকতা বাতিল হয়ে গেছে।


কাফফারার রোজার জন্য শর্ত হলো, ষাটটি রোজা অবিচ্ছিন্নভাবে রাখা। যদি মাঝখানে কোনো দিন রোজা ছেড়ে দেওয়া হয় বা নাজায়েজ দিনে রোজা রাখা হয়, তা হলে কাফফারার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আবার নতুন করে ষাটটি রোজা রাখতে হবে।
আপনি জিলহজের ১০ থেকে ১৩ তারিখ রোজা রেখে থাকায় এই রোজাগুলো নাজায়েজ হয়েছে এবং কাফফারার রোজার হিসাবে গণ্য হবে না। তাই আপনার কাফফারা আদায় হয়নি। এখন আপনাকে আবার নতুন করে ষাটটি রোজা লাগাতারভাবে রাখতে হবে।


অতএব, আপনার জন্য এখন নতুন করে ষাটটি রোজা লাগাতারভাবে রাখা জরুরি। আশা করি, উত্তরটি স্পষ্ট হয়েছে এবং আপনি সঠিকভাবে কাফফারা আদায় করতে সক্ষম হবেন। (আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আলবাহরুর রায়েক ৪/১০০)

লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ