-1744272434.jpg)
রাসুলুল্লাহ (সা.) জীবনে বিভিন্ন রঙের পোশাক পরিধান করেছেন, তবে তিনি সাদা কাপড় পরার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন এবং তার অনুসরণের ব্যাপারে বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি কখনোই নির্দিষ্টভাবে অন্য কোনো রঙের পোশাক পরার নির্দেশ দেননি, সাদা কাপড় পরিধানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়টি হাদিসে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এসেছে।
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সাদা পোশাক পরো, কারণ তা শ্রেষ্ঠ পোশাক। মৃতদেরও এ রঙের কাপড়ে কাফন পরাও।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস: ৮০৬১)
এ ছাড়াও, অপর এক হাদিসে হজরত সামুরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সাদা পোশাক পরো। কারণ, তা অধিক পবিত্র ও অধিক পরিচ্ছন্ন। (সুনানুত তিরমিজি, হাদিস : ২৮১০)
এই হাদিসগুলোতে সাদা কাপড়ের পবিত্রতা এবং পরিচ্ছন্নতার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাদা কাপড়কে অধিক পবিত্র বলা হয়েছে, কারণ এটি সহজেই নাপাকির চিহ্নগুলো দৃশ্যমান করে তোলে এবং তৎক্ষণাৎ তা পরিষ্কার করা যায়। সাদা কাপড়ের পরিচ্ছন্নতা অটুট থাকে এবং এটি একজনের মনকে প্রশান্তি দেয়, শুদ্ধতা ও তাজগী অনুভব করায়।
সাদা কাপড়ের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি মুসলিম সমাজের ঐক্যবদ্ধতার প্রতীক। এর মাধ্যমে বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী ও সমাজের মুসলিমরা একত্রিত হতে পারে। কারণ সাদা একটি সাধারণ, পরিচিত এবং গ্রহণযোগ্য রঙ। সাদা পোশাক পরিধানে মুসলিম সমাজের মধ্যে একটি অভিন্নতা তৈরি হয়, যা সবার মধ্যে পরস্পরের সম্পর্কের দৃঢ়তা এবং ঐক্যের অনুভূতি জন্ম দেয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদা কাপড় পরিধানের মাধ্যমে আমাদের শিখিয়েছেন যে, এই পোশাক পরলে শুধু পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হয় না, বরং এর মাধ্যমে একটি শুদ্ধ, শান্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিশেষত ঈদ বা জুমার মতো বড় সমাবেশে সাদা পোশাক পরা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য ও মিলনের অনুভূতি সৃষ্টি করে, যা আরও বেশি প্রশান্তি ও আনন্দের সৃষ্টি করে।
তা হলে, আমরা যদি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সুন্নত অনুসরণ করে সাদা কাপড় পরিধান করি, তা শুধু আমাদের পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা বাড়ায় না, বরং এতে এক বিরাট পুণ্যেরও অধিকারী হতে পারি।
লেখক : আলেম ও সাংবাদিক