
রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলিমদের জন্য ফরজ। তবে অনেকেই রোজা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান থাকেন। রমজানের দিনে স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ইসলামের নির্দেশনা খুবই স্পষ্ট। রোজা রেখে স্ত্রীর সঙ্গে চুম্বন, আলিঙ্গন বা স্পর্শ করা জায়েজ, তবে শর্ত হলো এতে যেন সহবাস বা বীর্যপাতের আশঙ্কা না থাকে। নবিজি (সা.) নিজেও রোজা রেখে স্ত্রীদের চুম্বন করতেন এবং তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতেন।
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, নবিজি (সা.) রোজা অবস্থায় তাকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করতেন। তিনি বলেন, নবিজি (সা.) ছিলেন যৌনাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি। (বুখারি, ১৯২৭; মুসলিম, ১১০৬)
তবে, যারা নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না, তাদের জন্য রোজার সময় এ ধরনের ঘনিষ্ঠতা এড়ানোই উত্তম। শাইখ উসাইমীন (রহ.) বলেছেন, যারা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তাদের জন্য স্ত্রীকে চুম্বন করা বা আলিঙ্গন করা জায়েজ। কিন্তু যাদের বীর্যপাতের আশঙ্কা বেশি, তাদের এড়িয়ে চলা উচিত। (মাজমুউল ফাতাওয়া, ১৯/২৫৬)
রোজা অবস্থায় সহবাসের ক্ষেত্রে ইসলাম কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রোজা অবস্থায় সহবাস করলে রোজা ভেঙে যায় এবং এর জন্য কাফফারা দিতে হয়। কাফফারা হলো একজন দাস মুক্ত করা, অথবা লাগাতার দুই মাস রোজা রাখা, অথবা ৬০ জন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো। (বুখারি, ১৯৩৬)
সহবাস বলতে পুরুষাঙ্গ ও স্ত্রী-অঙ্গের মিলন বোঝায়। এতে বীর্যপাত হওয়া শর্ত নয়। শুধু সংস্পর্শেই রোজা ভেঙে যাবে। তাই রোজার সময় সহবাস থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা আবশ্যক। রোজার সময় স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা জায়েজ, তবে তা যেন সহবাস বা বীর্যপাতের দিকে না যায়। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারলে চুম্বন বা আলিঙ্গন করা যায়, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ না থাকলে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
লেখক : আলেম ও সাংবাদিক