ঢাকা ৫ চৈত্র ১৪৩১, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
English

শবেবরাতেও ক্ষমা নেই যাদের

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩০ পিএম
শবেবরাতেও ক্ষমা নেই যাদের
আরবিতে শবেবরাত লেখা ছবি। সংগৃহীত

শবেবরাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। এ রাতের ইবাদত বেশ ফজিলতপূর্ণ। হাদিসের ভাষ্যমতে, এ রাতে সবাইকে ক্ষমা করা হয়। তবে এমন কিছু দুর্ভাগাও রয়েছে, যারা এ রাতেও ক্ষমা পায় না। তবে যদি সে তওবা করে এবং আল্লাহতায়ালার কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চায়, তা হলে তিনি তাকেও ক্ষমা করবেন। শবেবরাতেও যারা ক্ষমা পায় না, তারা হলো—

মুশরিক: শিরকের মতো জঘন্য পাপে লিপ্ত ব্যক্তিরা শবেবরাতেও ক্ষমা পান না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সঙ্গে শিরক করে। এর চেয়ে নিম্নস্তরের পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৪৮) 

মুশাহিন: মুশাহিন অর্থ বিদ্বেষ পোষণকারী। দ্বীনি কারণ ছাড়া যে অন্যের প্রতি অন্তরে বিদ্বেষ পোষণ করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে এ রাতে ক্ষমা করবেন না। ইমাম আওজায়ি (রহ.) বলেন, মুশাহিন হচ্ছে এমন ব্যক্তি, যে সাহাবিদের প্রতি অন্তরে বিদ্বেষ লালন করে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘বিদ্বেষ পোষণকারী দুই ব্যক্তি পারস্পরিক সন্ধি করার আগ পর্যন্ত তাদের ক্ষমা করা হবে না।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৫৬৫)

হত্যাকারী: কাউকে হত্যা করা কুফরের সমপর্যায়ের অপরাধ। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া জঘন্য পাপ আর কোনো মুসলমানকে হত্যা করা কুফরি।’ (বুখারি, হাদিস: ৭০৭৬) 
এ ছাড়াও হত্যা সেই সাতটি জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, হাদিসে যেগুলোকে ‘সাতটি ধ্বংসকারী জিনিস’ বলা হয়েছে। (বুখারি, হাদিস: ২৭৬৬)

সম্পর্ক ছিন্নকারী: আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা কবিরা গুনাহ। যারা এমন কাজ করে, তাদের ওপর আল্লাহতায়ালা অভিসম্পাত করেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর ক্ষমতা লাভ করলে সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। এদের প্রতিই আল্লাহতায়ালা অভিসম্পাত করেন।’ (সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২২-২৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৯৮৪)

টাখনুর নিচে কাপড় পরিধানকারী: পুরুষের জন্য টাখনুর নিচে কাপড় পরা নাজায়েজ। এটি অহংকারের প্রতীক। ইসলামে অহংকার নিষেধ। অহংকারবশত যে পুরুষ টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে রাখবে, হাদিসে তার ব্যাপারে কঠোর শাস্তির কথা এসেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহংকারের কারণে কাপড় ঝুলিয়ে চলবে, আল্লাহতায়ালা কিয়ামত দিবসে তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না।’ (বুখারি, হাদিস: ৩৬৬৫)
এমনভাবে পিতামাতার অবাধ্য সন্তান, জিনা-ব্যভিচারে লিপ্ত এবং নেশায় আসক্ত ব্যক্তিও শবেবরাতে ক্ষমালাভের সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়। তবে উল্লিখিত পাপে নিমজ্জিত কোনো ব্যক্তি যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা ও তওবা করে, ভবিষ্যতে এমন গর্হিত কোনো কাজ করবে না বলে আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়, তা হলে আল্লাহতায়ালা তাদের ক্ষমা করবেন। তওবার মাধ্যমে যাবতীয় গুনাহ থেকে ক্ষমালাভ করা যায়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তবে কেউ তওবা করলে, ইমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এমন লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দিয়ে পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৭০) 

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ

 

জেলে যাওয়ার কারণে মান্নতের রোজা ছুটে গেলে করণীয় কি?

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
জেলে যাওয়ার কারণে মান্নতের রোজা ছুটে গেলে করণীয় কি?
জেলে আবদ্ধ হওয়ার ছবি । সংগৃহীত

প্রশ্ন: গত বছর আমার ছেলে একটি মিথ্যা মামলায় আটক হয় এবং সাত বছরের জেল দেওয়া হয় পরে আমি উচ্চ আদালতে আপিল করি আপিলের চূড়ান্ত রায়ের দিন ছিল ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর আমি তখন মান্নত করি যে, যদি ওই দিন আমার ছেলের মুক্তির রায় হয়, তা হলে আমি ২৩ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটানা এক মাস রোজা রাখব

আলহামদুলিল্লাহ, ২২ নভেম্বর আমার ছেলের মুক্তির রায় হয় এবং আমি ২৩ নভেম্বর থেকে রোজা রাখা শুরু করি কিন্তু বিশেষ কিছু কারণে মাঝে তিন দিন রোজা রাখতে পারিনি এখন জানতে চাই, আমাকে কি পুনরায় পুরো এক মাস রোজা রাখতে হবে, নাকি শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করলেই চলবে?

 

উত্তর: কেউ যদি আল্লাহর নামে রোজা রাখার মান্নত করে, তা হলে সে রোজা রাখা ওয়াজিব হয়ে যায় তবে কোনো শর্তের ভিত্তিতে মান্নত মানলে সেই শর্ত পূরণ হওয়ার আগে ওয়াজিব হয় না, শর্ত পূরণ হলেই ওয়াজিব হয়

প্রশ্নোক্ত পরিস্থিতিতে আপনাকে শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করতে হবে পুনরায় পুরো এক মাস রোজা রাখার প্রয়োজন নেই কারণ, মান্নতের রোজা রাখার সময় যদি কোনো কারণে কিছু রোজা ছুটে যায়, তা হলে শুধু ছুটে যাওয়া রোজাগুলো কাজা করাই যথেষ্ট

অতএব, আপনি শুধু ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোজা কাজা করবেন এতেই আপনার মান্নত পূর্ণ হয়ে যাবে (বাদায়েউস সানায়ে /২৬৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া /২৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া / ২১০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর /৩৪০)

 

লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) যেভাবে রমজান কাটাতেন—১৮ যেসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৯:০০ এএম
যেসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন
কোরআন তেলওয়াতের ছবি । সংগৃহীত

রমজান মাস শিক্ষার মাস। দীক্ষা গ্রহণের মাস। এ মাসকে বলা হয় প্রশিক্ষণের মাস। এক মাস থেকে যে শিক্ষা-দীক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা হয়, বাকি ১১ মাসে সে অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হয়। ইবাদতের মৌসুম রমজানকে গনিমত হিসেবে গ্রহণ করে শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণে মনোযোগী হওয়া আবশ্যক। আর এক্ষেত্রে নিজ পরিবার-পরিজনকে ভুলে গেলে চলবে না। তাদেরকে সর্বাগ্রে বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে এ ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি আপনার নিকটবর্তী পরিবার-পরিজনকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা, ২১৪)।


রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে নানাভাবে তার পরিবারের সদস্যসহ স্ত্রীদের শিক্ষা দান করতেন। জ্ঞান বিতরণের মজলিস বসত তার তত্ত্বাবধানে। হাদিসের পাঠক মাত্রই জানেন, রমজানবিষয়ক অধিকাংশ হাদিস তার স্ত্রীদের থেকে বর্ণিত। স্ত্রীদের শিক্ষার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বারোপের উত্তম প্রমাণ এসব হাদিস। 


আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার কি মত, আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জ্ঞাত হই বা বুঝতে পারি যে আজকে লাইলাতুল কদর; তা হলে আমি কী দোয়া পাঠ করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘তুমি দোয়া করবে, বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি। বাংলা অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল সম্মানিত, আপনি ক্ষমা পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।’ (তিরমিজি, ৩৪৩৫)।


নারীদের ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে পুরুষকে, বিশেষ করে স্বামীকে অবশ্যই যত্নবান হতে হবে এবং তার জন্য রমজানই সুন্দর ও উপযুক্ত সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ব্যক্তির জন্য পাপ হিসেবে এ-ই যথেষ্ট যে, যার ভরণ-পোষণ তার দায়িত্ব তাকে সে বিনষ্ট করে দেয়।’ (মুসনাদে আহমদ, ৬৪৯৫)। সুতরাং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আমাদের নারীসমাজকে ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে তোলার ক্ষেত্রে রমজান মাসকে আমরা সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করতে পারি।


এ ছাড়া রমজানে রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘরের নারীদের বিভিন্নভাবে ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন রাখার ব্যবস্থা করতেন। আলী (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তার পরিবারকে রমজানের শেষ দশ দিনে রাতে জাগিয়ে দিতেন। (তিরমিজি, ৭৯৫)। 
আবু জর (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, মাসের তিন দিন অবশিষ্ট অবধি তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন না। তৃতীয় দিনে তিনি আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন, তার পরিবার ও স্ত্রীদের আহ্বান করলেন, এতটা দীর্ঘসময় তিনি জাগরণ করলেন যে, আমরা সাহরি পরিত্যাগের আশঙ্কা করলাম। (তিরমিজি, ৮০৬)।


অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে, চার দিন অবশিষ্ট থাকা পর্যন্তও তিনি আমাদের নিয়ে রাত্রি যাপন করলেন না। অতঃপর যখন অবশিষ্ট ছিল মাত্র তিন দিন, তখন তিনি তার কন্যা ও স্ত্রীদের নিকট সংবাদ পাঠালেন এবং লোকেরা জমায়েত হলো। তিনি আমাদের নিয়ে এতটা সময় জাগরণ করলেন যে, সাহরি ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলো। (নাসায়ি, ১৩৬৪)।


জয়নব বিনতে উম্মে সালামা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন মাসের মাত্র দশ দিন অবশিষ্ট থাকত, তখন পরিবারের সক্ষম সবাইকে রাসুল রাত্রি জাগরণ করাতেন। (মারওয়াজি, কিয়ামু রমাজান, পৃষ্ঠা ৩১)।

লেখক : আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

 

১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৫ পিএম
১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচি
১৯ মার্চ, ২০২৫ বুধবারের সাহরি ও ইফতারের সময়সূচির ছবি

আজ ১৯ মার্চ, ১৮ তম রোজা। বুধবার । এ দিনের সাহরির শেষ সময় ভোর ৪ টা ৪৭ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬ টা ১০ মিনিট।


১৯ মার্চ, বুধবার, ২০২৫
সাহরির শেষ সময় : ৪.৪৭ মিনিট
ইফতারের সময় : ৬.১০ মিনিট

 

জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ইফতারের সময় এবং প্রতি রাতে লোকদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৩)

সূত্র : ইসলামিক ফাউন্ডেশন

 

রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যাবে কি ?

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যাবে কি ?
রক্ত সংগ্রহের ছবি। সংগৃহীত

রমজান মাসে রোজা রাখা প্রতিটি সক্ষম মুসলিমের জন্য ফরজ। এই পবিত্র মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আমরা ইবাদত ও আত্মশুদ্ধির চেষ্টা করি। তবে রোজা রাখা অবস্থায় অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, রক্তদান করা যাবে কি না? ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে রোজা রেখে রক্তদান করা সম্পূর্ণ জায়েজ এবং এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না।


রোজা ভঙ্গের মূল কারণ হলো পাকস্থলী বা মস্তিষ্কে সরাসরি কোনো খাদ্য বা পানীয় প্রবেশ করা। রক্তদানের ক্ষেত্রে এমন কোনো কিছু ঘটে না। রক্তদানের সময় কোনো বস্তু শরীরে প্রবেশ করে না বা কোনো খাদ্যও গ্রহণ করা হয় না। তাই রোজা রেখে রক্তদান করলে রোজা নষ্ট হবে না।
নবি করিম (সা.) রোজা রেখে শিঙ্গা লাগিয়েছেন, যা হাদিসে বর্ণিত আছে। শিঙ্গার মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত বের করা হয়। এ বিষয় থেকে বোঝা যায়, রক্ত বের করলে বা রক্তদান করলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। ইসলামি ফিকহবিদগণও একমত যে, রোজা রেখে রক্তদান করা জায়েজ এবং এতে রোজা ভাঙার কোনো আশঙ্কা নেই।

 

এক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা। যদিও রোজা রেখে রক্তদান করা জায়েজ, তবে অতিরিক্ত রক্তদান করা মাকরুহ (অপছন্দনীয়); যদি তা শরীরে দুর্বলতা সৃষ্টি করে। রোজা রাখা অবস্থায় শরীরের শক্তি বজায় রাখা জরুরি। তাই রক্তদানের পর যথেষ্ট বিশ্রাম ও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
রমজান মাসে ইবাদতের পাশাপাশি মানবসেবার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করার বড় সুযোগ। কেননা তার দ্বারা মানুষের জীবন রক্ষা পায়। আর রক্তদান একটি মহৎ কাজ, যা প্রয়োজনে রোজা রেখেও করা যেতে পারে। এতে রোজার কোনো সমস্যা হবে না।

 

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

 

কাফফারার রোজা কি ধারাবাহিকভাবেই রাখতে হবে?

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৪ পিএম
কাফফারার রোজা কি ধারাবাহিকভাবেই রাখতে হবে?
আলোক উজ্জল চাঁদের প্রতিচ্ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন : আমি গত রমজানে কোনো কারণ ছাড়া  রোজা ভেঙে ফেলেছিলাম এবং শাওয়ালের আঠারো তারিখ থেকে কাফফারার  রোজা রাখা শুরু করি। কোরবানির ঈদ যখন কাছাকাছি আসছিল, তখন কিছু রোজা বাকি ছিল। আমি জানতাম যে কাফফারার রোজাগুলো লাগাতার রাখতে হয়, যদি মাঝে বিরতি দেওয়া হয় তবে নতুন করে শুরু করতে হয়। এ জন্য আমি জিলহজের ১০, ১১, ১২, ১৩ তারিখেও রোজা রাখি এবং মোট ষাটটি রোজা পূর্ণ করি। এখন জানার বিষয় হলো, আমার কাফফারার  রোজাগুলো সঠিকভাবে আদায় হয়েছে কি না?

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কাফফারার  রোজাগুলো সঠিকভাবে আদায় হয়নি। কারণ, জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখ (ঈদের দিন ও আইয়ামে তাশরিক) রোজা রাখা নাজায়েজ। এই দিনগুলোতে কোনো ধরনের রোজা রাখা জায়েজ নয়, তা কাফফারার রোজা হোক বা অন্য কোনো রোজা। আপনি এই দিনগুলোতে রোজা রেখে থাকলে তা নাজায়েজ হয়েছে এবং এর দ্বারা কাফফারার ধারাবাহিকতা বাতিল হয়ে গেছে।


কাফফারার রোজার জন্য শর্ত হলো, ষাটটি রোজা অবিচ্ছিন্নভাবে রাখা। যদি মাঝখানে কোনো দিন রোজা ছেড়ে দেওয়া হয় বা নাজায়েজ দিনে রোজা রাখা হয়, তা হলে কাফফারার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে আবার নতুন করে ষাটটি রোজা রাখতে হবে।
আপনি জিলহজের ১০ থেকে ১৩ তারিখ রোজা রেখে থাকায় এই রোজাগুলো নাজায়েজ হয়েছে এবং কাফফারার রোজার হিসাবে গণ্য হবে না। তাই আপনার কাফফারা আদায় হয়নি। এখন আপনাকে আবার নতুন করে ষাটটি রোজা লাগাতারভাবে রাখতে হবে।


অতএব, আপনার জন্য এখন নতুন করে ষাটটি রোজা লাগাতারভাবে রাখা জরুরি। আশা করি, উত্তরটি স্পষ্ট হয়েছে এবং আপনি সঠিকভাবে কাফফারা আদায় করতে সক্ষম হবেন। (আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১২; আলবাহরুর রায়েক ৪/১০০)

লেখক : সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ