
শয়তান ও মানুষের মধ্যে এক অবিরাম যুদ্ধ চলতে থাকে। শয়তান মানুষকে বিপথে চালিত করতে সর্বদা চেষ্টা করে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের এই যুদ্ধে শয়তানের শক্তি সঞ্চয়ের উৎসগুলো সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আমাদের উচিত শয়তানের শক্তি সঞ্চয়ের উপায়গুলো জানার পাশাপাশি, তাকে তার লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য না করা। এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো খাবারের সময় পড়ে যাওয়া খাদ্যাংশ পরিষ্কার করে তা খেয়ে নেওয়া।
আজকাল অনেকেই এ সুন্নাহকে কিছুটা অদ্ভুত মনে করেন, কিন্তু এটি বাস্তব সত্য। কেননা, যদি আমরা পড়ে যাওয়া খাবার পরিষ্কার করে না খাই, তাহলে শয়তান সে খাবার খেয়ে শক্তি সঞ্চয় করবে। জাবের (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘শয়তান তোমাদের প্রতিটি কাজে উপস্থিত হয়। এমনকি যখন তোমরা খাবার খেতে বসো, তখনো সে সেখানে উপস্থিত থাকে। তাই যদি খাবারের লোকমা পড়ে যায়, সে যেন ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয়, শয়তান যেন তা খেয়ে শক্তি না অর্জন করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২০৩৩)
এ ছাড়া আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন খাবার খেতেন, তখন তাঁর তিনটি আঙুল চেটে খেতেন। তিনি বলতেন, তোমাদের কারও যদি খাবারের কোনো অংশ পড়ে যায়, সে যেন ময়লা দূর করে তা খেয়ে নেয়, শয়তানের জন্য রেখে না দেয়।’ (সুনানু আবি দাউদ, হাদিস: ৩৮৪৫) এই হাদিসগুলো থেকে আমরা দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারি- ১. শয়তানকে খাবার খাওয়ার সুযোগ না দেওয়া। ২. পড়ে যাওয়া খাবারে বরকত থাকতে পারে।
আমরা শয়তানকে দেখতে পাই না, কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুসারে আমরা বিশ্বাস করি যে, শয়তান আমাদের প্রতিটি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, এমনকি খাবার খাওয়ার সময়ও। একইভাবে, আমরা খাবারের বরকতও দেখতে পাই না, তবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুসারে আমরা বিশ্বাস করি যে, পড়ে যাওয়া খাদ্যেও বরকত আছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ পালন আমাদের ঈমানের একটি প্রমাণস্বরূপ। আমরা শয়তানকে তার সুযোগ থেকে বিরত রাখতে এবং বরকতের আশায় পড়ে যাওয়া খাদ্য খেয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
লেখক : আলেম ও সাংবাদিক