
লাইলাতুল কদর বা শবে কদর রমজান মাসের শেষ দশ দিনে নিহিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ করো। (বুখারি, ২০২৭) আর এটি রমজানের বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত খোঁজ করো। (মুসলিম : ১১৬৫)
এ রাত রমজানের শেষ সাত দিনে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর (কদরের রাত) অন্বেষণ করতে চায়, সে যেন রমজানের শেষ সাত রাতের মধ্য তা অন্বেষণ করে। (তিরমিজি, ৭৯২) রমজানের ২৭ শে রজনী লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি যতদূর জানি রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে যে রজনীকে কদরের রাত হিসেবে কিয়ামুল্লাইল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তা হলো রমজানের ২৭তম রাত। মাসে ২৬তম রোজার পরবর্তী রাত। (মুসলিম, ৭৬২)
আব্দুল্লাহ বিন উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছুক, সে যেন তা রমজানের ২৭ শে রজনীতে অনুসন্ধান করে। (আহমাদ)
কদরের রাত হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাবনার দিক থেকে পরবর্তী দ্বিতীয় সম্ভাবনা ২৫ তারিখ, তৃতীয় ২৯, চতুর্থ ২১ এবং পঞ্চম হলো ২৩ তারিখের রজনী। (মুসনাদে আহমদ, ২২৭৬৫)
সর্বশেষ আরেকটি মত হলো, মহিমান্বিত এ রজনীটি স্থানান্তরশীল। অর্থাৎ প্রতিবছর একই তারিখে বা একই রজনীতে তা হয় না এবং শুধু ২৭ তারিখেই এ রাতটি আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহতায়ালার হেকমত ও তাঁর ইচ্ছা কোনো বছর তা ২৫ তারিখে, কোনো বছর ২৩ তারিখে, কোনো বছর ২১ তারিখে, আবার কোনো বছর ২৯ তারিখেও হয়ে থাকে।
এ ছাড়া এ রাতটি চেনার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত রয়েছে, সেগুলো হলো— ১. রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না এবং নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না। ২. মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে এবং সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে। ৩. কোনো ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন। ৪. ওই রাতে বৃষ্টি হতে পারে। ৫. সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে, যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো। (ইবনে খুযাইমা, ২১৯১; ইবনে হিব্বান, ৩৬৮৯; মুসনাদে আহমাদ, ২১১৯৩)
লেখক : আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক